চট্টগ্রামে ইপিজেডের কারখানাগুলোতে কাজে যোগ দিয়েছেন এক লাখ শ্রমিক
ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসার আশঙ্কা- চট্টগ্রাম ব্যুরো
- ০৬ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০
বিজিএমইএর সদস্যভুক্ত গার্মেন্ট কারখানাগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত এলেও এখন পর্যন্ত রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলগুলোর (ইপিজেড) রফতানিমুখী শিল্পের ব্যাপারে সরকারি কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় চট্টগ্রামে লাখখানেক শ্রমিক চাকরি বাঁচানোর তাগিদে কাজে যোগ দিচ্ছেন ইপিজেডের কারখানাগুলোতে। ফলে করোনা মোকাবেলায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং ঘরে থাকার সরকারি সিদ্ধান্তের মধ্যে কারখানা সচল থাকায় এসব শ্রমিকের জীবনে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসতে পারে এমন মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ।
চট্টগ্রাম রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (সিইপিজেড) মোট কারখানা রয়েছে ১৫৮টি। গতকালও সেখানে ৬৬টি কারখানা চালু ছিল। তবে শ্রমিক উপস্থিতি তুলনামূলক কম বলে জানিয়েছে স্থানীয় সূত্র। গতকাল রোববার ৬৭টির মতো কারখানা চালু ছিল উল্লেখ করে সূত্র জানিয়েছে, এসব কারখানায় প্রায় ৭৫ হাজার শ্রমিক কাজে যোগ দিয়েছেন। চাকরি হারানোর ভয়েই জীবনের মায়া ত্যাগ করে এসব শ্রমিক কাজে যোগ দেন বলে একাধিক শ্রমিক জানিয়েছেন। এ ছাড়া চট্টগ্রামের আনোয়ারায় কোরিয়ান রফতানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলের (কেইপিজেড) ২১টি রফতানিমুখী কারখানা গতকাল রোববার খুলেছে। এসব কারখানায় প্রায় ২৫ হাজার শ্রমিক কাজ করেন এবং গতকাল ৮৮% শ্রমিক কাজে যোগ দেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
জানা গেছে, বাংলাদেশের রফতানিমুখী শিল্প বৈশ্বিক বাজার হারাতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে গার্মেন্ট কারখানাসহ রফতানিমুখী শিল্প বন্ধ রাখার ক্ষেত্রে সরকারের অবস্থান নমনীয়। এই নমনীয় অবস্থানের সুযোগে গতকাল থেকে দেশের গার্মেন্ট কারখানাগুলো সচল হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার রাতে বিজিএমইএর পক্ষ থেকে গার্মেন্ট কারখানা বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়। পাশাপাশি ইপিজেডের রফতানিমুখী গার্মেন্টসহ শিল্পকারখানাগুলোর বিনিয়োগকারীরা বিজিএমইএর আওতাধীন নয়। তাদের নিয়ন্ত্রণ করে বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেপজা) এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)।
সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত বেপজা কিংবা বেজার পক্ষ থেকে কারখানা বন্ধ রাখার ব্যাপারে সুস্পষ্ট কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। ফলে ইপিজেডগুলোতে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক কারখানা চালু রয়েছে এবং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এসব কারখানার শ্রমিকরা কাজে যোগ দিচ্ছেন চাকরি হারানোর ভয়ে। করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সরকারের সাধারণ ছুটি ও গণপরিবহন বন্ধ ঘোষণার মধ্যে করোনাভাইরাসের ঝুঁকি নিয়েই কাজে ফিরছেন এসব শ্রমিক। তবে সরকারি নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও এরই মধ্যে সিইপিজেডের ৮৫টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (সিইপিজেড) মহাব্যবস্থাপক মো: খুরশীদ আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি নয়া দিগন্তকে জানান, অর্ডার এবং শিপমেন্ট থাকায় ৬৭টি কারখানা আংশিক চালু রয়েছে। গতকাল এসব কারখানায় ৫০ হাজারের মতো শ্রমিক কাজে যোগ দেয়ার কথা তিনি জানান। আগামী দুয়েক দিনের মধ্যে সিইপিজেডের সবগুলো কারখানায় শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ সম্পন্ন হলে কারখানাগুলো সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি বা লে-অফ ঘোষণা করতে পারে বলে তিনি জানান।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা