১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মশা মারতে একসাথে অভিযান চালাবে ঢাকার দুই সিটি, ক্যান্টনমেন্ট, বিমান

প্রধানমন্ত্রীর ক্ষোভের পর টনক নড়ল
-

মশার অত্যাচার নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষোভ প্রকাশের দু’দিনের মধ্যেই সম্ভাব্য ডেঙ্গু মোকাবেলায় সম্মিলিত উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো: তাজুল ইসলাম। এ জন্য এলজিআরডি মন্ত্রীর নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার দায়িত্বশীল প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করা হবে। ডেঙ্গু মোকাবেলায় প্রতিটি মন্ত্রণালয়, বিভাগের করণীয় নির্ধারণ করে মন্ত্রীর স্বাক্ষরে একটি আধা সরকারি পত্র পাঠানো হবে। সম্মিলিত উদ্যোগের অংশ হিসেবে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন, ক্যান্টনমেন্ট এলাকা, বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ একযোগে মশক নিধন অভিযান শুরু করবেন। স্থানীয় সরকার বিভাগ সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে সময়সীমা নির্ধারণ করে দেবেন।
গতকাল রাজধানীর সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে মশক নিধন ও ডেঙ্গু প্রতিরোধ সংক্রান্ত এক আন্তঃসভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সভাপতির বক্তৃতায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো: তাজুল ইসলাম বলেন, সরকারি ভবন, লেক, পার্ক, খাল রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, অধিদফতর বা কর্তৃপক্ষ কিন্তু মশা মারার কাজ করবে সিটি করপোরেশন। দীর্ঘ ছুটির সময় বন্ধ থাকা সরকারি-বেসরকারি অফিসগুলো থেকে এডিস মশার উৎপত্তি যেন না হয় তা নিশ্চিত করারও নির্দেশ দেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী গত ৩০ মার্চ করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিষয়ে ৬৪টি জেলায় ভিডিও কনফারেন্স করেন। এ সময় তিনি করোনাভাইরাস মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি মশক নিধন এবং ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের জন্য স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এবং সিটি করপোরেশনের মেয়রদেরকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা প্রদান করেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মশক নিধনে সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র মো: আতিকুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: শহীদুল্লাহ খন্দকার, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: নাসিরুজ্জামানসহ সিটি করপোরেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা উপস্থিতি ছিলেন।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ লেকগুলো পরিষ্কার করে দিলে আমরা ওষুধ ছিটাবো। তাহলে মশা মরবে। এটাই সময় এক সাথে কাজ করার। আমি ১৫ মে দায়িত্ব পাবো; কিন্তু এখন থেকেই কাজ করে যাচ্ছি। সভায় কৃষি সচিব জানান, তিনটি প্রতিষ্ঠান কীটনাশক আমদানি করে। তাদের কাছ থেকে যে কেউ কীটনাশক কিনতে পারে। তা ছাড়া ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনকেও সরাসরি কীটনাশক আমদানির অনুমতি দেয়া হয়েছে। সভায় সাতটি সিন্ধান্ত হয়। (১) মশার উৎপত্তিস্থল যেমন শহরের সব খাল, নালা, দু’টি বাড়ি বাস্থাপনার মধ্যবর্তীস্থলের অপরিচ্ছন্ন স্থান, কাঁচা বাজার, সরকারি অফিসগুলো, সরকারি আবাসিক স্থাপনা জরুরি ভিত্তিতে পরিচ্ছন্ন করতে হবে। (২) এডিস মশার বিস্তাররোধে অফিস ছুটিকালীন সময়ে সব সরকারি-বেসরকারি দফতরের টয়লেটের কমোডগুলো অত্যাবশ্যকীয়ভাবে বন্ধ রাখতে হবে। (৩) নির্মাণাধীন ভবন এবং যেসব সরকারি/বেসরকারি স্থাপনা নিজ উদ্যোগে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখবে না, বা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার অভাবে লার্ভার উপস্থিতি পাওয়া যাবে সেসব ব্যক্তি, স্থাপনার বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। প্রয়োজনে আইন অনুযায়ী পুনঃ পুনঃ জরিমানার ব্যবস্থাগ্রহণ করতে হবে। (৪) প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ড কাউন্সিলরের নেতৃত্বে পরিচ্ছন্নতা অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে। প্রয়োজনে প্রতি ওয়ার্ডে আটটি সাব কমিটি গঠন করে প্রতি কমিটিতে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ২০ (বিশ) জন গণ্যমান্য ব্যক্তিতে অন্তর্ভুক্ত করে একটি সামাজিক স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গঠন করতে হবে। (৫) মশকনিধনে এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করার স্বার্থে মন্ত্রণালয়, সব সিটি করপোশেন, ঢাকা ওয়াসা সম্মিলিতভাবে কাজ করবে। সিটি করপোরেশগুলো আগামী ৭ (সাত) দিনের মধ্যে নিজস্ব কর্মপরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে দাখিল করবে। ৬) ঢাকা শহরের খালগুলো/নালাগুলো একযোগে পরিচ্ছন্ন করার স্বার্থে এবং স্থাপনাগুলো পরিচ্ছন্ন করার স্বার্থে সভায় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, গণপূর্ত বিভাগ, রাজউক, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষকে তাগিদ দেয়া হয় । (৭) বর্তমানে করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে যে দীর্ঘমেয়াদি ছুটি চলমান আছে, এ সময়ের মধ্যে যেহেতু শহরে জনসাধারণ ওযানবাহনের চাপ কম আছে এ সময়টা পুরো ঢাকা শহরকে শতভাগ পরিষ্কার করার সুযোগ সিটি করপোরেশনকে নিতে হবে। ৮) এলজিআরডি মন্ত্রী ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনের চলমান পরিচ্ছন্নতা অভিযান সরেজমিন পরিদর্শন করবেন। এর বাইরে উভয় সিটি করপোরেশনের ল্যান্ডফিলসহ অন্যান্য স্থাপনা, ঢাকা ওয়াসা ও অন্যান্য কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাধীন খাল/নালাগুলো পরিচ্ছন্নতাকরণ কার্যক্রম সরেজমিন পরিদর্শন করবেন।


আরো সংবাদ



premium cement
নেতানিয়াহুসহ ইসরাইলি মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করবে আইসিসি! ঢাকায় কাতারের আমিরের নামে সড়ক ও পার্ক তেহরানের প্রধান বিমানবন্দরে পুনরায় ফ্লাইট চালু হামলায় কোনো ক্ষতি হয়নি : ইরানি কমান্ডার ইরানের পরমাণু কর্মসূচির ‘কেন্দ্র’ ইস্ফাহান : সাবেক মার্কিন কর্মকর্তা মিয়ানমারের বিজিপির আরো ১৩ সদস্য বাংলাদেশে রুমায় অপহৃত সোনালী ব্যাংকের সেই ম্যানেজারকে চট্টগ্রামে বদলি দুবাইয়ে বন্যা অব্য়াহত, বিমানবন্দর আংশিক খোলা ভারতে লোকসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু শুক্রবার সকালে ঢাকার বাতাস ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ শুক্রবার সকালে ঢাকার বাতাস ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’

সকল