২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

অক্সিজেনের অভাবে প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ ফমেক হাসপাতালে

-

ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক প্রসূতি নারী অক্সিজেনের অভাবে মারা গেছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্বজনরা। গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ওই নারীর নাম রিপা দাস (৩২)। তিনি রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার রামকল গ্রামের মিঠুন সরকারের (৩৮) স্ত্রী। রিপা রামকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা ছিলেন। তিনি ফরিদপুরের টেপাখোলা নিবাসী অনিল কুমার দাসের মেয়ে। চার বছরের বিবাহিত জীবনে এই প্রথম সন্তানসম্ভবা হয়েছিলেন তিনি।
রিপার ভগ্নিপতি ধীরাজ কুমার (৪০) জানান, সে আড়াই মাসের গর্ভবতী ছিলেন। কিন্তু এরই মধ্যে রক্তক্ষরণ হওয়ায় রোববার বেলা ২টার দিকে তাকে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসকগণ তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এমআর (গর্ভপাত) করাতে বলেন।
ধীরাজ জানান, রোববার সন্ধা ৭টার দিকে রিপাকে অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়। ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিশেষজ্ঞ কানিজ ফাতেমা তার এমআর করান। পরদিন সকাল ৭টার দিকে সেখান থেকে তাকে বের করে বেডে দেয়া হয়। এ সময় রিপার প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। দীর্ঘক্ষণ হাসপাতালের নার্স ও ইন্টার্নিদের কাছে অনুরোধ করেও তারা অক্সিজেন দেয়ার ব্যবস্থা করতে পারেননি। প্রায় এক ঘণ্টা পর একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার আনা হলেও তার আগেই মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
ঘটনার সত্যতা জানতে ফমেক হাসপাতালের পরিচালক সাইফুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সোমবার সকালে গাইনি বিশেষজ্ঞ কানিজ ফাতেমা আমাকে বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, অক্সিজেনের অভাবে ওই রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে আমার জানা নেই। তবে এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।
ডা: কানিজ ফাতেমা জানান, অস্ত্রোপচারের পর রোগীর অবস্থা অবস্থা ভালো ছিল। তবে সকালে হঠাৎ তার অবস্থার অবনতি ঘটায় তিনি মারা গেছেন। তখন তিনি সেখানে ছিলেন না।
এ দিকে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিতে এসে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও চিকিৎসকের দেখা পাচ্ছেন না অনেক রোগী। শহরের পশ্চিম খাবাসপুর মহল্লøার ব্যবসায়ী দিলদার হোসেন (৪৪) জানান, গত রোববার তিনি সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টা টিকিট কেটে বসে থেকেও চর্মবিষয়ক কোনো চিকিৎসককে দেখাতে পারেননি। এ ব্যাপারে হাসপাতালের পরিচালক বলেন, চিকিৎসকরা সরকারি নির্দেশনা মেনে রোগী দেখছেন। এখানে এসে চিকিৎসা পায়নি এ জাতীয় কোনো অভিযোগ তাকে কেউ দেয়নি।
ডাক্তার না থাকায় এমপির উদ্বেগ
ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনের এমপি খন্দকার মোশাররফ হোসেন বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে হাসপাতালে ডাক্তারদের অনুপস্থিতির ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। গতকাল দুপুরে তিনি সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বলেন, হাসপাতালে এসে রোগীরা ঠিকমতো চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন নাÑ এ জাতীয় অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। এই সঙ্কটকালে চিকিৎসকদের প্রতি মানুষের আস্থা ও ভরসা বেশি। তাই তাদের কর্তব্যকাজে গাফিলতি দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, এ সমস্যার সমাধানে সোমবার বিকেল পাঁচটার দিকে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে চিকৎসকসহ সংশ্লিøষ্ট সব মহলকে নিয়ে জরুরি সভা আহ্বান করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ফরিদপুরে হাসপাতালে ডাক্তার না পেয়ে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের দুর্ভোগের বিষয়ে সোমবার নয়া দিগন্তে একটি বিশদ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।


আরো সংবাদ



premium cement