২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

বুড়িচংয়ে এসি ল্যান্ডের অভিযানে পিয়ন লাঠি দিয়ে জনতাকে পেটাল

-

কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাহমিদা আক্তারের পরিচালনায় ভ্রাম্যমাণ আদালতে অভিযানে তার পিয়নের লাঠিচার্জের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়েছে। অনেকে ভিডিওটি শেয়ার দিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন। ভিডিওতে এসি ল্যান্ড কার্যালয়ের অফিস সহায়ক সাইফুল ইসলামকে লাঠি হাতে নিয়ে একাধিক লোককে পিটুনি, কানে ধরানো এবং ধাওয়া করতে দেখা যায়। প্রথমে বিষয়টি অস্বীকার করলেও ভিডিওটি দেখার পর এসিল্যান্ড তার অফিস পিয়নে জনতাকে ধাওয়া করার ঘটনা স্বীকার করেন। এ বিষয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ী, সচেতন মহল ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
গত শুক্রবার দুপুরে উপজেলার নিমসার ও কাবিলাসহ বেশ কয়েকটি বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিদা আক্তার। এসময় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মূল্য তালিকা না থাকায় এবং মাস্ক না পরে বাজারে ঘোরাফেরার কারণে আটজনকে জরিমানা করেন এবং অনেককে সতর্ক করেন। কিন্তু একই সময় বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের জন্য আসা মানুষকে পুলিশ ও এসিল্যান্ড অফিসের পিয়ন সাইফুল ইসলাম লাঠি নিয়ে ধাওয়া করেন। একাধিক ব্যক্তিকে লাঠি দিয়ে পেটানো এবং এক ব্যক্তিকে কানে ধরাতেও দেখা যায়। ভ্রাম্যমাণ আদালতকে পরিচালনার নামে পুলিশের পাশাপাশি চতুর্থ শ্রেণীর একজন কর্মচারীর এ ধরনের ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয় বাজারে আসা লোকজন ও ব্যবসায়ীরা। ভ্রাম্যমাণ আদালতকে সহায়তা করে বুড়িচং থানার এএসআই দেলোয়ারসহ সঙ্গীয় ফোর্স।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যবসায়ীরা জানায়, লাঠি হাতে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মচারী পিটিয়ে ও ধাওয়া করে পুরো বাজারে আতঙ্ক সৃষ্টি করবে, এটা কেমন ভ্রাম্যমাণ আদালত? তারা জানায়, এলাকার সাধারণ মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে বাজারে এসেছিল, কিন্তু বিনা উসকানিতে পুলিশ ও সাদা গেঞ্জি পরিহিত ব্যক্তি (অফিস পিয়ন সাইফুল) ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মানুষকে যেভাবে ধাওয়া করেছে তা চরম অন্যায়। এদিকে ধারণকৃত তিন মিনিটের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরুল হাসান বলেন, লাঠি হাতে জনতাকে ধাওয়া, পেটানো এবং কানে ধরার বিষয়টি আমার জানা নেই। এসিল্যান্ড ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছেন। তিনি এই বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন। বিষয়টি খোঁজ নেয়া হচ্ছে।
এসিল্যান্ড তাহমিদা আক্তার জানান, বাজারে লোকসমাগম বেশি ছিল। লোকজনকে সরে যেতে বলা হয়েছিল। তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালত চলাকালে কানে ধরানো এবং লাঠি হাতে ধাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। পরে তার ব্যক্তিগত ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে তিন মিনিটের ভিডিওটি দেয়া হয়। ভিডিওটি দেখে বিকাল ৪টা ২৪ মিনিটের সময় অফিস পিয়ন সাইফুল কর্তৃক লাঠি ও ধাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন।
এ বিষয়ে সচেতন নাগরিক কমিটির জেলা শাখার সভাপতি বদরুল হুদা জেনু বলেন, এতে আইনের ব্যত্যয় ঘটেছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত চলাকালে লাঠি হাতে ধাওয়া করা আইনের ব্যত্যয়। এ ক্ষেত্রে তদন্ত সাপেক্ষে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া উচিত।


আরো সংবাদ



premium cement