২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

শোবিজে প্রতিদিন ক্ষতি কোটি টাকা

-

শোবিজ অঙ্গনে প্রতিদিন ক্ষতি হচ্ছে কোটি টাকা। করোনার কারণে নাটকের শুটিং ও সিনেমা হল বন্ধের কারণে প্রতিদিন এ লোকসান গুনতে হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। তারা জানান, গত ২২ মার্চ থেকে নাটকের শুটিং বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শুধু এ খাতেই প্রতিদিন লোকসান গুনতে হচ্ছে ৭০ লাখ টাকারও বেশি।
অন্য দিকে গত ১৮ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে দেশের সব সিনেমা হল। তার আগেই করোনাভাইরাসের প্রভাবে সিনেমা হলে কমতে শুরু করে দর্শক। অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করায় সিনেমা হলে চলা ছবিগুলোর প্রযোজকদের কোটি টাকার ওপরে লোকসান গুনতে হচ্ছে।
ছোট পর্দার নির্মাতাদের সংগঠন ডিরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি জানান, করোনার কারণে ছোট পর্দার শুটিং ২২ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ। অথচ এ সময় বছরের সবচেয়ে বেশি কাজ হয়। নির্মাতা, শিল্পী, প্রযোজক ও কলাকুশলীদের এই সময়ে কাজের ব্যস্ততায় দম ফেলার সময় থাকে না। অনেক নির্মাতা সারা বছর কাজ না করলেও ঈদে নাটক নির্মাণ করেন। সচরাচর এ সময় থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত টানা কাজ চলে। প্রতি মাসে ছোট পর্দায় ৪০ থেকে ৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ হলেও এই সময়ে বিনিয়োগের পরিমাণ আরো বেড়ে যায়। শুটিং বন্ধের কারণে নির্মাতা, আর্টিস্ট, প্রযোজক, ক্যামেরাম্যানসহ অন্য সবার ব্যয় এর মধ্যে প্রতিদিন দিন ৬০ থেকে ৭০ লাখের বেশি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। সেই সাথে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন ছোট পর্দার সাথে জড়িতরা। শিল্পী থেকে শুরু করে নির্মাতা, প্রযোজক, ক্যামেরার পেছনের মানুষগুলোকে বেকার করে দিয়েছে এই করোনা।
অপর দিকে প্রযোজকদের সংগঠন বাংলাদেশ প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জানান, এক মাস শুটিং হলে সব মিলে নাটকের বাজেট সর্বনিম্ন ৫০ কোটি টাকা। এই মুহূর্তে আমাদের নাটকের ব্যস্ততা বেশি। সে হিসাবে এখন আমাদের প্রতিদিন ৭০ লাখ টাকার বেশি ক্ষতি হচ্ছে। এখন আমরা যারা চলতে পারছি, তারা এই ইন্ডাস্ট্রির অসচ্ছলদের কথা ভাবছি। কারণ, দীর্ঘ দিন শুটিং বন্ধ থাকলে ছোট পর্দার সাথে জড়িত নিম্ন এবং নিম্নমধ্যম আয়ের এসব মানুষ আর্থিকভাবে চরম ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।
অন্য দিকে সিনেমা প্রযোজকরা জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের গুনতে হচ্ছে কোটি টাকার ওপরে লোকসান। তারা বলেন, গত ১৮ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে দেশের সব সিনেমা হল। তার আগেই করোনাভাইরাসের প্রভাবে সিনেমা হলে কমতে শুরু করে দর্শক। অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করায় সিনেমা হলে চলা ছবিগুলোর প্রযোজকদের এ অর্থিক ক্ষতির মধ্যে পড়তে হয়েছে।
একজন প্রযোজক জানান, সিনেমা হল বন্ধ ঘোষণার আগ পর্যন্ত হলে চলছিল শাকিব খান অভিনীত দু’টি ছবি বীর ও শাহেনশাহ, জয়া আহসান ও প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় অভিনীত আমদানি করা ছবি রবিবার, নুসরাত ইমরোজ তিশা ও পরমব্রত অভিনীত যৌথ প্রযোজনার ছবি হলুদ বনি।
১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবসে মুক্তি পায় বীর ছবিটি। তাই প্রথম সপ্তাহে করোনার প্রভাব না থাকলেও দ্বিতীয় সপ্তাহেই করোনার প্রভাবে ছবিটির দর্শক কমে যায়। এরপর করোনাভাইরাসে আক্রান্তের খবর প্রকাশের পর সিনেমা হলে দর্শক আরো কমে আসে। একপর্যায়ে হল বন্ধ করে দিতে হয়। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন শাহেনশাহ ছবির প্রযোজক। দুই কোটি টাকারও বেশি বাজেটের ছবিটি মুক্তি পায় ৬ মার্চ। মুক্তির প্রথম সপ্তাহেই করোনার প্রভাব পড়ে ছবিটিতে। হল বন্ধের আগ পর্যন্ত দেশের প্রায় ৮০টি প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শিত হচ্ছিল ছবিটি; কিন্তু হল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কোটি টাকার ওপরে লোকসান হবে বলে জানান ছবিটির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শাপলা মিডিয়ার ব্যবস্থাপক রেজাউল করিম। এ দিকে আমদানি করা রবিবার ছবিটি থেকেও প্রায় ১৫ লাখ টাকা লোকসানের কথা বলেছেন আমদানিকারক অনন্য মামুন।


আরো সংবাদ



premium cement