২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

বিমানের অপারেশন ম্যানেজারের দায়িত্ব নিতে স্টেশন ম্যানেজারদের অপারগতা ২ অক্টোবরের মধ্যে দেশে ফেরার নির্দেশ

-

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী লন্ডন, দিল্লি, জেদ্দাসহ বিদেশের মোট ৮ স্টেশন ম্যানেজারের কাছে দায়িত্ব দিয়ে আগামী ২ অক্টোবরের মধ্যে অপারেশন ম্যানেজারদের দেশে ফিরতে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।
কিন্তু তার আগেই ওই সব দেশে থাকা কান্ট্রি ও স্টেশন ম্যানেজার পদের কর্মকর্তারা লাইসেন্সপ্রাপ্ত অপারেশন ম্যানেজার পদের কার্যক্রমের দায়িত্ব না নিয়ে তার আগে কৌশলে অপারগতা প্রকাশ করে ঢাকায বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন। বিষয়টি পরিষ্কার হতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক (কাস্টমার সার্ভিস) আতিক সোবহানের সাথে বার বার যোগাযোগ করা হলেও তিনি টেলিফোন ধরেননি।
গতকাল শনিবার রাতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ডিজিএম (জনসংযোগ) তাহেরা খন্দকার নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘আমি যতদূর জানি, বিমানের বিদেশে ৮ স্টেশনে থাকা অপারেশন ম্যানেজারদের দেশে চলে আসতে বলা হয়েছে। এখন ওই স্টেশন থেকে কান্ট্রি অথবা স্টেশন ম্যানেজাররা কী কারণে বিমান ম্যানেজমেন্টের কাছে এ বিষয়ে চিঠি দিচ্ছেন সেটি আমি না জেনে বলতে পারছি না। কারণ এটা হচ্ছে কনসার্ন ডিপার্টমেন্টের ইস্যু। তারা এই বিষয়টি আমাকে এখনো অবগত করেনি। ভবিষ্যতে যদি করে তাহলে আমি অবশ্যই বিষয়টি জানাব।’ এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, হতে পারে বিমান কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিবেচনা করতে পারেন। আবার না-ও করতে পারেন। বিমানের বলাকা ভবন সূত্রে জানা গেছে, ঢাকায় দেয়া চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সিভিল এভিয়েশনের লাইসেন্সপ্রাপ্ত অপারেশন ম্যানেজার পদের কর্মকর্তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করা তাদের পক্ষে কষ্টকর হয়ে যাবে। ওই কাজ পরিচালনার জন্য আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে লোক নিয়োগ দেয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয় বলে সূত্র জানিয়েছে। বর্তমানে বিদেশে অবস্থান করা ৮ অপারেশন ম্যানেজারসহ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে মোট লাইসেন্সধারী কর্মকর্তার সংখ্যা ২২ জন। গতকাল বিদেশে অবস্থান করা বিমানের একজন অপারেশন ম্যানেজার নাম না প্রকাশের শর্তে নয়া দিগন্তকে বলেন, আমাদের কাছে ঢাকা থেকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ২ আগস্টের মধ্যে সবাইকে দেশে ফিরতে হবে। তাই কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মোতাবেক প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রেখেছি।
উল্লেখ্য, গত ৩০ আগস্ট বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালনা পর্ষদের অনুষ্ঠিত গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বিমানের বিদেশে থাকা মোট ১৬ স্টেশনের মধ্যে ৮ স্টেশনের অপারেশন ম্যানেজারের পদ বিলুপ্তির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঢাকায় ফিরতে তাদের ট্রান্সফার অর্ডার পাঠানো হয়। এবার তাদের দেশে ফেরার জন্য ১৫ সেপ্টেম্বর মুভমেন্ট অর্ডার দেয়া হয়েছে।
বিমানের মোট ১৬টি স্টেশনের মধ্যে লন্ডন, কলকাতা, দিল্লি, আবুধাবি, রিয়াদ, জেদ্দা, দুবাই ও কুয়ালালামপুর স্টেশন চলছিল সিভিল এভিয়েশনের লাইসেন্সপ্রাপ্ত অপারেশন ম্যানেজার পদের কর্মকর্তাদের দিয়ে। অপর দিকে, সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক, কুয়েত, দোহা, মাস্কাট, নেপাল, ইয়াঙ্গুন ও দাম্মাম স্টেশনে দীর্ঘ দিন ধরে অপারেশনের কার্যক্রম চলছে আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে। খরচ কমানোর লক্ষ্যে বিমান কর্তৃপক্ষ ৮ স্টেশন থেকে অপারেশন পদ বিলুপ্ত করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা বলছেন আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে এসব স্টেশনের কার্যক্রম পরিচালিত হলে বিমানকে আরো দুই-তিন গুন টাকা গচ্চা দিতে হবে। বিমানের লাইসেন্সধারী অপারেশন ম্যানেজারদের মাধ্যমে ফ্লাইট ডিসপাস, নোটার্ম, ক্রুদের ব্রিফিং দেয়া, ওভার ফ্লাইং পারমিশন, ওভার ফ্লাইং ফুয়েল বিল চেকআপসহ নানা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। শুধু জেদ্দা নয়; বিমানের ৮ স্টেশনের প্রতিটি থেকেই চিঠি দিয়ে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে, তাদের পক্ষে অপারেশন ম্যানেজারের টেকনিক্যাল বিষয়টি হ্যান্ডলিং করা সম্ভবপর হচ্ছে না। জানা গেছে, জেদ্দা থেকে বিমানের স্টেশন ম্যানেজার মো: রফিক উল হাসান গত ২১ সেপ্টেম্বর ডিজিএম গ্রাউন্ড সার্ভিস ও জিএম সেন্ট্রাল কন্ট্রোলের কাছে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করেন, বিমানের জেদ্দার এয়ারপোর্টের ফ্লাইট অপারেশন কার্যক্রম অন্যান্য স্টেশন থেকে সম্পূর্ণ ডিফারেন্ট। চিঠিতে সরাসরি স্টেশন ম্যানেজাররা দায়িত্ব নিতে অপারগতা প্রকাশ করছেন এমন তথ্যর বিষয়ে জানতে চাইলে বিমানের জনসংযোগ বিভাগের প্রধান তাহেরা খন্দকার নয়া দিগন্তকে বলেন, আসলে চিঠিটা না দেখে আমি কোনো মন্তব্যই করতে চাচ্ছি না। এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তনও হতে পারে। পুরো বিষয়টি এখনো প্রসেসিংয়ের মধ্যে আছে।


আরো সংবাদ



premium cement