বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর স্মৃতি জাদুঘর রক্ষায় সন্ধ্যা নদীর বালু উত্তোলন বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশ

বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর স্মৃতি জাদুঘর এবং তার বাড়ির পাশের সন্ধ্যা নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত সন্ধ্যা নদী থেকে বালু তোলার অনুমতি দিয়ে জেলা প্রশাসক যে কার্যাদেশ দিয়েছিলেন, তা তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন আদালত। পাশাপাশি বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর স্মৃতি জাদুঘর, বাড়ি, স্কুল, মাদরাসাসহ অন্যান্য স্থাপনা রক্ষায় বালু উত্তোলন বন্ধের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না এ মর্মে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ গতকাল রুলসহ এ আদেশ দেন। স্থানীয় বাসিন্দা এবং পশ্চিম ভুতেরদিয়া আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ আব্দুল কাদের মাল এ রিট আবেদনটি করেন।
রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও মুসাদ্দেক বিল্লাহ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
রুহুল কুদ্দুস কাজল পরে সাংবাদিকদের বলেন, বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলা দিয়ে প্রবাহিত সন্ধ্যা নদীর বালু উত্তোলনের ফলে বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের বাড়ি, স্মৃতি জাদুঘরসহ অন্যান্য স্থাপনা নদীতে বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। নানা আন্দোলন, প্রতিবাদের পরও কোনো প্রতিকার না পেয়ে স্থানীয় বাসিন্দা ও পশ্চিম ভুতেরদিয়া আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ আব্দুল কাদের মাল হাইকোর্টে এই রিট আবেদন করেন। সে অবেদনের শুনানি নিয়েই আদালত রুলসহ আদেশ দিয়েছেন।
বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের স্মৃতি জাদুঘর, বাড়ি রক্ষায় জেলা প্রশাসনের কাছে একটি আবেদন করেছিলেন জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তারিকুল ইসলাম। ওই আবেদন এক মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বলেছেন হাইকোর্ট। আর সন্ধ্যা নদী থেকে বালু উত্তোলনে ইজারা দেয়া কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং ভবিষ্যতে ওই এলাকায় বালু উত্তোলনের ইজারা না দিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না মর্মে রুল জারি করেছেন। ভূমি সচিব, পরিবেশ ও গণপূর্ত সচিব, বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার, বরিশালের জেলা প্রশাসকসহ ১১ জনকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল মেসার্স সততা ট্রেডার্স সন্ধ্যা নদী থেকে বালু উত্তোলনের অনুমতি পায়। এরপর নদী থেকে বালু উত্তোলন শুরু করে। তাতে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর স্মৃতি জাদুঘর, বাড়িসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হুমকির মুখে পড়ে।