ঢাবি ও জাবিতে ‘মার্চ ফর প্যালেসটাইন’ পালন
- ঢাবি প্রতিনিধি
- ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
আন্তর্জাতিক ফিলিস্তিন সংহতি দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ থেকে সংহতি জানিয়ে ‘মার্চ ফর প্যালেস্টাইন’ কর্মসূচি পালন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা। গতকাল বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে কর্মসূচির সূচনা হয়। শুরুতে ফিলিস্তিনের বড় পতাকা নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি রাজু ভাস্কর্য থেকে ভিসি চত্বর, ফুলার রোড হয়ে শহীদ মিনার ঘুরে ফের রাজু ভাস্কর্যে এসে শেষ হয়। পরে সংক্ষিপ্ত এক সমাবেশের মাধ্যম্যে কর্মসূচি শেষ হয়।
সমাবেশে আরাকান থেকে ফিলিস্তিন মুক্তি পাক মুক্তি পাক; আমরা কী চাই, তোমরা কী চাও আজাদি আজাদি; হিন্দুত্ববাদ মুজিববাদ, নিপাত যাক নিপাত যাক ; টু জিরো টু ফোর জায়ানিজম নো মোর-সহ বিভিন্ন সে্লাগান দেন শিক্ষার্থীরা।
কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, ফিলিস্তিনে যেমন জায়নবাদ জেঁকে বসে নিরীহ মুসলমানদের তাদের ঘরবাড়ি ছাড়া করেছে, তাদের জীবনকে খেলার সামগ্রী বানিয়ে ফেলেছে। একইভাবে বাংলাদেশেও মুজিববাদ ও হিন্দুত্ববাদের আমদানি করে এ দেশের মানুষের অধিকার কেড়ে নেয়ার চেষ্টা চলমান রয়েছে। আমরা তা কখনোই হতে দেবো না।
সমাবেশে আবু বাকের মজুমদার বলেন, আমরা যখন জুলাইয়ে আন্দোলন শুরু করেছিলাম তখন প্যালেস্টাইনের মানুষের আকুতি আমাদের স্প্রিরিট হিসেবে কাজ করেছে। তাই, আজকের এই দিনে আমরা প্যালেস্টাইনের মুক্তি চাই।
এ ছাড়াও আন্দোলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার, সমন্বয়ক লুৎফর রহমান, সহসমন্বয়ক রিফাত রশিদ, সহসমন্বয়ক মহিউদ্দিনসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
জাবিতে কর্মসূচি
জাবি প্রতিনিধি জানান, আন্তর্জাতিক ফিলিস্তিন সংহতি দিবস উপলক্ষে ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে ‘মার্চ ফর প্যালেস্টাইন’ কর্মসূচি পালন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।
গতকাল শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা। মিছিলটি কয়েকটি সড়ক ঘুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকায় গিয়ে সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয় । সমাবেশ সঞ্চালনা করেন নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষার্থী সোয়াইব হাসান।
এ সময় ইসলামী ছাত্রশিবির জাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক ও বাংলা বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মহিবুর রহমান বলেন, ফিলিস্তিনে ইসরাইলের বর্বর বাহিনীর বর্বরতা সারা বিশ্বের মানবিকতাকে শেষ সীমায় পৌঁছে দিয়েছে। ইসরাইল এক বছরের বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনে গণহত্যা চালিয়ে আসছে। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর সব রাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান থাকবে, যাতে আমরা ফিলিস্তিন এবং মানবিকতার পাশে দাঁড়াতে পারি। যাতে আমাদের বিবেক জাগ্রত হয়।
সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজে অধ্যায়নরত ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী ইসহাক বলেন, গত এক বছরের বেশি সময় ধরে আমাদের দেশের শিশু, জনগণ এবং বেসামরিক মানুষের ওপর গণহত্যা চালানো হচ্ছে। গণহত্যার ফলে আমরা যেখানে বসবাস করছি সেখানে দিনের পর দিন মানবতা কমছে। আমরা বাংলাদেশী জনগণকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি, আমাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি সময় ধরে উপনিবেশবাদ তৈরির জন্য যে অপারেশন চালানো হচ্ছে, যে গণহত্যা চালানো হচ্ছে তা এক দিন বন্ধ হয়ে যাবে এবং এই দিন খুব বেশি দূরে নয়।
গণ-অভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবদুর রশিদ জিতু বলেন, আমরা ঘুমাতে পারি না যখন দেখি ফিলিস্তিনের ছোট ছোট শিশুসহ নারী-পুরুষদের ইসরাইলি বাহিনী পশুপাখির মতো গুলি করে হত্যা করে। এই দৃশ্য আমাদের বিবেককে নাড়া দেয়। এই দৃশ্য আমাদের বিশ্ব বিবেককে কাঁদাতে ব্যর্থ হয়েছে, আমরা এই বিশ্ব বিবেককে ঘৃণা করি। যারা আমাদের সভ্যতার বুলি শেখাতে আসে সেই সভ্যতা ফিলিস্তিনের পক্ষে কেন কথা বলে না সেই প্রশ্ন আমাদের মনে যুগ যুগ ধরে থেকে যাচ্ছে। ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের মানুষ আজ নিজ দেশে পরবাসীর মতো বসবাস করছে। সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরাইল তাদের দখলদারিত্ব কায়েম করতে করতে ফিলিস্তিনকে কোণঠাসা করে ফেলছে। এ রকম চলতে থাকলে আগামী কয়েক দশক পরে বিশ্বমানচিত্র থেকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।