২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

মুসলমানদের বিরুদ্ধে সহিংসতা উস্কে দিয়ে টুইটারের শাস্তি পেলেন কঙ্গনা

কঙ্গনা রানাউত - ছবি : সংগৃহীত

বিতর্কিত বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউত তার টুইটে সহিংসতায় ইন্ধন যুগিয়েছেন এই অভিযোগে টুইটার তার অ্যাকাউন্ট স্থগিত করে দিয়েছে।

তবে ভারতীয় গণমাধ্যম বলছে, টু্‌ইটার তার অ্যাকাউন্ট স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দিয়েছে।

এই টুইটে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, ‘২০০০-এর গোড়ায়’ তিনি যে কায়দায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, একজন বিরোধী নেতাকে ‘শায়েস্তা করতে’ এবারেও তিনি যেন ঠিক সেই একই কায়দাই ব্যবহার করেন।

এই কথার মধ্যে দিয়ে তিনি দাঙ্গার পথ নেয়ার প্রতি ইঙ্গিত করেছেন, যে দাঙ্গায় প্রাণ হারিয়েছিলেন হাজার হাজার মুসলিম।

কঙ্গনার এই বার্তা নিয়ে সাথে সাথে টুইটারে ব্যাপক ক্ষোভের ঝড় উঠেছে।

তার সর্বসাম্প্রতিক এই টুইটটিতে বিরোধী নেতা বলে তিনি টার্গেট করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীকে।

টুইটার এ ব্যাপারে এখনো কোনো বিবৃতি দেয়নি।

তবে টুইটারের একজন মুখপাত্র বিবিসি নিউজকে বলেছেন, কঙ্গনা বারবার বিদ্বেষপূর্ণ এবং উস্কানিমূলক মন্তব্য করে ও হয়রানিমূলক আচরণ দেখিয়ে এই প্ল্যাটফর্মের নিয়মনীতি লংঘন করেছেন।

এএনআই সংবাদ সংস্থাকে তার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে কঙ্গনা টুইটারের বিরুদ্ধে বর্ণবাদের অভিযোগ তুলেছেন।

‘টুইটার আমার মতকেই সত্য প্রমাণ করেছে যে তারা জন্মসূত্রে আমেরিকান এবং একজন শ্বেতাঙ্গ ব্যক্তি মনে করে একজন বাদামি চামড়ার মানুষকে দাস হিসেবে দেখার অধিকার তার আছে। তারাই বলে দেবে বাদামিরা কী ভাববে, কী বলবে বা কী করবে।’

‘আমার জন্য আরো অন্য প্ল্যাটফর্ম আছে যেখানে আমি গলা তুলে কথা বলতে পারব। এর মধ্যে শিল্পমাধ্যম হিসেবে সিনেমাও আছে,’ যোগ করেন তিনি।

বিতর্ক সৃষ্টিতে নতুন নন কঙ্গনা রানাওয়াত। বলিউড জগতে স্বজনপোষণের বিরুদ্ধে কথা বলে, বিষয়টিকে সামনে এনে তিনি প্রথমদিকে প্রশংসাই কুড়িয়েছিলেন।

কিন্তু অল্পদিনের মধ্যেই সিনেমা জগতে এবং বাইরেও তিনি বিভেদ সৃষ্টিকারী একজন ব্যক্তি হিসাবে পরিচিত হয়ে ওঠেন। তিনি প্রায়শই টুইটার এবং ইনস্টাগ্রামের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে সহকর্মী ও তারকাদের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলেন, তাদের বিরুদ্ধে গুরুতর ও জঘন্য রুচির হামলা চালান।

সোনাম কাপুরকে তিনি উল্লেখ করেন একজন ‘মাফিয়া বিম্বো’ বলে অর্থাৎ তিনি বোধবুদ্ধি ও গুণাগুণবিহীন একজন মাফিয়া। ঊর্মিলা মাতণ্ডকারকে তিনি অভিহিত করেন ‘একজন পর্ন তারকা’ হিসেবে এবং দীপিকা পাডুকোন মানসিক বিষণ্ণতা নিয়ে তার লড়াই নিয়ে কথা বলার পর কঙ্গনা তাকে নিয়ে ব্যঙ্গবিদ্রূপাত্মক মন্তব্য করেন।

কঙ্গনার টুইট শুধু যে বিতর্কিত তাই নয়, কখনো কখনো তা মানুষকে আঘাত দেবার মতো এবং নিছক কল্পনাপ্রসূত।

ফেব্রুয়ারি মাসে এক টুইট মন্তব্যে তিনি বিশ্বের মানুষের কাছে ঘোষণা করেন যে ‘তার মতো এত ব্যাপক বহুমুখী প্রতিভা এই মুহূর্তে পৃথিবীর কোনো অভিনেত্রীর নেই’। তিনি আরো বলেন, তার যে ‘ব্যক্তিগত প্রতিভা’ তা একমাত্র অভিনেত্রী মেরিল স্ট্রিপের সমতুল্য এবং অভিনয়ের দক্ষতায় তিনি ওয়ান্ডার উম্যান তারকা গল গ্যাডোটের সমকক্ষ।

তবে তিনি কোনো সময়েই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং তার দল ভারতীয় জনতা পার্টি বিজেপির কোনো সমালোচনা করেননি।

কঙ্গনার সমালোচকরা মনে করেন তিনি বিজেপির ডানপন্থী হিন্দু জাতীয়তাবাদী মতাদর্শকে সমর্থন করেন। তিনি যে বিভেদের আবহ তৈরি করেন তাতেও এটা স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে।

কঙ্গনা প্রধানমন্ত্রী মোদির প্রতি তার শ্রদ্ধা ও তার পছন্দের কথা সবসময় ব্যক্ত করেছেন, যেখানে মোদির নিজেরই একটা বিভেদের ভাবমূর্তি রয়েছে। তার ব্যঙ্গবিদ্রূপ এবং ক্ষোভ সবই তিনি প্রকাশ করেন মোদির প্রতিপক্ষদের বিরুদ্ধে।

তার সর্বসাম্প্রতিক টুইটটির লক্ষ্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী, যিনি সম্ভবত বর্তমানে মোদির সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ। সম্প্রতি রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ লড়াইয়ে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি হেরে যাবার এক দিন পর কঙ্গনা এই টুইট বার্তাটি পোস্ট করেন। এ নির্বাচনের প্রচারণায় মোদি খুবই সামনে থেকে একটা মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন।

গত বছর কঙ্গনা বলিউড তারকা সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুকে ঘিরে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। মুম্বাই পুলিশ বলেছিল, অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুত আত্মহত্যা করেছেন, কিন্তু কঙ্গনা টুইট করে তার মৃত্যুর জন্য বলিউডের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন এবং সিনেমা জগতের স্বজনপোষণকে দায়ী করেন।

এরপর তিনি রাজপুতের সাবেক প্রেমিকা অভিনেত্রী রিয়া চক্রবর্তীকে টার্গেট করতে শুরু করেন। রিয়া চক্রবর্তীকে নিয়ে নানাধরনের যেসব অভিযোগের গুজব উঠেছিল তার টুইট বার্তা তাতে আরো ইন্ধন যোগায়। রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে কুৎসামূলক মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার জন্য বলিউডের কিছু তারকা ও চলচ্চিত্র নির্মাতাদের অনুরোধ সত্ত্বেও তিনি রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে তার ক্যাম্পেইন চালানো থামাননি।

সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর তদন্ত নিয়ে তার উস্কানিমূলক টুইটগুলোতে তিনি শেষ পর্যন্ত পুলিশ ও স্থানীয় কর্মকর্তাদের জড়িত করার পর তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতারও অভিযোগ আনা হয়।

সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement
দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ দিশেহারা : আমিনুল লিবিয়ায় নিয়ে সালথার যুবককে নির্যাতনের ঘটনায় মামলা, গ্রেফতার ১ মনুষ্য চামড়ায় তৈরি বইয়ের মলাট সরানো হলো হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আওয়ামী লীগকে বর্জন করতে হবে : ডা: ইরান আমরা একটা পরাধীন জাতিতে পরিণত হয়েছি : মেজর হাফিজ তরুণীর লাশ উদ্ধারের পর প্রেমিকসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা ভিয়েনায় মুসলিম বিশ্বের রাষ্ট্রদূতদের ইফতারে ইসলামিক রিলিজিয়াস অথোরিটি আমন্ত্রিত এবার বাজারে এলো শাওমির তৈরি বৈদ্যুতিক গাড়ি সকল কাজের জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতার অনুভূতি থাকতে হবে : মাওলানা হালিম বিএনপি জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি করে : ড. মঈন খান সাজেকে পাহাড়ি খাদে পড়ে মাহিন্দ্রচালক নিহত

সকল