১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

কর্ণফুলী নদী থেকে বিধ্বস্ত বিমানের একাংশ উদ্ধার

কর্ণফুলী নদী থেকে বিধ্বস্ত বিমানের একাংশ উদ্ধার - ছবি : সংগৃহীত

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে বিধ্বস্ত প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান (ইয়াক-১৩০)-এর একটি অংশ উদ্ধার করেছে নৌবাহিনী।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) রাত সাড়ে ৯টার দিকে কর্ণফুলী থানার জুলধা মাতব্বর ঘাট সংলগ্ন এইচএম স্টিল কারখানার পাশে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ থেকে বিমানের অংশটি উদ্ধার করে নৌবাহিনীর উদ্ধারকারী জাহাজ ‘বলবান’। তবে এখনো উদ্ধার কাজ শেষ করা হয়নি।

এর আগে, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে ট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গা সৈকতের কর্নফুলী নদীর মোহনায় প্রশিক্ষণ বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। এতে বিমানে থাকা অসিম জাওয়াদ (৩৩) নামে এক পাইলট নিহত হন।

ঘটনার দুই ঘণ্টা পর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চিকিৎসকরা স্কোয়াড্রন লিডার অসিম জাওয়াদকে মৃত ঘোষণা করেন।

এই ঘটনায় আহত অপরজন উইং কমান্ডার সোহানের অবস্থা স্থিতিশীল বলে নিশ্চিত করেন নৌ বাহিনীর একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা।


প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আকাশে উড্ডয়নকালীন সময়ে বিমানটিতে আগুন লেগে যায়। বিমানটি কর্ণফুলী মোহনায় পড়ার আগে বিমান থেকে আগুনসহ ধোঁয়া বের হতে থাকে।

বিধ্বস্ত হওয়ার কয়েক সেকেন্ড আগে বিমান থেকে দুই পাইলটকে ছিটকে পড়তে দেখা যায়। তাদের প্যারাসুটটি খুলে যাওয়ার পর দুই পাইলটই পানিতে অবতরণ করেন। পরে হাসপাতালে নেয়ার পর অসিম জাওয়াদকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

স্কোয়াড্রন লিডার অসিম জাওয়াদ ২০০৭ সালে এসএসসি এবং ২০০৯ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ- ৫ পেয়ে সাফল্যের সাথে সাভার ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে উত্তীর্ণ হন। ২০১০ সালে বাফায় (বাংলাদেশ এয়ারফোর্স অ্যাকাডেমি) যোগদান করেন এবং ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসে কমিশন লাভ করেন একজন পাইলট অফিসার হিসেবে।

তিনি PT-6 , L-39ZA , F-7MB, F-BG1 ইত্যাদি বিমান চালিয়েছেন। তিনি F-7MG1- এর অপারেশনাল পাইলট ও এলিমেন্ট লিডার ছিলেন।

তিনি ‘ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে’ জাতিসঙ্ঘের মিশনে নিয়োজিত ছিলেন। বিভিন্ন কোর্সের তাগিদে ভ্রমণ করেছেন চীন, ভারত, তুরস্ক ও পাকিস্তানে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নিয়োজিত ছিলেন ফ্লাইং ইনস্ট্রাক্টরস স্কুল অফ বি.এ.এফ-এ স্টাফ ইনস্ট্রাক্টর হিসেবে।

অসিম জাওয়াদ নিজের ট্রেনিং জীবনে সকল বিষয়ের শ্রেষ্ঠত্বের জন্য পেয়েছেন গৌরবমণ্ডিত ‘সোর্ড অফ অনার’। এসসিপিএসসি-থেকে এখন পর্যন্ত তিনিই একমাত্র ‘সোর্ড অফ অনার’ বিজয়ী। ‘ফ্লাইং ইনস্ট্রাক্টরস’ কোর্সে শ্রেষ্ঠত্বের জন্য পেয়েছেন ‘মফিজ ট্রফি’। এছাড়া দায়িত্বশীলতা ও কর্মক্ষেত্রে দক্ষতার জন্য প্রশংসা পেয়েছেন চিফ অফ এয়ার স্টাফ থেকে।

নিহত অসিম জাওয়াদের দুই বছরের এক কন্যা সন্তান রয়েছে।

অসিমের মৃত্যুতে বিমানবাহিনীর পাশাপাশি সেনা ও নৌ বাহিনীর সহকর্মীদের মাঝে শোকের ছায়া বিরাজ করছে।


আরো সংবাদ



premium cement