কুবিসাসের কার্যালয় ভাঙচুর, সন্দেহের তালিকায় ছাত্রলীগ

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (কুবিসাস) অফিসে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ভাঙচুর ছাত্রলীগ করেছে বলে মনে করছেন কুবিসাসের সদস্যরা।

রোববার (৪ জুন) সকাল ১০টায় কার্যালয়ে এসে সাংবাদিকরা ভাঙচুর দেখতে পায়।

সবশেষ, ছয় থেকে সাত দিনের ঘটনা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, শাখা ছাত্রলীগের একাংশের (রেজা-ই-এলাহীর) নেতাকর্মীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন হুমকি দিয়ে আসছেন সাংবাদিকদের। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্রলীগ এ ভাঙচুর করেছে বলে মনে করছেন সাংবাদিক সমিতির সদস্যরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার দ্বিতীয় তলার ১৪ নম্বর কক্ষের সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ের পূর্ব পাশের দু’টি জানালার কাচ ভেঙে ফেলা হয়েছে। পরে সাংবাদিক সমিতির সদস্যরা বিষয়টি দেখতে পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অবগত করলে প্রক্টরিয়াল টিম পরিদর্শন করেন।

এ বিষয়ে সাংবাদিক সমিতি সভাপতি মুহা: মহিউদ্দিন মাহি বলেন, আমরা গতকাল রাতে অফিস থেকে যাওয়ার পরে সকালে অফিসে এসে দেখি অফিসে হামলা করা হয়েছে। এতে পূর্ব পাশের দু’টি জানালা ভেঙে ফেলা হয়েছে। তবে গত কয়েকদিন থেকেই সংবাদ প্রকাশের জেরে শাখা ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতার অনুসারীরা বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল। আমি ধারণা করছি বিষয়টি তারই বহিঃপ্রকাশ। এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন,‘সাংবাদিক সমিতির অফিস ভাঙচুরে ঘটনায় আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং মৌখিক অভিযোগ শুনেছি। পাশাপাশি ঘটনাস্থলের ভাঙচুরের আলামতও দেখেছি। যেহেতু এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ ভাঙচুর করা হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি ভিসির সাথে বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কী পদক্ষেপ নিতে পারে সেটাও আমরা আলোচনা করবো।

উল্লেখ্য, এর আগে ২৯ মে সাংবাদিক সমিতির অর্থ সম্পাদক ও দৈনিক যায়যায় দিনের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি রুদ্র ইকবাল সংবাদ সংগ্রহকালে ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজা-ই-এলাহীর (২০১৭ সালে বিলুপ্ত কমিটি) অনুসারী হিসেবে পরিচিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাতে হেনস্তার শিকার হন।

এ সময় উপস্থিত সংবাদকর্মীদের উদ্দেশ করে রেজা-ই-এলাহী বলেন, সাংবাদিকরা এখনো আমাকে চিনে না, আমি কে? ‘এই ক্যাম্পাস কারো বাপের না। সাংবাদিকরা আমাদের কী করবে, দেখে নেবো। গুন্ডামির কি দেখছে।’ এছাড়াও চলতি পথে ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সাংবাদিকদের বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছে।

এর মধ্যে অর্থনীতি বিভাগের ১৪তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এস কে মাছুম বলেন, ‘এখন থেকে ডিরেক্ট অ্যাকশন হবে।’

লোকপ্রশাসন বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘সাংবাদিকদের এক এক করে ধরে কালার পাল্টে লাল করে দিবো, এরা দেশ ও জাতির শত্রু।’