২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ফেনীতে ৬ মাদরাসার ভবন নির্মাণ ৪ বছরেও শেষ হয়নি

ফেনীতে ৬ মাদরাসার ভবন নির্মাণ ৪ বছরেও শেষ হয়নি। - ছবি : নয়া দিগন্ত

ফেনী সদর উপজেলায় ২০১৮ সালে শুরু হওয়া ছয়টি নতুন ভবনের নির্মাণকাজ চার বছরেও শেষ হয়নি। এসব ভবন নির্মাণে দুই বছর কার্যাদেশের মেয়াদ ২০২০ সালেই শেষ হয়েছে।

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর আর ঠিকাদারদের সমন্বয়হীনতার কারণে দীর্ঘ দিন ঝুলে আছে সরকারের শিক্ষাবিভাগের বিশেষ এ প্রকল্প। এর ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদানসহ সামগ্রিক ব্যবস্থাপনায় গতিশীলতা কমছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার তৃতীয় মেয়াদে দায়িত্বগ্রহণের পর ফেনী সদর আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী এ প্রকল্পের আওতায় জেলা সদরে ছয়টি মাদরাসায় চারতলা বিশিষ্ট নতুন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেন। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর এ প্রকল্প বাস্তবায়নে তদারকির দায়িত্বে রয়েছে। প্রকল্পের আওতায় রয়েছে ফেনী আলিয়া কামিল মাদরাসা, আফতাববিবি ফাজিল মাদরাসা, বিরিঞ্চি ছুফিয়া নুরিয়া আলিম মাদরাসা, ছনুয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা, চরকালিদাস ছোবহানিয়া দাখিল মাদরাসা ও লক্ষ্মীপুর বায়তুল আমিন ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা। প্রতিটি ভবন নির্মাণে প্রাক্কলিত ব্যয় তিন কোটি ২৬ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, ছনুয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার একটি কক্ষে সেন্টারিং-সামগ্রী রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে নির্মাণাধীন চারতলা ভবনের ২০২১ সালের মধ্যে তিন তলার ছাদ ঢালাই দেয়া হয়। এরপর কাজ বন্ধ রয়েছে কয়েক মাস। বিকেলে বিরিঞ্চি ছুফিয়া নুরিয়া মাদরাসায় দু’জন শ্রমিককে কাজ করতে দেখা গেছে।

লক্ষ্মীপুর বায়তুল আমিন ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার সুপার জসিম উদ্দিন জানান, নতুন ভবনের কাজ চলমান রয়েছে। কবে নাগাদ বুঝে পাবেন তা তার জানা নেই। এ বিষয়ে শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ ও ঠিকাদাররা তাকে কিছু জানায়নি।

এ দু’টি প্রতিষ্ঠান নির্মাণের দায়িত্বে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আবির-আইমন এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী মো: আনোয়ার হোসেন জানান, নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় কার্যাদেশের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে একাধিক ঠিকাদার জানিয়েছেন, মাদরাসা ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে বরাদ্দকৃত টাকা ছাড় দিতে শিক্ষা প্রকৌশল কর্তৃপক্ষ গাফিলতি করেছে। এর ফলে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করা খুবই কঠিন।

বিরিঞ্চি ছুফিয়া নুরিয়া আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ মু. ইয়াছিন জানান, কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। দরজা-জানালা, টাইলস লাগানো বাকি রয়েছে। মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়েছে। কাজের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে বলে ঠিকাদার জানিয়েছে।

ফেনী আলিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মাহমুদুল হাসান জানান, দীর্ঘ দিন ধরে ভবনের কাজ চলমান রয়েছে। যার ফলে এখনো ওই ভবনে পাঠদানের পরিকল্পনা করা হয়নি।

দীর্ঘ দিনেও ভবনের কাজ শেষ না হওয়ায় ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শুসেন চন্দ্র শীল। বৃহস্পতিবার উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় বিষয়টি উত্থাপন করে শিক্ষা প্রকৌশল কর্মকর্তার উদ্দেশে বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ার জন্য শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ ও ঠিকাদারদের সমন্বয়হীনতা দায়ী। ফেনী সদর ও পৌরসভা এলাকা নিজাম উদ্দিন হাজারী এমপির নির্বাচনী এলাকা। আগামী নির্বাচনের আগে ভবন নির্মাণকাজ শেষ করে প্রতিষ্ঠানকে বুঝিয়ে দেয়া জরুরি।

এ সময় বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার আহ্বান জানান আহবান জানান সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান।

ওই সভায় উপস্থিত শিক্ষা প্রকৌশলের সদর উপজেলার দায়িত্বে নিয়োজিত উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো: আজাদ বলেন, সবগুলো ভবনের কাজই চলমান রয়েছে। ধীর গতির বিষয়টি ঊর্ধ্বতনরা অবহিত রয়েছেন।

ফেনী শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী ইশরাত নুসরাত সিদ্দিকা বলেন, কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় নিয়মানুযায়ী কার্যাদেশের সময় বাড়ানো হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে ঠিকাদারদের তাগিদ দেয়া হচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement