২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ক্যাম্পে গিয়ে রোহিঙ্গা নিপীড়নের কাহিনী শুনলেন বেলজিয়ামের রানি

ক্যাম্পে গিয়ে রোহিঙ্গা নিপীড়নের কাহিনী শুনলেন বেলজিয়ামের রানি - ছবি : নয়া দিগন্ত

বাংলাদেশ সফরের দ্বিতীয় দিন ক্যাম্পে গিয়ে রোহিঙ্গা নিপীড়নের কাহিনী শুনেছেন বেলজিয়ামের রানি মাথিলডে ম্যারি ক্রিস্টিন। তিনি ছয় ঘণ্টা ঘুরে রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন।

পরিদর্শন শেষে মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টায় কক্সবাজার ত্যাগ করেন তিনি। এর আগে সকাল ১০টায় একটি ফ্লাইটে তিনি কক্সবাজার পৌঁছেন।

বিমানবন্দরে রানিকে স্বাগত ও বিদায় জানান কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ শাহীন ইমরান, পুলিশ সুপার মো: মাহফুজুল ইসলামসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

বিমানবন্দর থেকে সড়ক পথে রওয়ানা দিয়ে বেলা ১১টায় কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৌঁছেন রানি। সেখানে প্রথমে তিন নম্বর ক্যাম্পে রোহিঙ্গা শিশুদের একটি লার্নিং সেন্টারে তাদের শিক্ষাদান পদ্ধতি দেখেন। এ সময় সেন্টারের রোহিঙ্গা শিশু ও নারীদের সাথে কথা বলেন তিনি। এরপর চার নম্বর ক্যাম্পে বৃক্ষের চারা রোপণ করেন।

ক্যাম্পে জাতিসঙ্ঘের কার্যক্রমগুলো ঘুরে দেখেন রানি। ক্যাম্পের ভেতর নারীদের পরিচালিত মার্কেট পরিদর্শনকালে তাদের সাথে কথাও বলেন তিনি।

এরপর আরেকটি ওমেন সেন্টার পরিদর্শন করেন। পরে সেখানে থাকা রোহিঙ্গারা ২০১৭ সালে তাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অত্যাচার ও নির্যাতনের বিষয়টি রানীর কাছে উপস্থাপন করেন। বিভিন্ন সেন্টার, হলিচাইল্ড লার্নিং সেন্টার, উইমেন মার্কেট পরিদর্শন শেষে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা নারীদের সাথে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়েও কথা বলেন রানি।

দুপুরের মধ্যাহ্নভোজের পর রানি ক্যাম্পের ভেতরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট পরিদর্শন শেষে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলেন।

এরপর বিকেল সোয়া ৪টায় ক্যাম্প থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওয়ানা দিয়ে সোয়া ৫টায় বিমানবন্দরে পৌঁছেন। সন্ধ্যা ৬টার বিমানে তিনি কক্সবাজার ত্যাগ করেন।

এ সময় রানি মাথিলডের সাথে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, তথ্য মন্ত্রণালয়সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মাদ মিজানুর রহমান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সফরে আসা বেলজিয়ামের কোনো রানির এই সফরে বিশেষ গুরুত্ব পায় মানবিক সহায়তা। তারই অংশ হিসেবে বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী শিবির পরিদর্শনে যান তিনি। যেখানে অবস্থান করছে সাড়ে ১২ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা।

বেলজিয়ামের রানির আগমনকে কেন্দ্র করে পর্যটন নগরী কক্সবাজার ও রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। পুরো ক্যাম্প এলাকায় পুলিশ, এবিপিএন সদস্য ছাড়াও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের ব্যাপক তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়। বিভিন্ন পয়েন্টে বিপুল সংখ্যক র‌্যাব ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

উল্লেখ্য, সোমবার সকালে এক বিশেষ বিমানে বেলজিয়ামের রানি ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবুল মোমেন, তথ্যমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ তাকে স্বাগত জানান। তিনি জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) দূত হিসেবে বাংলাদেশ সফরে এসেছেন।


আরো সংবাদ



premium cement