২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

পাইকারি লবণের মূল্য কমে প্রতিমণ ৩৫০ টাকায় দাঁড়িয়েছে

পাইকারি লবণের মূল্য কমে প্রতিমণ ৩৫০ টাকায় দাঁড়িয়েছে - ছবি : নয়া দিগন্ত

গত ১৫ দিনের ব্যবধানে পাইকারি লবণের মূল্য কমে ৩৫০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। একই লবণ গত ১৫ দিন আগে প্রতিমণ বিক্রি হয়েছে প্রকারভেদে ৪৭০ টাকার ওপরে।

এ দিকে গতকাল পর্যন্ত চলতি মৌসুমে লবণ উৎপাদন হয়েছে চার লাখ ৯ হাজার ৬৯৪ টন। একই সময়ে গত মৌসুমে উৎপাদন হয়েছিল মাত্র ১ লাখ ৩০ হাজার টন। ওই হিসেবে গতকাল পর্যন্ত দেশে লবণ উৎপাদন হয়েছে প্রায় চার গুণ বেশি।

এ দিকে হঠাৎ করে পাইকারি লবণের দাম কমে যাওয়ায় চিন্তিত হয়ে পড়েছেন উপকূলের চাষিরা।

এ দিকে ফেব্রুয়ারির শুরুতে দেশের কক্সবাজার জেলা ও চট্টগ্রামের বাঁশখালী এবং পটিয়া উপজেলায় লবণ উৎপাদন বেড়েছে। প্রতি বছর লবণ উৎপাদন বেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে পাইকারি লবণের দামও কমতে থাকে।

এটিকে একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া বললেন বিসিক লবণ প্রকল্পের জেনারেল ম্যানেজার জাফর ইকবাল ভূঁইয়া ও বাংলাদেশ লবণ মিল মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব নূরুল কবির চৌধুরী।

মাঠ পর্যায়ে লবণের দাম কমে গেলেও মিল মালিকরা গতকাল পর্যন্ত পাইকারি লবণ ক্রয় করেছেন প্রকারভেদে প্রতি (দুই মণ) ৯৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ৩০ টাকা পর্যন্ত।

বাঁশখালী উপজেলার সনুয়া গ্রামের লবণ চাষী মো: বেলাল হোসেন জানান, গতকাল তারা প্রতিমণ লবণ পাইকারি বিক্রি করেছেন ধোলাই খরচ ৩০ টাকাসহ ৩৮০ টাকা। একই জায়গায় একই লবণ পাইকারি লবণ ব্যবসায়ীরা ক্রয় করেছেন ধোলাই খরচসহ ৩৯০ টাকা।

বিষয়টি জানতে চাইলে পাইকারি লবণ ব্যবসায়ী বদিউল আলম জানান, দালালদের জন্য পাইকারি লবণ বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে।

বিসিক লবণ প্রকল্পের জেনারেল ম্যানেজার জাফর ইকবাল ভূঁইয়ার সাথে গতকাল রাতে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, লবণের মূল্য নিয়ে চাষিদের হতাশার কোনো কারণ নেই। স্বাভাবিক প্রক্রিয়াতেই লবণের উৎপাদন যখন বেড়ে যায় তখন মাঠপর্যাযয়ে পাইকারি লবণের দাম কিছুটা কমে যায়।

তিনি আরো বলেন, গতকাল ধোলাই খরচ বাদ দিয়ে প্রতিমণ বিক্রি হয়েছে ৩৭০ টাকা। গত মৌসুমে একই সময়ে পাইকারি লবণ বিক্রি হয়েছিল ৩৫০ টাকা করে।

জানা গেছে, চলতি অর্থবছরে ২৪ লাখ ৮৩ হাজার টন লবণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যদিকে গত ২০২১-২২ অর্থবছরে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের ৭৫ মৌজায় ৬৩ হাজার ২৯১ একর লবণ মাঠে ৩৭ হাজার ২৩১ জন চাষি লবণ উৎপাদনে নিয়োজিত ছিলেন। দেশে বর্তমানে গড়ে প্রতি মাসে লবণের চাহিদা প্রায় পৌনে দুই লাখ টন।

বিসিকের লবণ প্রকল্পের জেনারেল ম্যানেজার জাফর ইকবাল ভূঁইয়া বলেন, সরকার লবণ শিল্প ও চাষিদের স্বার্থ রক্ষায় বিদেশ থেকে লবণ আমদানির হার ৩২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৮৯ শতাংশ করেছে। এছাড়া চলতি বছর বিসিকের উদ্যোগে নামমাত্র সুদে ৫০ হাজার টাকা ঋণ সুবিধা দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া চাষিরা রেয়াতি সুদে এক লাখ ৫৩ হাজার টাকার কৃষি ঋণ সুবিধাও পাচ্ছেন। আর এসব কারণে এবার লবণ বেশি পাচ্ছেন চাষীরা।

জানা গেছে, প্রতি বছর ১৫ নভেম্বর থেকে পরের বছরের ১৫ মে পর্যন্ত লবণ উৎপাদন মৌসুম ধরা হয়। সাধারণত লবণ উৎপাদন মৌসুম শুরু হওয়ার পরে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গড়ে সাত থেকে আট হাজার টন লবণ উৎপাদন হয়ে আসছে। কিন্তু মার্চ থেকে মৌসুমের শেষ পর্যন্ত রোদের প্রখরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় উৎপাদন বহুগুণে বেড়ে যায়।

লবণ প্রকল্পের জেনারেল ম্যানেজার জাফর ইকবাল ভূঁইয়া বলেন, চলতি মৌসুমে লবণ উৎপাদন মৌসুম পর্যন্ত আবহাওয়া ভালো থাকলে লক্ষ্যমাত্রার লবণ উৎপাদন ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা করছেন তিনি।


আরো সংবাদ



premium cement