২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ছাত্রদল নেতা নয়নের কবরে যিয়ারতে বাধা, দুপক্ষের সংঘর্ষ

নিহত ছাত্রদল নেতা। - ছবি : সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত ছাত্রদল নেতা নয়ন মিয়ার কবর জিয়ারতকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: শাহীনসহ তার লোকজনের সাথে গ্রামবাসীর সংঘর্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন।

শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়নের চর-শিবপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্র, বিএনপির নেতাকর্মী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শনিবার বেলা ১১টার দিকে ছাত্রদল নেতা নয়ন মিয়ার কবর জিয়ারত ও তার পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিতে উপজেলার চরশিবপুর গ্রামের দিকে রওয়ানা হন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ সময় বিএনপির নেতা ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসংসদের সাবেক ভিপি সায়দুজ্জামান কামাল, বিএনপির সাবেক মহাসচিব খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের বড় ছেলে অধ্যাপক খন্দকার আকবর হোসেন বাবলুসহ ছাত্রদল, যুবদল ও বিএনপির অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। দুপুর ১২টার দিকে বিএনপির নেতাকর্মীরা উপজেলার দশানি নৌঘাট অতিক্রম করে চরশিবপুর ঘাটে পৌঁছলে সেখানে আগে থেকে উপস্থিত থাকা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মো: শাহিন এবং তার লোকজন বিএনপির নেতাকর্মীদের বাঁধা দেন। বিএনপির নেতাকর্মীরা বাঁধা অতিক্রম করে চরশিবপুর গ্রামে গিয়ে নয়নের কবর জিয়ারত করেন।

তারা আরো জানান, এ সময় বাধা দেয়ার বিষয়টি জানতে পেরে চরশিবপুর গ্রামের লোকজন মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জড়ো হন। পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গ্রামবাসীর সাথে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো: শাহিন ও তার লোকজনের সংঘর্ষ বাঁধে। এতে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

আহতরা হলেন, সোনারামপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য মনির হোসেন, ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মিজানুর রহমান, ইউনিয়ন যুবলীগের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি আইন উদ্দিন ভূঁইয়া, ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ওরফে আয়নাল (৪৫), যুবলীগ কর্মী জয়নাল মিয়া (৪৫), স্থানীয় বাসিন্দা আমির উদ্দিন (১৮), ফয়জন আলী (২৩), জাহিদুল হাসান (২২), রাসেল মিয়া (৩২)।

তাদেরকে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে মনির, জয়নাল ও আনোয়ারকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে বাঞ্ছারামপুর পৌর যুবদলের আহ্বায়ক ইমান হোসেন বলেন, পুলিশের গুলিতে নিহত ছাত্রদল নেতা নয়নের কবর জিয়ারত ও তার পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতার উদ্দেশ্যে চরশিবপুর গ্রামে যাওয়ার পথে আমরা নৌকাঘাট পার হতেই সোনারামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: শাহিন ও তার লোকজন আমাদের বাধা দেন। আমরা বাধা অতিক্রম করে করব জিয়ারত করি। এ সময় গ্রামের লোকজন মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে চেয়ারম্যান ও তার লোকজনের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
এ ব্যাপারে সোনারামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: শাহিন বলেন, লোকজন নিয়ে ঘাটে বসে সভা করেছিলাম। গ্রামের লোকজন ভেতর থেকে আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমরা বিএনপির নেতাকর্মীদের বাধা দেইনি।

এ ব্যাপারে বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে বলেন, আহত দুজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। গ্রামের লোকজনের সাথে চেয়ারম্যানের দ্বন্দ্বের জের ধরে এই ঘটনা ঘটেছে।

উল্লেখ্য, গত ১৯ নভেম্বর বিকেলে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা সদরে পুলিশের সাথে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের সময় সোনারামপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহ-সভাপতি নয়ন (২৬) নিহত হন।


আরো সংবাদ



premium cement