২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বছরের লবণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২৪ লাখ ৮৩ হাজার টন

বছরের লবণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২৪ লাখ ৮৩ হাজার টন - ছবি : নয়া দিগন্ত

চলতি অর্থবছরে ২৪ লাখ ৮৩ হাজার টন লবণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ১৫ নভেম্বর থেকে চলতি অর্ধবছরে লবণ উৎপাদনে মাঠে নামছেন চাষিরা। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত মাঠে অপরিশোধিত প্রায় এক লাখ টন এবং মিল মালিকদের কাছে আরো এক লাখ থেকে এক লাখ ২০ হাজার টন লবণ রয়েছে। দেশে বর্তমানে গড়ে প্রতি মাসে লবণের চাহিদা প্রায় পৌনে দুই লাখ টন। এ কারণে লবণ মৌসুম শুরু হওয়া পর্যন্ত দেশে লবণের কোনো ঘাটতি হবে না বলে মনে করেন বিসিকের লবণ প্রকল্পের জেনারেল ম্যানেজার জাফর ইকবাল ভূইয়া।

জানা গেছে, সরকার বিদেশ থেকে লবণ শিল্প ও চাষিদের স্বার্থ রক্ষায় বিদেশ থেকে লবণ আমদানীর শুল্কহার ৩২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৮৯ শতাংশ করেন। এছাড়া চলতি বছর বিসিকের উদ্যোগে নামমাত্র সুদে ৫০ হাজার টাকা ঋণ সুবিধা করা হয়েছে। চাষিরা রেয়াতি সুদে এক লাখ ৫৩ হাজার টাকা কৃষি ঋণ সুবিধাও পাবেন। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত সকল তফসিলি ব্যাংকে এ উদ্যোগ গ্রহণেরর নির্দেশ দিয়েছেন। অন্যদিকে এখন থেকে বিনা বাধায় মাঠ পর্যায় সকল চাষীদের মাঠে পাম্প মেশিনের বিদ্যুতের সংযোগ দেয়ার কার্যক্রম হাতে নিয়েছেন পল্লী বিদ্যুত সমিতি। এসব কারণে এবার চলতি ২২-২৩ অর্ধবছরে লবণ চাষের জমির পরিমান ও লবণ চাষীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার আশা করছেন জাফর ইকবাল ভূইয়া।

গত ২০২১-২২ অর্থ বছরে চটগ্রাম ও কক্সবাজারের ৬৩ হাজার ২৯১ একর লবণ মাঠে ৩৭ হাজার ২৩১ জন চাষী লবণ উৎপাদনে নিয়োজিত থাকলেও বরি আবহাওয়ার কারণে ২৩ লাখ ৩৫ হাজার টন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে উৎপাদন হয়েছে ১৮ লাখ ৩২ হাজার। যা দেশের লবণ উৎপাদনের সর্বোচ্চ উৎপাদন রেকর্ড। এরপরেও প্রায় পাঁচ লাখ টন লবণের ঘাটতি নিয়ে শেষ হয় গত মৌসুমের লবণ উৎপাদন।

এ কারণে সরকার মাত্র দেড় লাখ টন লবণ বিদেশ থেকে আমদানির নিদের্শ দেন। যার ফলে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশে খুচরা লবণ স্থির রয়েছে।

মিলমালিক সমিতির সভাপতি নুরুল কবির বলেন, লবণ আমদানির সিদ্ধান্তটি সঠিক ছিল। তবে এখনো সব লবণ আমদানি হয়নি তবে যথা সময়ে অবশিষ্ট ৩০ থেকে ৪০ হাজার টন আমদানি করা শেষ হবে বলে তিনি জানান।

বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) পাইকারি প্রতিমন লবণ বিক্রি হয়েছে সাড়ে ৪০০ টাকা। গড়ে প্রতিমণ লবণে ধোলাই খরচ ৩০ টাকা বাদ দিয়ে প্রতিমণ লবণ বিক্রি করে ৪২০ টাকা পেয়েছেন চাষিরা। অন্যদিকে লবণ উৎপাদনের গড় খরচ ২৫০ টাকা বাদ দিলে প্রতিমণ লবণ বিক্রি করে গতকাল পর্যন্ত চাষিরা হাতে লাভ পেয়েছেন প্রতিমণে ১৭০ টাকা। এ কারণে উপকূলের লবণ চাষিরা এখন বেজায় খুশী।

বাঁশখালীর পাইকারি লবণ ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন বলেন, বৃহস্পতিবার গড়ে ধোলাই খরচসহ সাড়ে ৪০০ টাকা করে পাইকারি প্রতিমণ লবণ ক্রয় করেছি।

মাঝিরঘাটে লবণ মিল মালিকগণ প্রতিমণ লবণ ক্রয় করেছেন ৫২০ টাকা থেকে ৫৬০ টাকা করে। বাংলাদেশ লবণ মিল মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব নুরুল কবির বিকেলে দৈনিক নয়া দিগন্তকে ওই দামে লবণ ক্রয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এ ক্রয়-বিক্রয়ের দামের পার্থক্য থেকেই বুঝা যায় মধ্যস্বত্বভোগীরা এখনো মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। সে কারণে চাষিরা পাইকারি লবণের মূল্য সরকারিভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের দাবি জানিয়ে আসছেন।

মালিক সমিতির সভাপতি বলেন, সরকার লবণ শিল্প রক্ষা বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ায় চাষিরা লাভবান হচ্ছে। লবণ আমদানির শুল্কহার বৃদ্ধি করায় আজকে চাষিরা লবণের দাম পাচ্ছেন।

তিনি আরো বলেন, শুল্কহার আরো বৃদ্ধি করা প্রয়োজন কেননা লবনের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় নানা অজুহাতে মিস ডিকলারেশন দিয়ে লবণ দেশে আসা এখনো অব্যাহত রয়েছে। সে কারণে তিনি মনে করেন লবণ আমদানির উপরে আরো শুল্কহার বৃদ্ধি করলে প্রকৃত চাষী ও লবণ মিলমালিক ও লবণ ব্যসায়ীরা আরো লাভবান হবেন।


আরো সংবাদ



premium cement