২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`
মিরসরাইয়ে ট্রিপল মার্ডার

একসাথে ৩ জনের জানাজা পড়লো এলাকাবাসী

একসাথে তিনজনের জানাজা পড়লো এলাকাবাসী - ছবি - নয়া দিগন্ত

মিরসরাইয়ের আলোচিত ট্রিপল মার্ডারের মোঃ মোস্তফা প্রকাশ মোস্তফা সওদাগর (৫৬), স্ত্রী জোসনা আরা (৪৫) ও মেজো ছেলে আহমেদ হোসেনের (২৫) জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার রাত ৮টা ৪০ মিনিটে উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়েনের মধ্যম সোনাপাহাড় গ্রামে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে থেকে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ গ্রামে এসে পৌঁছে।

গতকাল বিকেল থেকে আকাশ ছিলো মেঘাচ্ছন্ন। সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত যখন ৮টা তখন জানাযার পূর্ব মুহূর্তে বিদ্যুৎ চমকানির সাথে ছিলো মুষলধারে বৃষ্টি। তিনটি খাটিয়ায় মা, বাবা আর ছেলের লাশ রাখার পর সোনাপাহাড়ের আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠেছিলো। নিহত মোঃ মোস্তফা প্রকাশ ও তার ছেলে আহমদ হোসেন স্থানীয় সোনাপাহাড় গ্রামের জোরারগঞ্জ বাজারে মুদি দোকান করতেন। এলাকায় সর্বমহলে পরিচিত ছিলেন তারা। এমন নৃশংস ঘটনায় নিহতদের জানাযায় উপস্থিত সবার একটাই দাবি ছিলো, ঘাতক সাদেক হোসেনের যেন সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হয়। বৃষ্টি উপেক্ষা করে জানাযায় হাজারো মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

সোনাপাহাড় গ্রামের বাসিন্দা জহিরুল হক বলেন, আমার বয়সে এক সাথে তিনজনের জানাযা আর পড়িনি। আমাদের গ্রামেও তিনজনের জানাযা একসাথে অনুষ্ঠিত হয়নি। তাও আবার একই পরিবারের। সামান্য সম্পত্তির জন্য আপন ছেলের হাতে মা, বাবা আর ভাইকে গলা কেটে নৃশংসভাবে হত্যা ইতিহাসে বিরল। আমরা ঘাতকের ফাঁসি চাই।

উল্লেখ্য, বুধবার (১৩ অক্টোবর) দিবাগত রাত ৩টায় জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মধ্যম সোনাপাহাড় গ্রামের মোস্তফা সওদাগরের বাড়িতে মোঃ মোস্তফা মিয়া (৫৬), তার স্ত্রী জোসনা আরা (৪৫) এবং তাদের ছেলে আহম্মদ হোসেনকে (২৫) গলা কেটে হত্যা করে বড় ছেলে সাদেক হোসেন। বসত বাড়িত ১২ শতক জমির মধ্যে ৪ শতক জমি মেজ ভাই আহমদ হোসেনকে রেজিষ্ট্রি করে দেয়ায় বাবা মোস্তফা ও মা জোসনা আরার সাথে ঝগড়া হতো সাদেক হোসেনের। এছাড়া তার স্ত্রী আইনুর নাহারকেও বিভিন্নভাবে নির্যাতন করা নিয়ে মা, বাবা আর ভাইয়ের প্রতি ক্ষোভ ছিলো সাদেকের। তাই সে হত্যাকাণ্ডের মতো এমন ন্যাঙ্কারজনক ঘটনা ঘটায়। আগামী ২৫ অক্টোবর আহমদ হোসেনের বিয়ে হওয়ার কথা ছিলো। এ ঘটনায় বড় ভাই সাদেক হোসেনকে আসামি করে জোরারগঞ্জ থানায় মামলা করেছে ছোট বোন জুলেখা। হত্যা মামলায় সাদেক হোসেনকে আদালতে পাঠানোর পর শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি ১৬৪ ধারায় হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে স্বীকারোক্তি দেন।


আরো সংবাদ



premium cement