২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`

প্রকাশ্যে বন্দুক হাতে লোহাগাড়া উপজেলা চেয়ারম্যানের ভিডিও ভাইরাল

প্রকাশ্যে বন্দুক হাতে লোহাগাড়া উপজেলা চেয়ারম্যানের ভিডিও ভাইরাল - নয়া দিগন্ত

লোহাগাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান জিয়াউল হক চৌধুরী বাবুলের প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। বুধবার বিকেলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ৪ মিনিট ৫৩ সেকেন্ডের এ ভিডিও ভাইরাল হলে এলাকায় সমালোচনার ঝড় ওঠে।

একজন জনপ্রতিনিধির হাতে এভাবে প্রকাশ্যে দিনদুপুরে অস্ত্র হাতে নিয়ে জমি দখলের ভিডিও দেখে এলাকায় নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। তবে উপজেলা চেয়ারম্যান বলছেন, এটি তার লাইসেন্স করা অস্ত্র। এটি তার নিরাপত্তার জন্য তার সাথে থাকে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, উপজেলার বটতলী মোটর স্টেশনের মা মণি হাসপাতাল এলাকার মাহমুদুল হকের সাথে দীর্ঘ দিন ধরে জমিজমা সংক্রান্ত্র বিরোধ চলে আসছিল উপজেলা চেয়ারম্যানের। আজ দলবল, অস্ত্র ও লাঠিসোঠা নিয়ে সেই জমি দখল করতে যান উপজেলা চেয়ারম্যান। এমনটাই অভিযোগ প্রতিপক্ষের।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, বুধবার উপজেলা চেয়ারম্যান জিয়াউল হক চৌধুরী বাবুলের লোকজন বিরোধীয় জায়গায় গেইট স্থাপনের কাজ করতে গেলে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। কিছুক্ষণ পর উপজেলা চেয়ারম্যান লোকজন নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এ সময় চেয়ারম্যান সাথে কয়েকজকে অস্ত্রশস্ত্র হাতে নিয়ে ঘুরতে দেখা গেছে। অস্ত্রধারীরা প্রতিপক্ষকের বসতবাড়ি লক্ষ্য করে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে। কয়েকজনকে ইটপাটকেল ছুড়তেও দেখা গেছে ভিডিওতে। একপর্যায়ে উপজেলা চেয়ারম্যান জিয়াউল হক চৌধুরী বাবুল নিজে অস্ত্র হাতে তুলে নেন এবং তাতে গুলি ভরতে দেখা যায়।

প্রতিপক্ষ মাহমুদুল হকের ছেলে সিরাজুল হক বলেন, দীর্ঘ দিন যাবত উপজেলা চেয়ারম্যানের সাথে আমাদের বসতভিটার সাথে লাগোয়া জায়গাজমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। বুধবার বিকেলে বিরোধীয় জায়গায় গেইট লাগানোকে কেন্দ্র করে উপজেলা চেয়ারম্যান কয়েকজন স্বশস্ত্র যুবকসহ শতাধিক লোকজন নিয়ে উপস্থিত হন। এ সময় তারা আমাদের অবস্থান লক্ষ্য করে বেশকয়েক রাউন্ড গুলি করে ও ইট ছুড়ে মারে।

লোহাগাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান জিয়াউল হক চৌধুরী বাবুল বলেন, জায়গাটা আমি এস আলম গ্রুপকে বিক্রি করেছি। জায়গাটাতে বাউন্ডারী দিতে গেলে মাহমুদুল হক গং কিরিচ নিয়ে আমাদের আক্রমণ করতে এলে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা তাদের ধাওয়া দেয়। জনসম্মুখে প্রদর্শন করা অস্ত্রটা লাইসেন্স করা। এটি তার নিরাপত্তার জন্য তার সাথে থাকে বলে তিনি জানান।

সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকারিয়া রহমান জিকু বলেন, এস আলম গ্রুপের কাছে লোহাগাড়া উপজেলা চেয়ারম্যানের বিক্রি করা জায়গার সামনে গেইট নির্মাণ করতে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন বাধা দেয়। জায়গাটা বিরোধপূর্ণ ছিল। ফলে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে ঘটনাস্থলে লোহাগাড়া থানা পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। লাইসেন্স করা অস্ত্র জনসম্মুখে প্রদর্শন করে ভীতির সঞ্চার কিংবা জমি দখলের কাজে ব্যবহার করা যাবে না। সার্বিক বিষয়টি পুলিশ নিবিড়ভাবে তদন্ত করছে বলে তিনি জানান।

যোগাযোগ করা হলে লোহাগাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ জাকির হোসাইন মাহমুদ বলেন, জায়গা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে উপজেলা চেয়ারম্যান ও স্থানীয় মাহমুদুল হকের সাথে তর্কাতর্কি হয়েছে বলে শুনেছি। খবর পাওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।


আরো সংবাদ



premium cement