নোয়াখালীতে ৫ কিশোরকে বেঁধে নির্যাতনের দায়ে ৫ মাতব্বর গ্রেফতার
- নোয়াখালী অফিস
- ১৭ মে ২০২১, ১৯:৩১
নোয়াখালীর হাতিয়াতে বিন্দি জাল চুরির অভিযোগে পাঁচ কিশোরকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের নির্দেশের অফিযোগে পাঁচ মাতব্বরকে গেফতার করে কারাগারে পাটিয়েছে পুলিশ।
নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর তাদের গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত মাতব্বররা হলেন শুল্লকিয়া গ্রামের জেলে পাড়ার মাতব্বর শ্রীহরি জলদাস, নেপাল চন্দ জলদাস, বিধান চন্দ জলদাস, রায় মেহেন জলদাস ও প্রিয় লাল জলদাস।
সোমবার বিকেলে হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: আবুল খায়ের এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় রোববার রাতে নির্যাতনের শিকার কিশোর পদ দাসের বাবা হরিপদ দাস ছয় জনকে আসামি করে হাতিয়া থানায় মামলা করেন। এখন পর্যন্ত ওই মামলার পাঁচ আসামিকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে রোববার সকাল ১১টার দিকে উপজেলার চরকিং ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ শুল্লকিয়া গ্রামের জেলেপাড়ার গ্রাম্য সালিশে কিশোর জেলেদেরকে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের শিকার কিশোরর হলো উপজেলার চরকিং ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ শুল্লকিয়া গ্রামের জেলেপাড়ার বাসিন্দা সহদেব (১৫), কিরণ (১৫), শিশুপদ (১৬), সমূল্য (১৫) ও রতন (১৬)।
ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নির্যাতনের ভিডিও ফেইসবুকে ভাইরাল হলে জেলা পুলিশ প্রশাসনের টনক নড়ে। পরে জেলার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে হাতিয়া থানা পুলিশ এ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করে।
ভিডিওতে দেখা যায়, স্থানীয় জেলে পাড়ার নারী-পুরুষের সামনে পাঁচ কিশোরকে লাঠিপেটা করা হচ্ছে। এই সময় ওই পাঁচ কিশোর ও তাদের পরিবারের নারী সদস্যরা আহাজারি করে তাদের ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ করে। এ দৃশ্য দেখে কান্নারত নারীরা এগিয়ে এলে তাদেরও ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়া হয়।
চরকিং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহাম্মেদ জানান, গত কয়েক দিন আগে পাঁচ কিশোর মিলে এক জেলের একটি বিন্দি জাল চুরি করে পাশের সোনাদিয়া ইউনিয়নের এক জেলের কাছে বিক্রি করে দেয়। পরে ওই জাল উদ্ধার করে শনিবার বিকেলে মালিককে ফিরিয়ে দেয়া হয়। এরপর এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রোববার সকালে জেলে পাড়ার মাতব্বর শ্রীহরি দলদাস, নেপাল চন্দ জলদাস, প্রিয় লাল জলদাস, বিধান চন্দ জলদাস, রায় মেহেন জলদাসের নেতৃত্বে একটি সালিশী বৈঠক বসে। বৈঠকের একপর্যায়ে জেলে পাড়ার পাঁচ মাতব্বর অভিযুক্তদের একজনকে ১০ বেত্রাঘাত করার আদেশ দেন এবং প্রত্যেকের দুই হাজার টাকা করে দশ হাজার টাকা জরিমানা করেন। পরে জেলে পাড়ার মাতব্বরদের নির্দেশে পাঁচ কিশোরকে বেঁধে প্রকাশ্যে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটান চৌকিদার আমির হোসেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা