২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

কাদের মির্জার আইসোলেশন সেন্টার স্থাপনে ইউএনও ও ওসির বিরুদ্ধে বাধার অভিযোগ

কাদের মির্জার আইসোলেশন সেন্টার স্থাপনে ইউএনও ও ওসির বিরুদ্ধে বাধার অভিযোগ - ছবি : সংগৃহীত

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভার মেয়র, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ভাই আবদুল কাদের মির্জার আইসোলেশন সেন্টার স্থাপনে ইউএনও ও ওসির বিরুদ্ধে বাধার অভিযোগ এনে তাদের প্রত্যাহার দাবি করেছেন।

সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় বসুরহাট পৌরসভার প্যাডে আবদুল কাদের মির্জা গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি করেন।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে কাদের মির্জা উল্লেখ করেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পওয়ায় সরকারঘোষিত এক সপ্তাহের লকডাউনের নির্দেশনা মোতাবেক রোববার মাইকযোগে ব্যাপক প্রচার করি। সোমবার সকাল বেলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আইসোলেন বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সাথে বিস্তারিত আলোচনা করি।

তিনি জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নতুন নির্মিত ভবন খালি আছে। উপস্থিত উপজেলা কমপ্লেক্সের ডাক্তার, পৌরসভা কাউন্সিলর ও গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গের মতামত অনুযায়ী উপজেলা কমপ্লেক্সের নতুন ভবনের তিন তলায় আইসোলেন সেন্টার স্থাপনের সিন্ধান্ত গৃহীত হয়। বসুরহাট পৌরসভার মাধ্যমে গঠিত আইসোলেশন সেন্টারের সার্বিক ব্যয় নির্বাহের এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সার্বিক তত্ত্বাবধানে আইসোলেশন সেন্টার পরিচালনার সিন্ধান্ত গৃহীত হয়।

তিনি বলেন, আমি বসুরহাট বাজার পরির্দশন করি। পরিদর্শনকালে কাঁচাবাজার ও মাছ ব্যবসায়ীদেরকে সামাজিক দুরুত্ব বজায় রেখে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসা করতে অনুরোধ করি। বিষয়টি তদারকির জন্য পৌরসভার দু’জন কাউন্সিলর ও কয়েকজন কর্মকর্তা কার্মচারীকে দায়িত্ব প্রদান করি। ইতোমধ্যে আমার দলীয় লোকজন উল্লেখিত বিষয়সমূহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে। উক্ত প্রচার দেখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে আইসোলেশন সেন্টার স্থাপনের বিষয়ে বাধা দেয়।

তারা কারণ হিসেবে জানান, নতুন কমপ্লেক্স এখোনে হস্তান্তর করা হয়নি। এরপর ওসি ও ইউএনও মাইক নিয়ে বসুরহাট বাজারের সবজী বিক্রেতা ও মাছ বিক্রেতাদেকে স্কুলমাঠে ঘুরে যেতে বলে।

এখানে উল্লেখ্য, গত বছর করোনার প্রথম ধাপে আমরা সবজি, মাছ ও গরুর বাজার স্কুল মাঠে নিয়েছিলাম। সকাল ১০টার আগে ব্যবসায়ীরা বাজারে চলে আসতো। এতে জনগনের কেনাকাটায় ভোগান্তি হতো। তবে ব্যবসায়ীরা এ বিষয়ে কারণ দেখান, মুদি দোকান বাজারের মধ্যে হওয়ায় লোকজন স্কুলমাঠে ও গরু বাজারে যেতে চায় না। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আমি স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও পৌরসভার তদারকীর মাধ্যমে বাজার পরিচালনার ব্যবস্থা নিয়েছিলাম।

আইসোলেশন সেন্টারের বিষয়টি আমি সিভিল সার্জন মহোদয়ের সাথে ও উচ্চ মহলে যোগাযোগ করি। সিভিল সার্জন মহোদয় জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আইসোলেশন সেন্টার করতে অসুবিধা নেই। অতঃপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা করোনা কমিটি গঠন করে জানায় আইসোলেশন সেন্টার উক্ত কমিটির মাধ্যমে পরিচালিত হবে। উক্ত কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সদস্য সচিব উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, পৌর মেয়র সদস্য। তাদের কর্মকাণ্ড জেনে আমি আইসোলেশন সেন্টার স্থাপনের বিষয়টি নিয়ে আর কোনো কথা বলি নাই।

কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও জেলা পরিষদ ডাকবাংলোতে আমার নির্মিত আইসোলেশন সেন্টার ভেঙ্গে অস্ত্রধারীদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। উপজেলা চত্বরে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের একত্র করে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বসুরহাট পৌরসভা কার্যলয়ে হামলা চালায়। এতে সন্ত্রাসীরা প্রায় দু’হাজার রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে। আইসোলেশন সেন্টারে ডাকবাংলোর কেয়ারটেকার সন্ত্রাসীদের থাকা-খাওয়ার বিষয়টি বাধা দিলে ইউএনও বলেছিল, তুমি বাড়ি চলে যাও।

কাদের মির্জা বলেন, আমি বর্ণিত কার্যক্রমের তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং ওসি’র (তদন্ত) প্রত্যাহার দাবি করছি।

কোম্পানীগঞ্জ ইউএনও জিয়াউল হক মীর বলেন, কারোনা মহামারী মোকাবিলায় ১০ সদস্যের কমিটি গঠন করে দেয়া হয়েছে। কমিটি সিন্ধান্ত নেবে কোথায় আইসোলেশন সেন্টার হবে। নতুন ভবন এখনো হস্তান্তর না হওয়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ওখানে আইসোলেশন সেন্টার স্থাপনে নিষেধ করেছেন।


আরো সংবাদ



premium cement