মেয়েকে দিয়ে অনৈতিক কাজ করান মা সহযোগী আ’লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান
- নোয়াখালী অফিস
- ০২ মার্চ ২০২১, ২০:৫৭
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আলাইয়াপুর ইউনিয়নে মাদরাসাছাত্রীকে গণধর্ষণ, ভিডিও ধারণ ও অপহরণের ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। ওই মামলার বাদি ভুক্তভোগীর মা বিউটি আক্তার, স্থানীয় আলাইয়াপুর ইউপি চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান ও মামলার স্বাক্ষী মোজাম্মেল হোসেনসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক পতিতাবৃত্তি করানোর অভিযোগে পুলিশ মামলা দায়ের করেছে।
মঙ্গলবার বিকেলে বেগমগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রুহুল আমিন এ মামলাটি দায়ের করেন।
বিউটি নিজের মেয়েকে (১৭) জোরপূর্বক পতিতাবৃত্তি করতে বাধ্য করেন। তার এ কাজে সহযোগিতা করতেন স্থানীয় আলাইয়াপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান।
এ দিকে ঘটনার প্রতিবাদে ও বিচারের দাবিতে মঙ্গলবার বিকেলে আলাইয়াপুর ছয় নম্বর ওয়ার্ড নাফিতের পোল এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও হীরাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে মনববন্ধন করে স্থানীয় এলাকাবাসী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মামলায় ভুক্তভোগীর মা বিউটি আক্তার গত বৃহস্পতিবার রাতে তার মেয়েকে (১৭) ধর্ষণ, বিবস্ত্র করে ছবি ধারণ ও অপরহরণ করা হয়েছে অভিযোগ এনে চার জনের বিরুদ্ধে পৃথক দু’টি মামলা দায়ের করেন। মামলার সূত্র ধরে অভিযান চালিয়ে আসামি ফয়সাল, সাইফুল ইসলাম ইমন ও জোবায়েরকে গ্রেফতার করা হয়। গত শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকার সাভারের পূরগাও এলাকার রুবি নামের একজনের বাসা থেকে ভিকটিমকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন ভিকিটিম অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত-৩-এ বিচারকের কাছে সেচ্ছায় ২২ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জবানবন্দি ও মামলার তদন্ত করতে গিয়ে জানা গেছে, ২০১৮ সাথে ভিকটিম ধীতপুর দারুল উলুম দাখিল মাদরাসায় অষ্টম শ্রেণীতে পড়া লেখা করতেন। ২০১৭ সাল থেকে ২৮ ডিসেম্বর ২০২০ সাল পর্যন্ত ভিকটিমকে দিয়ে তার মা বিউটি আক্তার জোরপূর্বক টাকার বিনিময়ে পতিতাবৃত্তি করাতেন। বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে নিজের মেয়েকে কখনো নিজ বাড়িতে, কখনো ঢাকা চট্টগ্রামের অনৈতিক কাজের জন্য পাঠাতেন বিউটি। এ ব্যাপারে প্রতিবাদ করলে কয়েকবার ভিকটিমের হাত-পা বেঁধে মারধর করেন বিউটি। স্থানীয় চেয়ারম্যান আনিসুর রহমানও তাকে অনৈতিক কাজ করানোর জন্য বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যেতেন। আগের মামলার স্বাক্ষী ও বর্তমান মামলার আসামি মোজ্জামেল হোসেন বিউটিকে টাকা দিয়ে ঘরে এসে ওই ছাত্রীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক করতেন। একরাতে মোজাম্মেলের সাথে অনৈতিক কাজের সময় স্থানীয় ফয়সাল ও জোবায়ের দেখে তাদের দু’জনের বিবস্ত্র ছবি ও ভিডিও মোবাইলে ধারণ করেন। পরে মোজাম্মেলকে বের করে দিয়ে ওই রাতে ভিকটিমকে গণধর্ষণ করেন ফয়সাল ও জোবায়ের। পরে বিউটি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আনিসুর রহমানের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তার বাড়িতে পাঠান ওই ছাত্রীকে। চেয়ারম্যান আনিস নিজ বাড়িতে রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করেন ভিকটিমকে।
পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রুহুল আমিন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ভিকটিম ও গ্রেফতারকৃত আসামিদের জবানবন্দির আলোকে পতিতাবৃত্তির উদ্দেশে ওই ছাত্রীকে শারীরিক নির্যাতন, আটক রেখে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্যকরণ, অবৈধভাবে অর্থের বিনিময়ে যৌন শোষণ ও স্থানান্তরিত করে অনৈতিক কাজ করার অপরাধে বিউটি ও চেয়ারম্যানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মানব পাচার ও দমন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনায় গ্রেফতারকৃত বিউটিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। চেয়ারম্যান আনিসসহ মামলার অপর আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এ ব্যাপারে বেগমগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামরুজ্জামান সিকদার জানান, মাদরাসাছাত্রীকে ধর্ষণ, অপরহণ, নগ্ন ভিডিও ধারণের ঘটনায় আগে দুটি ও মানবপাচার দমন আইনে আরো একটি মামলা হয়েছে। মামলায় মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা