২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ছাত্রীর বিবস্ত্র ভিডিও ধারণ, ধর্ষণ ও অপহরণ : একজনের স্বীকারোক্তি আরেকজন রিমান্ডে

- প্রতীকী ছবি

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের আলাইয়াপুর ইউনিয়নের হীরাপুর গ্রামে এক মাদরাসাছাত্রীর বিবস্ত্র ভিডিও ধারণ করে ফেসবুকে ভাইরালের ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ ও অপহরণের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত ফয়সাল (২২) নোয়াখালী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আলালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবাববন্দি দিয়েছেন। অপরদিকে আরেক গ্রেফতারকৃত আসামি সাইফুল ইসলাম ইমনের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে তিন দিন ও পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে দু’দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

শনিবার বিকেলের বেগমগঞ্জ মডেল থানার ওসি (তদন্ত) রুহল আমিন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

এদিকে অপহৃত মাদরাসাছাত্রীকে এখনো উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।

অভিযুক্তরা হলেন, হীরাপুর গ্রামের কাজী সিরাজের ছেলে ফয়সাল (২২), একই গ্রামের লেদনের ছেলে জোবায়ের (২৩), সোনাইমুড়ীর কামাল হোসেনের ছেলে সামছুল হক রাসেল, হীরাপুর গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে সাইফুল ইসলাম ইমন (২৩)।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ফয়সাল, জোবায়ের, রাসেল, সাইফুল ইসলাম ইমন আলাইয়াপুর ইউনিয়নের হিরাপুর গ্রামের স্থানীয় ধীতপুর দাখিল মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন। বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বারকে অবহিত করে ভুক্তভোগীর পরিবার। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ২০১৮ সালের ৩ মার্চ তারা ভুক্তভোগী বাড়িতে গিয়ে কৌশলে তার মাকে কোমল পানীয়র সাথে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে কিশোরীকে অচেতনের পর বিবস্ত্র করে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণ করে। এ ছাড়াও মোজাম্মেল হোসেন নামে এক ব্যবসায়ীকে ডেকে এনে জোর করে ভুক্তভোগীর সাথে দাঁড় করিয়ে উভয়কে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে তারা।

এরপর ওই ভিডিও ভাইরাল করার ভয় দেখিয়ে টাকা, স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে যায় এবং পরে একাধিকবার ভুক্তভোগীকে ধর্ষণ করে। কিশোরীর বাবা বেঁচে না থাকায় বাধ্য হয়ে তাকে বিয়ে দিয়ে দেয়া হয়। তারপরও রেহাই পায়নি পরিবারটি।

বিয়ের পরে ভুক্তভোগী কিশোরী বাবার বাড়িতে বেড়াতে এলে তাকে তুলে নিয়ে যায় অভিযুক্তরা। এ সময় তারা ঘর থেকে ৫০ হাজার টাকা, এক ভরি স্বর্ণালঙ্কারও নিয়ে যায়। এরপর থেকেই ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে নিয়মিত চাঁদা নিতে থাকেন তারা। উঠিয়ে নেয়ার তিন মাস পরে রাসেলকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে মিরপুরের একটি বাসা থেকে ভুক্তভোগীর মা তাকে উদ্ধার করেন। এ ঘটনার ১৫ দিন পর রাসেল পুনরায় বাড়ি থেকে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। ১০ দিন পর আবারো ১০ হাজার টাকা দিয়ে ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ ২০২০ সালের ২৪ ডিসেম্বর রাসেল আবারো ভুক্তভোগীকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। কিশোরীকে এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। গত সপ্তাহে রাসেল এক লাখ টাকা দিতে প্রস্তাব দেয় ভুক্তভোগীর মাকে। টাকা না দিলে ভুক্তভোগীর মাকেও মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় বৃহস্পতিবার রাতে ভিকটিমের মা নারী ও শিশু নির্যাতন ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে দু’টি মামলা দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে সাইফুল ইসলাম ইমন ও ফয়সাল নামে দুই এজাহারভুক্ত আসামিকে গ্রেফতার করেন।

বেগমগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) রুহুল আমিন জানান, এ ব্যাপারে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে দু’টি মামলা হয়েছে। অপহৃতাকে উদ্ধার ও বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।


আরো সংবাদ



premium cement