১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

হাসপাতালে ভুল চিকিৎসা ও দায়িত্বে অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগে মামলা

-

নোয়াখালী ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসা ও দায়িত্বে অবহেলায় এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগে আদালতে মামলা করেছেন তার স্বজনেরা।

মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় এ ঘটনায় নবজাতকের দাদী নোয়াখালীর সিনিয়র বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট ১নং আমলী আদালতে হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স বিথীকা রাণী হাওলাদার (৪৮), গাইনী বিভাগের প্রধান ডা: লাইনুন নাহার, ডা: নাছির (ইন্টার্নি)সহ ৯ জনকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করেন।

ভুক্তভোগী পরিবার ও মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২১ অক্টোবর ভোর ৫টায় বেগমগঞ্জের হাজীপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের তাহেরা বেগম (৫১) তার পুত্রবধূকে প্রসব বেদনা নিয়ে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের ২নং ওয়ার্ডের গাইনী বিভাগে ভর্তি করেন। কিন্তু হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স বিথীকা রাণী হাওলাদারকে বার বার ডাকা সত্ত্বেও তিনি ঘুম থেকে উঠেননি।

এক পর্যায়ে নার্স বিথীকা রাণী ঘুম থেকে উঠে ইন্টার্নি ডাক্তার নাছির ও আয়া মারজাহানের যোগসাজশে জানান, তাদেরকে টাকা দিলে তারা নরমাল ডেলিভারী করানোর জন্য চেষ্টা করবেন। টাকা না দিলে সিজার হবে এবং প্রাইভেট হাসপাতালে নিতে হবে রোগীকে।

এ সময় গাইনী বিভাগের প্রধান ডা: লাইনুর নাহারের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি হাসপাতালে আসেননি।

ওই সময় ম্যাটস ছাত্র নাইম ভিকটিমের লজ্জাস্থানের ভিডিও করে। ভিকটিমের শাশুড়ি প্রতিবাদ করলে সে বলে এটা আমাদের ট্রেনিংয়ের জন্য ভিডিওটি লাগবে।

সিনিয়র ডাক্তার নার্স চার্জে থাকা সত্ত্বেও সহকারী আয়া ও ম্যাটের ছাত্র দিয়ে ডেলিভারি করায়। ওই সময় নবজাতকের ঘাড় ধরে জোরপূর্বক টেনে ডেলিভারী করানোর কারণে নবজাতকের মুখসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ কালো হয়ে রক্ত জমাট বেঁধে যায়। দু’জন আয়া টেনে-হিঁচড়ে প্রসব করানোর সময় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে জীবিত পুত্রসন্তান প্রসব হওয়ার মাত্র ২-৩ মিনিটের মধ্যে ওই নবজাতকটি মারা যায়।

ভিকটিমের শাশুড়ি তার পুত্রবধূর শরীর থেকে বাহির হওয়া রক্তের ছবি ফোনে ধারণ করলে তাকে একটি কক্ষে আটক করে ভিকটিমের কাগজপত্র লুকিয়ে ফেলে।

এসব বিষয়ে আবাসিক মেডিকেল অফিসারকে অবহিত করলে তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি।

এ ঘটনায় সুধারাম থানায় মামলা করতে চাইলেও পুলিশ মামলা নিতে অসম্মতি জানায়। পরে বাধ্য হয়ে ভুক্তভোগী পরিবার আদালতে মামলা দায়ের করেন।

নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা: সৈয়দ মো: আবদুল আজিম বলেন, ভুক্তভোগী পরিবারের মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো যাবে।


আরো সংবাদ



premium cement