২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

হঠাৎ বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি শাকসবজির

হঠাৎ বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি শাকসবজির - নয়া দিগন্ত

দক্ষিণ চট্টগ্রামে শঙ্খ নদীর তীর জুড়ে হাজার হাজার চাষি শীতের আগাম শাকসবজি বাজারে তোলা নিয়ে স্বপ্নে বিভোর ঠিক সেই মুহুর্তে টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে উঠতি শাকসবজির ব্যাপক ক্ষতিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে চাষিরা। হাজার হাজার একর শাকসবজির ক্ষেত বিনষ্ট হয়ে চাষিরা এখন বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।
প্রতি বছর মধ্য হেমন্তে শীতের আগাম শাকসবজি বাজারে তোলেন এসময় চাষিদের মুখে হাসির ঝিলিক দেখা গেলেও এ বছর হঠাৎ বৃষ্টিতে চাষিদের সে স্বপ্ন ধূলিস্বাৎ হয়ে গেলো।

মধ্য হেমন্তের বৃষ্টিতে চাষিদের শাক-সবজি, লাউ মিষ্টিকুমড়া বরবটি শশা লালশাক মূলাশাক বেগুন মূলা ঢেরশ কপিশাক কাঁচা মরিচ বেগুন খিরা, ফুলকপি-বাধাঁকপি শালগমের হাজার একর শাকসবজি ক্ষেত বিনষ্ট হয়ে চাষিদের মাথায় যেন হঠাৎ করে বিনা মেঘে বজ্যপাতের ঘটনা ঘটে গেলো।

শঙ্খ নদীর তীরবর্তি সবজি চাষি চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারীর বাসিন্দা হারুনুর রশিদ বললেন, শীতের আগাম শাকসবজি বাজারে তোলা নিয়ে তারা যখন সপ্নে বিভোর ছিলেন তখনই বৃষ্টি তাদের পথে বসিয়ে দিলো।

দোহাজারীর পুর্ব দোহাজারীর সবজি চাষি আবদুল করিম ও হারুনুর রশিদ বলেন এবার তারা মূলা বরবটি খিরাসহ বিভিন্ন ধরণের শাকসবজি চাষ করলেও বাজারে তোলার মূহুর্তে কয়েক দিনের বৃষ্টিতে তা বিনষ্ট হয়ে গেছে।

চট্টগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সুত্রে জানা গেছে, প্রতি বছর উপজেলা ওয়ারী শীতকালীন সবজি উৎপাদিত হয় বোয়ালখালীতে প্রায় ৭০০ হেক্টর জমিতে ১১ হাজার ২৪০ মেট্রিক টন, পটিয়ায় ৭১০ হেক্টর জমিতে ১৩ হাজার ৯০৯ মেট্রিক টন, আনোয়ারায় ৫০০ হেক্টর জমিতে ১১ হাজার ১৫ মেট্রিক টন-চন্দনাইশে ১ হাজার ৯২০ হেক্টর জমিতে ৪৪ হাজার ৬৩৭ মেট্রিক টন, লোহাগাড়ায় ১ হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে ২১ হাজার ৮২১ মেট্রিক টন, সাতকানিয়ায় ১ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে ১৫ হাজার ৯১৪ মেট্রিক টন, বাঁশালীতে ১ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমিতে ৪৭ হাজার ৫৫৭ মেট্রিক টন। আর গ্রীষ্মকালীন সবজি উৎপাদিত হয় বোয়ালখালীতে প্রায় ৯০ হেক্টর জমিতে ৯৮২ মেট্রিক টন, পটিয়ায় ২২৬ হেক্টর জমিতে ৪ হাজার ৩৭৭ মেট্রিক টন, আনোয়ারায় ২০৮ হেক্টর জমিতে ২ হাজার ১২১ মেট্রিক টন, চন্দনাইশে ৭৯০ হেক্টর জমিতে ৮ হাজার ১২৫ মেট্রিক টন, লোহাগাড়ায় ২৯৪ মেট্রিক টন জমিতে ৫ হাজার ১২৫ মেট্রিক টন, সাতকানিয়ায় ৮০০ হেক্টর জমিতে ১১ হাজার ১৩৬ মেট্রিক টন এবং বাঁশখালীতে ১ হাজার ৩৭০ হেক্টর জমিতে ২৮ হাজার ৯৭৫ মেট্রিক টন। এবার আবহাওয়া ভাল থাকলে শীতকালীন শাকসবজি আবাদের জমির পরিমান যেমন বৃদ্ধি পাবে তেমনি উৎপাদনও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

চট্টগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আকতারুজ্জামান বলেন, এবছর হটাৎ কয়েক দিনের বৃষ্টিতে শীতের আগাম শকিসবজির কিছুটা ক্ষতি সাধিত হলেও শীতকালীন শাকসবজি নতুন ভাবে চাষ শুরু করেছে চাষিরা তিনি বলেন, আবহাওয়া ভাল থাকলে এবছর শাকসবজি চাষের জমির পরিমান ও ফলন বৃদ্ধি পাবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

তিনি জানান, প্রতি বছর মাঠ পর্যায়ে কৃষকদেরকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়। তাছাড়া তাদেরকে বৈজ্ঞানিক উপায়ে শাক-সবজি চাষের উপর প্রশিক্ষণ এবং পরামর্শ দেয়া হয়। এ কারণে পুরো চট্টগ্রামে পুর্বের তুলনায় এখন প্রতিবছরই শাকসবজি চাষের পরিধি ও উৎপাদন দুটোই বাড়ছে।


আরো সংবাদ



premium cement