২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ব্যাংক লুটে নৈশপ্রহরী হত্যায় ৪ জন গ্রেফতার

পুলিশ সুপারের সংবাদ সম্মেলন - ছবি : নয়া দিগন্ত

বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেডের (বিডিবিএল) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ শাখার নৈশপ্রহরীকে খুনের ঘটনায় জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার মধ্যরাতে আশুগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

ব্যাংকের টাকা লুট করার উদ্দেশ্যে এই হত্যাকাণ্ড ঘটায় এবং বন্দর এলাকায় অবস্থিত তিনটি ব্যাংক লুট করার উদ্দেশ্য ছিল বলে গ্রেফতার হওয়া আসামিরা আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।

বুধবার বেলা ১১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আনিসুর রহমান নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- আশুগঞ্জ উপজেলার বগৈর গ্রামের রসু মিয়ার ছেলে জামাল হোসেন (২৪), আড়াইসিধা গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে মো: জামিল (২৮) ও রহিম বাদশার ছেলে সাদ্দাম হোসেন (২৭) ও চরচারতলা গ্রামের মৃত আবুল কাশেমের ছেলে মাসুম কবির (৩৮)।

এর আগে গত ২৬ সেপ্টেম্বর রাত ১১টার দিকে আশুগঞ্জ গোলচত্বর সংলগ্ন বিডিবিএল শাখা ভবনের ভেতর থেকে নৈশপ্রহরী রাজেশ বিশ্বাসের (২৩) রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত রাজেশ সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার চান্দপুর গ্রামের ক্ষিরোদ বিশ্বাসের ছেলে।

পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান জানান, লোহার রেন্স ও শাবল দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে রাজেশকে হত্যা করা হয়। ব্যাংক লুটের লক্ষ্যে এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে। হত্যকাণ্ডের মূলহোতা জামাল হোসেন জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

পুলিশ সুপার বলেন, গ্রেফতারকৃতরা ব্যাংক থেকে বড় অঙ্কের টাকা লুটের পরিকল্পনা করেছিল। সেজন্য তারা বিডিবিএল, সোনালী ব্যাংক ও প্রিমিয়ার ব্যাংকের আশুগঞ্জ শাখায় খোঁজখবর নিতে থাকে। কিন্তু সোনালী ব্যাংকটি বাজারে মধ্যে হওয়ায় এবং সবসময় লোকজনের আনাগোনা থাকায় সেখানে লুটের পরিকল্পনা বাদ দেয়া হয়। প্রিমিয়ার ব্যাংকের চারদিকে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা থাকায় সেখানেও লুটের পরিকল্পনা ভেস্তে যায় তাদের।

ঘটনার বিবরণে তিনি বলেন, বিডিবিএল ব্যাংকের একটি জানালা অরক্ষিত এবং পেছন দিকে চলাচলের ব্যবস্থা থাকায় তারা এখানে লুটের পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী জামাল ও জামিল জানালার গ্রিল কাটে। মোস্তাক ও শাহাদাৎ নামে দু’জন রাস্তায় পাহারা দেয় এবং লোকজনের গতিবিধি লক্ষ্য করে। জামাল ও জামিল ব্যাংকের ভেতরে প্রবেশ করে নৈশপ্রহরী রাজেশকে লোহার রেন্স ও শাবল দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে হত্যা করেন। এরপর তারা ব্যবস্থাপকের কক্ষে গিয়ে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে এবং একটি ল্যাপটপ ও নগদ পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে যান। পরবর্তীতে টাকার ভল্ট ভেঙে রক্ষিত টাকা লুণ্ঠনের চেষ্টা করেন। কিন্তু ভল্ট ভাঙতে না পারায় টাকা লুট করতে পারেননি। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে লুণ্ঠিত ল্যাপটপ ও টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। ব্যাংকের ভল্টের খোয়া যাওয়া দু’টি চাবি উদ্ধার এবং অভিযুক্ত বাকি দু’জনকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মো: রইছ উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোজাম্মেল হোসেন রেজা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর দফতর) আবু সাঈদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নবীনগর সার্কেল) মকবুল হোসেন, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) আলাউদ্দিন চৌধুরী, সহকারী পুলিশ সুপার (সরাইল সার্কেল) আনিসুর রহমান ও ডিআইও-১ ইমতিয়াজ আহাম্মদ এবং আশুগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন।


আরো সংবাদ



premium cement