২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ইউপিডিএফ কর্তৃক অপহরণের ৩৩ দিন পর ছাড়া পেল ২ জন বাঙালী

ইউপিডিএফ কর্তৃক অপহরণের ৩৩ দিন পর ছাড়া পেল ২ জন বাঙালী - ছবি : নয়া দিগন্ত

খাগড়াছড়ির রামগড়ে ইউপিডিএফের (প্রসীত গ্রুপ) সন্ত্রাসীদের হাতে অপহৃত হওয়া ২ জন বাঙালীকে অপহরণের ৩৩ দিন পর মুক্তিপণের বিনিময়ে স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে তারা। প্রশাসন অপহৃতদের উদ্ধারে ব্যর্থ হওয়ার পর উদ্ধিগ্ন স্বজনরা ভিন্ন কৌশলে সন্ত্রাসীদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে ৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণের বিনিময়ে তাদের উদ্ধার করে। অপহৃত দুইজন হলেন জুয়েল ট্রেডার্সের বিপণন কর্মকর্তা মঞ্জুরুল আলম (৩৫) ও কর্মচারী রাজু মিয়া (২৭)।

২৩ আগস্ট ফেনী থেকে খাগড়াছড়িগামী একটি পিকাপ গাড়ি জুয়েল ট্রেডার্সের প্লাস্টিকের পণ্য নিয়ে রামগড়ের যৌথখামার নামক স্থানে পৌঁছালে সেখান থেকে তাদের অপহরণ করা হয়।

ওই স্থানে ইউপিডিএফের (প্রসীত গ্রুপ) পাঁচজনের একটি দল দু’টি মোটর সাইকেলে এসে পিলাক ঘাট এলাকার পোস্ট কমান্ডারের নেতৃত্বে গাড়ি দখল করে এ অপহরণের ঘটনা ঘটায়। অপহরণের পর সন্ত্রাসীরা গাড়ির চালক মিজানুর রহমানকে ছেড়ে দিয়ে বিপণন কর্মকর্তা মো: মঞ্জুরুল আলম ও মিস্ত্রি রাজু মিয়াকে অস্ত্রের মুখে মোটরসাইকেলে বসিয়ে বৌদ্ধ পাড়ার দিকে নিয়ে যায়।

অপহৃত মো: মঞ্জুরুল আলম চট্টগ্রামের পাহাড়তলী এলাকার সাইদুল হকের ছেলে ও মিস্ত্রি রাজু মিয়া নোয়াখালী সুধারাম থানার বাসিন্দা। সন্ত্রাসীরা গাড়ির চাবি রেখে দিলেও পুলিশ গিয়ে গাড়িটি উদ্ধার করে রামগড় থানায় নিয়ে আসে। পরবর্তীতে গাড়ির চালক মিজানুর রহমান বাদি হয়ে রামগড় থানায় মামলা দায়ের করেন।

জুয়েল ট্রেডার্সের সত্ত্বাধিকারী ফেনী মাস্টার পাড়ার ধর্মপুরের বাসিন্দা মেহেদী হাসান জুয়েল  জানান, অপহরণের পর থেকে মানসিক ভাবে উদ্বিগ্ন অবস্থায় ছিলাম।অপহরণের দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও উদ্ধারে প্রশাসনের অগ্রগতি না দেখে অপহৃত রাজুর স্বজন কামাল উদ্দীনের মাধ্যমে অপহরণকারীদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে। সন্ত্রাসীরা প্রথমে ৮ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করলে মুঠোফোনে তাদের আকুতি-মিনতি করে ৫ লক্ষ টাকার মধ্যে তাদের রাজি করানো হয়।

গত রবিবার যোগাযোগ স্থাপনকারী কামাল উদ্দীনকে টাকা বুঝিয়ে দিলে সে গত শুক্রবার গুইমারা বড়পিলাকের ছনখোলার গরু বাজার এলাকায় গিয়ে সন্ত্রাসীদের মুক্তিপণ বুঝিয়ে দেয়। মুক্তিপণ পেয়ে সন্ত্রাসীরা অপহৃতদের জেলার মানিকছড়ি গিরি মৈত্রী কলেজ এলাকায় ছেড়ে দেয়। পরবর্তীতে তাদের ফেনী যাওয়ার আগে পর্যন্ত কারো সাথে যোগাযোগ করা যাবে না এমন শর্ত দিয়ে ফেনীতে পাঠিয়ে দেয়া হয়।

মেহেদী হাসান জুয়েল আরো জানান, আমাদের উদ্ধারের বিষয়টি রামগড় থানা পুলিশকে জানানো হলে আমাদের রামগড় থানায় নিয়ে আসা হয়। অপহৃত মো: মঞ্জুরুল আলমের মা ছেলের শোকে অসুস্থ্য হয়ে শয্যাশায়ী ছিলেন। ছেলের মুক্তির খবর শুনে তিনি অনেক আনন্দিত।

এই মামলার তদন্তকারী অফিসার রামগড় থানার সাব-ইন্সপেক্টর মুজিবুর রহমান জানান, অপহৃতদের উদ্ধার করে রামগড় থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। অপহৃতদের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেওয়ার জন্য খাগড়াছড়ি আদালতে পাঠানো হয়েছে।

রামগড় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) মনির হোসেন জানান, অপহৃতদের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেয়ার জন্য আদালতে পাঠানো হয়েছে। জবানবন্দি নেওয়া শেষে আদালতের মাধ্যমে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।


আরো সংবাদ



premium cement