২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

টেনশনে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয় আহমদ শফীর : ছেলের দাবি

আল্লামা শাহ আহমদ শফী - ছবি : সংগৃহীত

আল্লামা শাহ আহমদ শফীর মৃত্যু হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হওয়ার কারণে হলেও তার ছেলে আনাস মাদানী দাবি করছেন, হাটহাজারি মাদ্রাসায় কয়েকদিনের ঘটনাপ্রবাহ এবং উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে ‘টেনশনে’ তার ‘হার্ট ফেল’ হয়েছিল।

চট্টগ্রামে হাটহাজারী মাদ্রাসায় টানা দুই দিনের বিক্ষোভের জের ধরে এক পর্যায়ে অবরুদ্ধই ছিলেন মাদ্রাসার গত প্রায় ৩০ বছরের পরিচালক ও হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফী।

মাদ্রাসার কর্তৃত্ব নিয়ে দু'পক্ষের মধ্যকার বিরোধের জের ধরে মাদরাসার ভেতরে ভাঙচুর ও বিক্ষোভের পর বিক্ষোভকারীরা যেসব দাবি জানিয়েছিলো তার মধ্যে ছিলো আহমদ শফীর সম্মানজনক অব্যাহতির বিষয়টিও।

শুক্রবার সন্ধ্যায় আহমদ শফী ঢাকার একটি হাসপাতালে মৃত্যুর পর তার ছেলে আনাস মাদানী তার বাবার জানাজা ও দাফনের বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্ত গণমাধ্যমকে অবহিত করেন।

মাদানী এক পর্যায়ে বলেন, ‘আমার আব্বা দীর্ঘদিন রোগে ভুগলেও ভালোর দিকে ছিলেন। গতকাল (বৃহস্পতিবার) অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার কারণে আব্বাজান হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে গেলেন ও উনাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যালে নেয়া হয়। সেখানকার ডাক্তাররা আমাকে ফোন দিয়ে বলেছেন আব্বা টেনশনের কারণে হার্ট ফেল করেছিলেন। সেজন্যই আজ এ অবস্থা।’

হাটহাজারির ঘটনার কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘এ অবস্থায় ভারাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে ওই কথাগুলো আমি কিছু বলতে চাই না।’

মাদ্রাসায় যারা বিক্ষোভ করেছিলেন তাদের দাবির মুখে বৃহস্পতিবার রাতের শুরা বৈঠকে নিজের অব্যাহতির পাশাপাশি ছেলে আনাস মাদানীকেও স্থায়ীভাবে মাদ্রাসা থেকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন আহমদ শফী।

মাদানী জানান, আহমদ শফীর ইচ্ছে অনুযায়ী তার একটিই জানাজা হবে শনিবার বেলা ২টায় হাটহাজারী মাদ্রাসায় এবং এর পর সেখানকার কবরস্থানেই তাকে দাফন করা হবে।

‘আমার আব্বা সারাজীবন এক জানাজার পক্ষে ছিলেন। এটাকে কেউ ভিন্নখাতে নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করবেন না দয়া করে,’ বলেন আনাস মাদানী।

হাটহাজারীতে জনতার ঢল 

হাটাহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ রুহুল আমীন সকালে পৌনে ৯টায় জানান, কিছুক্ষণের মধ্যে আহমদ শফীর লাশ হাটহাজারীতে পৌঁছানোর কথা রয়েছে এবং দুপুরে জানাজা শেষে সেখানে দাফনের সব প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।

জানাজায় যোগ দেয়ার জন্য সারা দেশ থেকে অনুসারীরা আসছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এলাকা লোকে লোকারণ্য।’

এ কারণে বিজিবি মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

‘অতিরিক্ত সতর্কতা হিসেবে আমরা বিজিবি মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি যাতে করে কেউ কোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর সুযোগ নিতে পারে। কিছুক্ষণের মধ্যে তারা মাঠে নামবে।’

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও সব প্রস্তুতিও স্বাভাবিকভাবেই এগিয়ে চলেছে।

জানা গেছে, হাটহাজারীর বাইরেও ফটিকছড়ি ও পটিয়াতেও বিজিবি মোতায়েন করা হতে পারে।

উল্লেখ্য, হাটহাজারী মাদ্রাসার কর্তৃত্বকে কেন্দ্র করে মাদ্রাসার অভ্যন্তরে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ তুঙ্গে উঠেছে গত কয়েকদিনে।

সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement