২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

সম্পত্তি লিখে নিতে বৃদ্ধকে শিকলে বেঁধে নির্যাতন

সম্পত্তি লিখে নিতে বৃদ্ধকে শিকলে বেঁধে নির্যাতন - ছবি : নয়া দিগন্ত

ভিটা-বাড়ি নিজেদের নামে লিখে নিতে শিকল দিয়ে হাত পা বেঁধে এক বৃদ্ধকে নৃশংসভাবে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী, মেয়ে ও মেয়ের জামাইয়ের বিরুদ্ধে। এই নির্মম ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার পুটিবিলা ইউনিয়নের তাঁতী পাড়া গ্রামে। নিজের মেয়ে ও জামাতার হাতে নির্যাতিত এই হতভাগ্য বৃদ্ধের নাম মো: নুরুন্নবী। বয়স ৬৫ বছর।

জানা গেছে, নুরুন্নবী এক সময় সৌদিআরব প্রবাসী ছিলেন। পারিবারিকভাবে বনিবনা না হওয়ায় স্ত্রী গুল ছেহের বেগমের সাথে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী গুল ছেহের বেগম, মেয়ে নাছিমা ও তার স্বামী ফেরদৌস ওরফে খোকন এক সপ্তাহ ধরে নুরুন্নবীকে শিকল দিয়ে হাত, পা বেঁধে ঘরে আটকে রাখেন। এমনকি প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয়ার প্রয়োজন হলেও ঘর থেকে বের হতে দেয়নি। মা-মেয়ে, মেয়ের জামাই মিলে বাড়ি ভিটে তাদের নামে লিখে দিতে চাপ দেন। রাজি না হলে বেধড়ক মারধর করেন। কিছুদিন পরপর এভাবে তাকে শিকল দিয়ে হাত পা বেঁধে মারধর করেন। স্থানীয়ভাবে বেশ কয়েকবার শালিস বিচার করলেও কিছুদিন পর নুরুনবীর ওপর আবার নির্যাতন চলতে থাকে।

তার প্রতিবেশী শিক্ষানবিশ আইনজীবী আবদুল গফুর তালুকদার জানান, নুরুনবী অসহায় মানুষ। তার বাড়ি ভিটে মেয়ের জামাই খোকন নিজেদের নামে লিখে দিতে চাপ দেন অসহায় নুরুনবীকে। রাজি না হওয়ায় কিছুদিন পরপর এভাবে নির্যাতন চালান।

নির্যাতিত বৃদ্ধ নুরুনবী সাংবাদিকদের জানান, তারা বাড়ি ভিটে তাদের নামে লিখে দেয়ার জন্য আমাকে ৩ থেকে ৪ মাস ধরে নির্যাতন করছে। আমি বাঁচতে চাই। প্রশাসনের সহযোগিতা চাই।

স্থানীয় ইউপি সদস্য গিয়াস উদ্দীন বৃদ্ধকে নির্যাতনের সত্যতা স্বীকার করে জানান, মঙ্গলবার রাতে স্থানীয়ভাবে শালিস হয়েছে। নুরুনবীকে নির্যাতনের কারণে মেয়ের জামাই খোকনসহ তাদেরকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন লোহাগাড়া শাখার সভাপতি অধ্যাপক হামিদুর রহমান জানান, নৃশংসভাবে একজন বয়োবৃদ্ধ মানুষকে এ ধরনের নির্যাতন দুঃখজনক ও অমানবিক। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানান তিনি।

যোগাযোগ করা হলে লোহাগাড়া থানার ওসি (তদন্ত) রাশেদুল ইসলাম জানান, এখনো ভুক্তভোগীর কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement