২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
বৃষ্টিতে বিপজ্জনক ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক

চান্দিনায় ৩ দিনে এমপির গাড়িসহ ৭টি দুর্ঘটনা

শিশুসহ নিহত ২ আহত শতাধিক
-

বৃষ্টিতে বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে ব্যস্ততম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। ঈদের ছুটির তিন দিনে শুধুমাত্র চান্দিনা উপজেলা এলাকায় সংসদ সদস্যের গাড়িসহ সাতটি দুর্ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে মাত্র কয়েক মিনিটের ব্যবধানে একই স্থানে তিনটি দুর্ঘটনায় অর্ধশত যাত্রী আহত হয়।

মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) রাত পৌঁনে ১০টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে মহাসড়কের চান্দিনা উপজেলার হাড়িখোলা মাজার সংলগ্ন স্থানে তিনটি বাস ও একটি জিপসহ তিনটি দুর্ঘটনা ঘটে। রাতে সাড়ে ১১টায় চান্দিনা ও দাউদকান্দির সীমান্তবর্তী এলাকা সব্দলপুর রাস্তার মাথায় একটি প্রাইভেটকার দুর্ঘটনার কবলে পরে। একই দিন দুপুরে হাড়িখোলা-কাবিলপুল এলাকায় যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। এতে অন্তত ২৫ যাত্রী আহত হয়। এছাড়া রোববার (১১ আগস্ট) দিনগত রাতে পৌণে ২টায় মহাসড়কের চান্দিনা পালকি সিনেমা হল সংলগ্ন স্থানে মাইক্রোবাস দুর্ঘটনায় দুইজন নিহত হয়। আহত হয় অন্তত ১০ যাত্রী। একই রাতে একই স্থানে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটে। এতে দুইজন আহত হয়।

নিহতরা হলেন- ঢাকার ধামরাই উপজেলার ভরাটিয়া গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে গাড়িচালক জাহাঙ্গীর (৩৮) ও লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ উপজেলার আব্দুল মতিন মিয়ার ছেলে ইব্রাহীম (৬)।

স্থানীয়রা জানান, রাত পৌণে ১০টায় চাঁদপুর থেকে ছেড়ে আসা রংপুরগামী পদ্মা এক্সপ্রেসের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কের পাশে উল্টে পড়ে যায়। খবর পেয়ে চান্দিনা ফায়ার সার্ভিস ও হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আহতদের উদ্ধার করার সময় চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা কুষ্টিয়াগামী শ্যামলী পরিবহনের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একই স্থানে উল্টে যায়।

উদ্ধার কাজের জন্য ঢাকাগামী লেনটি বন্ধ করে দেওয়ায় বিপরীত লেনে চলছিল চার লেনের সকল গাড়ি। আর ওই মুহূর্তে বিতরীত লেনের একই স্থানে ঢাকাগামী একটি ল্যান্ড ক্রোজার জিপকে (ঢাকা মেট্রো-ঘ-১৫-৬৩৪০) পিছন থেকে ধাক্কা দেয় হানিফ পরিবহনের একটি বাস। এতে জিপে থাকা যাত্রীরা সামান্য আহত হয়েছে। কুমিল্লা-১, ২ আসনের সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য সেলিনা ইসলাম অক্ষত রয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এস.আই) রিপন।

তিনি জানান, সারা দিনের বৃষ্টির মধ্যে অতিরিক্ত গতির কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রথমে পদ্মা এক্সপ্রেসের বাসটি উল্টে মহাসড়কের পাশে পড়ে যায়। তাদেরকে উদ্ধার করার সময় শ্যামলী পরিবহনের বাসটিও একই স্থানে এসে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে মহাসড়কের পাশে পড়ে যায়। মাত্র ২০ গজের ব্যবধানে দুটি দুর্ঘটনা ঘটে। দুটি বাসেই পর্যাপ্ত যাত্রী ছিল। অপরদিকে দুর্ঘটনা স্থলে এনে বিপরীত লেনের জিপটি হঠাৎ গতি কমানোর ফলে পিছন থেকে ধাক্কা দেয় অপর একটি বাস।

তিনি জানান, দুর্ঘটনাস্থলটিতে সামনে বাঁক আছে। অতিরিক্ত গতি সম্পন্ন গাড়িগুলো এসে নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পেয়ে এসব দুর্ঘটনা হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।

চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ডাক্তার তুষার আহমেদ জানান, ‘আমাদের হাসপাতালে অন্তত ৩০ জনের রোগীর চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় তিনজনকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’


আরো সংবাদ



premium cement