১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

আবারো পতনের খাদে পুঁজিবাজার

এক দিনে বাজারমূলধন কমলো সাড়ে ১৩০০ কোটি টাকা
-

আগের দিন পতনটা কান স্পর্শ করে চলে গেলো। কিন্তু গতকাল আর বাঁচতে পারলো না। অবশেষে পতনের খাদেই পড়লো পুঁজিবাজার। খাদে যে পড়বে, তার আলামত লেনদেনের সূচনা থেকেই বোঝা যাচ্ছিল। লেনদেনের মাঝপথে অর্থাৎ গতকাল দুপুর ১২টা থেকে একটা পর্যন্ত সূচক নামতে নামতে তলানিতে ঠেকে। শেষ বেলাতে এসে তলানি থেকে মান রাখলেও আবার পতন তাকে টেনে নামায়। বেচাকেনা আগের দিনের তুলনায় বাড়লেও লেনদেনে টাকার পরিমাণ কমেছে। ডিএসইতে ৬৪.৫৫ শতাংশ এবং সিএসইতে ৬৬.৫১ শতাংশ কোম্পানি দর পতনের শিকার গতকাল। বাজারমূলধন কমেছে ১৩৫০ কোটি টাকা। ব্লক মার্কেটেও গতকাল শেয়ারসহ টাকার অঙ্কে বড় ধরনের লেনদেন হয়েছে।
সারা দিনের লেনদেনের তথ্য থেকে বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডিএসইতে লেনদেন শুরুর ১১ মিনিটের মাথাতেই পতন স্পর্শ করে সূচককে। ডিএসইএক্স ১১.৫১টায় সূচক নেমে ৫ হাজার ১৯৬ পয়েন্টে চলে আসে, যা গতকালের সর্বনিম্ন অবস্থান। দিনশেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৬.৯৫ পয়েন্ট হারিয়ে ৫ হাজার ২২০.১৮ পয়েন্টে, শরিয়াহ সূচক ৩.৮০ পয়েন্ট হারিয়ে ১১৪২.৮৯ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৯.৫১ পয়েন্ট হারিয়ে এখন ১৮৬৭.৯৯ পয়েন্টে নেমে এসেছে। ১৪ কোটি ৯৭ লাখ ৩৭ হাজার ২৮১টি শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড ও বন্ড বেচাকেনা হয়েছে মোট ৪৭৯ কোটি ৮৬ লাখ ৭২ হাজার টাকা বাজারমূল্যে, যা রোববার থেকে কমেছে। গতকাল ছিল ৪৮৬ কোটি ৭৪ লাখ টাকায়।
আর লেনদেনে অংশ নেয়া ৩৯৫টি কোম্পানির মধ্যে ৬৪.৫৫ শতাংশ বা ২৫৫টি দরপতনের শিকার। আর দর বেড়েছে ৯২টির এবং দর অপরিবর্তিত ৪৮টির। দর পতনের মধ্যে এ শ্রেণীর কোম্পানি ছিল ১৪৯টি। আর মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৩৭টি লেনদেনে অংশ নিলেও দর বৃদ্ধিতে ছিল মাত্র ৭টি, দরপতনে ১৭টি এবং অপরিবর্তিত ছিল ১৩টির দর। বাজারমূলধন ৩৬৭ কোটি টাকা কমে এখন ৬ লাখ ৪৫ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকায় নেমেছে।
ডিএসইর ব্লক মার্কেটে গতকাল বড় ধরনের বেচাকেনা হয়েছে। শেয়ারও বড় অঙ্কের হাতবদল হয়েছে। লেনদেনে অংশ নেয়া ৪৮টি কোম্পনির সর্বোচ্চ চার কোটি ৫২ লাখ ৭৫ হাজার ৩১৫টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড বেচাকেনা হয়েছে। যার গতকালের বাজারদর ছিল ১৩৮ কোটি ৮৬ লাখ ৩৮ হাজার টাকা। ৯ কোম্পানির মোট শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৩০ কোটি ৬৯ লাখ টাকারও বেশি। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি টাকার বেচাকেনা হয়েছে ইউনিলিভারের দুই লাখ ৮৩ হাজার ১৭৯টি শেয়ার মোট ৭৪ কোটি ৯৬ লাখ ৮৮ হাজার টাকায়। আর ন্যাশনাল ব্যাংক বা এনবিএলের তিন কোটি ৫৭ লাখ ৪৩ হাজার ৫৭৯টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে মোট ২২ কোটি ৫১ লাখ ৮৪ হাজার টাকায়। ৭ কোটি ৮৯ লাখ ৪১ হাজার টাকার ইউনিট লেনদেন করেছে ক্যাপিটেক গ্রামীণ ব্যাংক গ্রোথ ফান্ড।
অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে- ফাইন ফুডসের ৭ কোটি ৩৭ লাখ ৭৮ হাজার টাকার, রূপালী লাইফ ইন্সুরেন্সের ৬ কোটি ৩২ লাখ ৩৮ হাজার টাকার, মেঘনা পেট্রোলিয়ামের ৪ কোটি ৬১ লাখ ১৫ হাজার টাকার, গ্রামীণফোনের ২ কোটি ৯৭ লাখ ৫০ হাজার টাকার, ক্রিস্টাল ইন্সুরেন্সের ২ কোটি ৪২ লাখ ৫৫ হাজার টাকার এবং ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেডের ১ কোটি ৫৪ লাখ ৮৮ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
অন্য দিকে, চট্টগ্রাম স্টকেও বড় ধরনের সূচকের পতন ঘটেছে। সিএই-৫০ সূচক ৭.৪১ পয়েন্ট, সিএসই-৩০ সূচক ১০৮.৮৮ পয়েন্ট, সিএসসিএক্স ৫৮.৯৭ পয়েন্ট এবং সিএএসপিআই সূচক ৯৪.৩৭ পয়েন্ট হারিয়েছে। ২২১টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিলেও দর পতনের শিকার ১৪৭টি, দর বেড়েছে ৫১টির এবং দর অপরিবর্তিত ২৩টির। দ্ইু কোটি ২৪ লাখ ১৭ হাজার ২২২টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড লেনদেন হয়েছে মোট ২১ কোটি ১৯ লাখ ৫৫ হাজার ২৩ টাকায়। এখানে বাজারমূলধন কমেছে ৯৮৩ কোটি টাকা। সিএসইর বাজারমূলধন এখন ৬ লাখ ৭৪ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা।


আরো সংবাদ



premium cement