পতনের ধারায় ৮১ শতাংশ বিক্রির চাপে
- বিশেষ সংবাদদাতা
- ২১ মে ২০২৪, ০০:০৫
- ডিএসইর সূচক দু’দিনে ১৩৩.৭৫ পয়েন্ট উধাও
- সিএসই ৪০১.৪০ পয়েন্ট হারিয়েছে দু’দিনে
- মূলধন আরো ৭ হাজার ৮১ কোটি টাকা চলে গেল
ক্রেতা সঙ্কট দেখা দিয়েছে দেশের পুঁজিবাজারে। অব্যাহতভাবে সূচক পতন, কোম্পানিগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দরপতন এবং ক্রেতা শুণ্যতার কারণে আতঙ্কিত বিনিয়োগকারীরা। শেয়ার যেন এখন বিনিয়োগকারীদের গলার কাঁটা। বিক্রির চাপ ছিল ৮১ শতাংশ। প্রথম ঘণ্টার লেনদেনে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক কমেছে ৭৫ পয়েন্ট। এরপর অবশ্য পতনে কিছুটা উন্নতি হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ৩৭.৬২ পয়েন্ট হারিয়েছে দিন শেষে। ৭১.৪৬ শতাংশ কোম্পানি দর পতনের শিকার ডিএসইতে। চলতি সপ্তাহের প্রথম দু’দিনে ডিএসই ১৩৩.৭৫ পয়েন্ট এবং সিএসই ৪০১.৪০ পয়েন্ট হারিয়েছে। দুই বাজারে গতকালই আরো সাত হাজার ৮১৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা বাজারমূলধন হারিয়েছে।
লেনদেনের তথ্য থেকে বাজারবিশ্লেষণে দেখা যায়, দিনের লেনদেনের সূচনাতে যে হারে পয়েন্ট চলে যাচ্ছিল শেষ পর্যন্ত তাতে কিছুটা শ্লথগতি আসে। যার কারণে শুরুতে যে পরিমাণ পয়েন্ট সূচক থেকে চলে যায় তার ৫০ শতাংশ ফিরে দিন শেষে। ডিএসইতে ডিএসইএক্স ৩৭.৬২ পয়েন্ট, শরিয়াহ সূচক ১০.৮৮ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৯.৫৫ পয়েন্ট হারিয়েছে। সূচক ও দরপতনের কারণে বাজার লেনদেনও কমেছে। ডিএসইতে ১৪ কোটি ১০ লাখ ৩৭ হাজার ৭২৯টি শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড ও বণ্ড হাতবদল হয়েছে। যার গতকালের বাজারমূল্য ছিল ৫৬১ কোটি ২১ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। রোববার লেনদেন হয় ৪০৯ কোটি ১৯ লাখ টাকার। সে হিসেবে গতকাল টাকায় লেনদেন বেড়েছে ১৫২ কোটি টাকার। লেনদেনে অংশ নেয়া ৩৮৯টি কোম্পানির মধ্যে দর পতনের শিকার ২৭৮টি কোম্পানি বা ৭১.৪৬ শতাংশ। এদের মধ্যে এ শ্রেণীর শেয়ার হলো ১৬৩টি। আর দর বেড়েছে মাত্র ৮১টির এবং দর অপরিবর্তিত ৩০টি কোম্পানির। আগের দিনের তুলনায় বাজারমূলধন কমেছে তিন হাজার ৫৮৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।
ডিএসইর ব্লক মার্কেটে ৪২টি কোম্পানি গতকাল লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব কোম্পানির ৪৬ লাখ ৪১ হাজার ৮০৭টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড হাতবদল হয়েছে মোট ৩১ কোটি ৮৭ লাখ ৬ হাজার টাকা বাজারমূল্যে। তবে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে লাভেলো আইসক্রিম, স্কয়ার ফার্মা, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, আলহাজ টেক্সটাইল, সালভো কেমিক্যাল, মেঘনা পেট্রোলিয়াম এবং রিলায়ান্স ওয়ান দ্যা ফার্স্ট স্কিম অব রিলায়ান্স ইন্সুরেন্স মিউচুয়াল ফান্ড। এই সাত প্রতিষ্ঠানের মোট শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে ২৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকারও বেশি।
ডিএসইর তথ্য বলছে, সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে লাভেলো আইসক্রিমের। প্রতিষ্ঠানটির সাত কোটি ৭৮ লাখ ৮৫ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এ ছাড়া স্কয়ার ফার্মার পাঁচ কোটি ৪৮ লাখ ৫২ হাজার টাকার এবং আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের তিন কোটি ৫০ লাখ ৮৮ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
অন্যদিকে, চট্টগ্রাম স্টকে গতকাল সবগুলো সূচকই পয়েন্ট হারিয়েছে। সিএএসপিআই সূচক থেকে ১৩২.১৩ পয়েন্ট, সিএসই-৫০ সূচক থেকে ৮.৯ পয়েন্ট, সিএসই-৩০ সূচক থেকে ৮০.৫২ পয়েন্ট এবং সিএসসিএক্স থেকে ৭৯.২১ পয়েন্ট ঝরে গেছে। এক কোটি ৮১ লাখ ৬৪ হাজার ৩২৮টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড বেচাকেনা হয়েছে ৭০ কোটি ১৩ লাখ ৮৬ হাজার ৫৮৪ টাকা বাজার দরে। ২২৩টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিলেও দর পতনের শিকার ১৬৬টি, দর বেড়েছে ৩৬টি এবং দর অপরিবর্তিত ২১টি কোম্পানির। সিএসইতে গতকাল বাজারমূলধন থেকে চার হাজার ২২৪ কোটি ২০ লাখ টাকা চলে গেছে। বাজার পর্যবেক্ষক রয়েল ক্যাপিটাল বলছে, তারল্য কমেছে ০.৫২ শতাংশ। তবে টার্ণওভার কমেছে ৩৭ শতাংশ আগের দিনের তুলনায়। ১৯টি খাতের মধ্যে মাত্র একটি খাত লাভে ছিল। বাকি ১৮টি খাতে লোকসান গুণতে হয়েছে। ৭২ শতাংশ বিক্রেতা থাকলেও বিক্রির চাপ ছিল ৮১ শতাংশ। ক্রেতা যেখানে মাত্র ১৯ শতাংশ। এ বি এন ও জেড সবগুলো শ্রেণীর শেয়ারই বিক্রির চাপে ছিল। তবে পাট, চামড়া, সিমেন্ট, সেবা ও রিয়েল এস্টেট, টেলিকম খাতের কোম্পানির শেয়ারগুলোর কোনো ক্রেতা ছিল না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা