টানা পতনে শেয়ার বিক্রির চাপে পুঁজিবাজার
দেড় শ’ কোটি টাকা লেনদেন কমেছে ডিএসইতে- বিশেষ সংবাদদাতা
- ১৭ মে ২০২৪, ০০:০৫
টানা পতনের বৃত্তে আটকে গেছে দেশের পুঁজিবাজার। কোনোভাবেই বের হতে পারছে না। অনেক দিন ধরেই শেয়ার বিক্রির চাপে রয়েছে বাজারে। বিনিয়োগকারীরা স্বাভাবিক লেনদেন করতে পারছেন না। বাজারে লেনদেন শুরুর আধঘণ্টা পার হওয়ার আগেই একশ্রেণীর বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়ান। ফলে দাম বাড়ার তালিকা থেকে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান কমার তালিকায় চলে আসে। এতে সূচকও ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত এই পতনের ধারা অব্যাহত থাকে। ডিএসইতে একদিনেই ১৫০ কোটি টাকা লেনদেন কমেছে। ৩৬ শতাংশ ক্রেতার বিপরীতে বিক্রির চাপ ছিল ৫৪ শতাংশ। ফলে বাজার থেকে আরো ০.১৪ শতাংশ মূলধন চলে গেছে।
দিনের লেনদেনের তথ্য থেকে জানা গেছে, ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৯.৯৮ পয়েন্ট কমে এখন পাঁচ হাজার ৫১৯.৪১ পয়েন্টে নেমেছে। শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় শূন্য দশমিক ৮০ পয়েন্ট কমে এক হাজার ২১২.১৬ পয়েন্টে আর ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩.৭৯ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৯৭৩.৯৯ পয়েন্টে নেমে এসেছে। সব কয়টি মূল্যসূচক কমলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। ২০ কোটি ৯৬ লাখ ২২ হাজার ১৩৭টি শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড ও বন্ড লেনদেন হয়েছে ৬৭৬ কোটি ৭৯ লাখ ৮৬ হাজার ৪৯৬ টাকা বাজারমূল্যে। বুধবার লেনদেন হয় ৫২৬ কোটি ৩৩ লাখ টাকার। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ১৫০ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। এই লেনদেনে সব থেকে বেশি অবদান রেখেছে এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিসের শেয়ার। কোম্পানিটির ৪৬ কোটি ২৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর লাভেলো আইসক্রিমের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকার। ৩০ কোটি ৮২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে ই-জেনারেশনের।
ডিএসইর ব্লক মার্কেটে গতকাল ৪৩টি কোম্পানির তিন কোটি ২২ লাখ এক হাজার ৭৯২টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড হাতবদল হয়েছে। যার গতকালের বাজারদর ছিল ৪৯ কোটি ৮৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংকের দুই কোটি ১০ লাখ শেয়ার। যার বাজারমূল্য ছিল ১৩ কোটি দুই লাখ টাকা। রিলায়ান্স ওয়ান দ্য ফার্স্ট স্কিম অব রিলায়ান্স ইন্স্যুরেন্স মিউচুয়াল ফান্ডের সাত কোটি ৫৬ লাখ ৯৪ হাজার টাকার ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এছাড়া সোনালী পেপার, লাভেলো আইসক্রিম এবং আইসিবি এএমসিএল সোনালী ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। এই পাঁচ কোম্পানির মোট শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকারও বেশি।
আর চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৫৩.৬৮ পয়েন্ট। এছাড়া সিএসসিএক্স কমেছে ৩১.৯৮ পয়েন্ট এবং সিএসই-৫০ সূচক ১.৪ পয়েন্ট। তবে সিএসই-৩০ সূচকের ০.৪৯ পয়েন্ট যোগ হয়েছে। লেনদেনে অংশ নেয়া ২৫১টি কোম্পানির মধ্যে ৬৩টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৬৩টির এবং ২৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ৬৭ লাখ ৬৭ হাজার ৬০৭টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড লেনদেন হয়েছে ৫৯ কোটি ৬৮ লাখ ২২ হাজার ৯৫৫ টাকায়। বুধবার লেনদেন হয়েছিল ১৩ কোটি ৬০ লাখ টাকার শেয়ার।
প্রাতিষ্ঠানিক বিশ্লেষক রয়েল ক্যাপিটালের বিশ্লেষণ হলো, টানা পতনের কারণে পুঁজিবাজার এখনো বিক্রির চাপে। শেয়ার বিক্রি বাড়লেও টাকায় লেনদেন ২৯ শতাংশ কমেছে। এ শ্রেণীর শেয়ারের কোনো ক্রেতা ছিল না। যেখানে বিক্রেতার চাপ সবচেয়ে বেশি ছিল। এছাড়া ক্রেতা ছিল না আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাত, পাট খাত, পেপার, হাউজিং, চামড়া ও টেলিকম খাতের কোম্পানির শেয়ারের। ডিএসইতে বাজারমূলধন একদিনেই ০.১৪ শতাংশ উধাও হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা