২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

নিয়ম বদলেও পুঁজিবাজারে ঠেকানো গেল না পতন

-

শেয়ারবাজারের পতন ঠেকাতে শেয়ারের দাম কমার লাগাম টেনে নতুন সার্কিট ব্রেকার চালু করা হয়েছে। এরপরও রোববার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) পতন ঠেকানো যায়নি। এ দিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সব ক’টি মূল্যসূচক কমেছে। শেয়ারের গড় দাম নির্ধারণে পরিবর্তন আনায় এবং বৃহস্পতিবার দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর দাম বাড়ায় এ পতন হয়েছে বলে জানান স্টক এক্সচেঞ্জের সংশ্লিষ্টরা। অব্যাহত দরপতনের হাত থেকে শেয়ারবাজার রক্ষা করতে গত বৃহস্পতিবার নতুন সার্কিট ব্রেকার চালু করা হয়। এ সার্কিট ব্রেকার নির্ধারণ করতে গিয়ে তিন দফা পেছানো হয় লেনদেন শুরুর সময়। নতুন সার্কিট ব্রেকার নির্ধারণ করে বেলা ২টায় শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয়, যা চলে আড়াইটা পর্যন্ত। নতুন নিয়মের কারণে লেনদেন শুরুর আগেই বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়ে যায়। ফলে বৃহস্পতিবার মাত্র আধা ঘণ্টার লেনদেনেই ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স বাড়ে ৩৭১ পয়েন্ট। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ বাড়ে ১২২ পয়েন্ট। ডিএসইর শরিয়াহ বাড়ে ৮৪ পয়েন্ট।
নতুন সার্কিট ব্রেকারের নিয়ম অনুযায়ী, কোম্পানির শেয়ারের লেনদেন শুরু হবে শেষ পাঁচ কার্যদিবসের ক্লোজিং প্রাইসের গড় মূল্য দিয়ে। এর নিচে কোনো কোম্পানির শেয়ারের দাম নামতে পারবে না। তবে দাম বাড়ার সীমা আগের মতোই থাকবে। নতুন এ নিয়মে বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন হলেও বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের গড় দাম নির্ধারণে ভুল হয়। এ কারণে রোববার শেয়ারের গড় দাম নির্ধারণে কিছুটা সংশোধনী আনা হয়। এরপর লেনদেনের শুরুতেই দাম বাড়ার থেকে কমার তালিকায় নাম লেখাতে থাকে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান। ফলে নিম্নমুখী হতে থাকে মূল্যসূচক, যা লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।
লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১৪ পয়েন্ট কমে তিন হাজার ৯৬০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ কমেছে ৪ পয়েন্ট। আর ডিএসই শরিয়াহ কমেছে ২ পয়েন্ট। পতনের বাজারে লেনদেন হয়েছে ১৪৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। এ দিকে লেনদেনের শুরুতে কী পরিমাণ প্রতিষ্ঠানের দাম বেড়েছে ও কমেছে, সে তথ্য প্রকাশ হলেও মাঝে লেনদেন হঠাৎ বন্ধ করে দেয়া হয়। ফলে দিনভর ডিএসইতে কতটি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে এবং কতটির দাম কমেছে বা বেড়েছে বা অপরিবর্তিত রয়েছে, সে তথ্য পাওয়া যায়নি।
ডিএসইর এক কর্মকর্তারা জানান, নতুন নিয়মে বৃহস্পতিবার থেকে লেনদেন শুরু হলেও কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম নির্ধারণে সমস্যা হয়। এ কারণে আজ তা সংশোধন করা হয়েছে। এজন্য কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কমেছে। তিনি আরো বলেন, কোনো প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কত পর্যন্ত নামতে পারবে তা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। ফলে ওই দামের নিচে এখন আর কোনো প্রতিষ্ঠান দাম কমতে পারবে না। তবে দাম বাড়ার পর আবার তা কমে নির্ধারণ করে দেয়া সীমা পর্যন্ত নামতে পারবে। এতে একদিকে সূচকের বড় পতন হবে না, অন্য দিকে বিনিয়োগকারীরাও নতুন করে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না।
ডিএসইতে পতন হলেও নতুন নিয়মে লেনদেন হওয়ায় অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক বেড়েছে। বাজারটির সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই আগের দিনের তুলনায় ৫২ পয়েন্ট বেড়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে পাঁচ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ২০৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১৬১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। নিয়ম বদলের কারণে বাজারটিতে একটি প্রতিষ্ঠানেরও দর পতন হয়নি।
ব্লক মার্কেট : ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) রোববার ব্লক মার্কেটে মোট ৯ কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মোট ২৫ লাখ ৫৬ হাজারটি শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যার আর্থিকমূল্য ৪০ কোটি ৯২ লাখ টাকা। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। জানা গেছে, কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ ২০ কোটি ৬০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে রেনেটা লিমিটেডের। বিকন ফার্মা ১২ কোটি ৭৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। তৃতীয় স্থানে থাকা লিন্ডেবিডি ৬ কোটি ১৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এ ছাড়া ব্লকে লেনদেন করা অন্য কোম্পানিগুলো হচ্ছেÑ জেনেক্স ইনফোসিস, ইন্দো-বাংলা ফার্মা, ন্যাশনাল টিউবস, এসকে ট্রিমস, স্কয়ার ফার্মা ও ওয়াটা কেমিক্যাল লিমিটেড।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement