পাঁচ দিনে ডিএসই সূচক হারাল ২০০ পয়েন্ট
পুঁজিবাজারে আবার ধস- অর্থনৈতিক প্রতিবেদক
- ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০
ব্যাংকের বিশেষ তহবিলের সংবাদে কিছু দিন ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর দেশের শেয়ারবাজারে আবার ধস দেখা দিয়েছে। গতকাল বুধবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সব কয়েকটি মূল্য সূচকের বড় পতন হয়েছে। এ নিয়ে টানা পাঁচ কার্যদিবস দরপতন ঘটল। ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে গতকাল পর্যন্ত টানা পাঁচ কার্যদিবস দরপতন হয়েছে। পাঁচ কার্যদিবসে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক কমেছে ২০০ পয়েন্টের ওপর। শেয়ারবাজারের এমন টানা দরপতনে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আবারো আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
শেয়ারবাজারে টানা দরপতনের মধ্যে স্টেকহোল্ডারদের একটি অংশের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ১০ ফেব্রুয়ারি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলোকে বিশেষ তহবিল গঠনের সুযোগ দেয়া হয়। নিজস্ব উৎস অথবা ট্রেজারি বিল বন্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলো এ তহবিলের অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ৫ শতাংশ সুদে এ তহবিলের অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে ব্যাংকগুলো, যা পরিশোধের সময় পাবে পাঁচ বছর। ব্যাংকগুলো সর্বোচ্চ ৭ শতাংশ সুদে এ তহবিল থেকে ঋণ দিতে পারবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এ সুবিধা দেয়ার ফলে শেয়ারবাজারে টানা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দেয়। ৪ হাজার ৩৮৫ পয়েন্টে নেমে যাওয়া ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসএক্স হু হু করে বেড়ে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ৪ হাজার ৭৫৮ পয়েন্টে চলে আসে। অর্থাৎ পতন কাটিয়ে ১০ থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ডিএসইর প্রধান সূচক বাড়ে ৩৭৩ পয়েন্ট। এর পরই ঘটে ছন্দপতন। তবে বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। হঠাৎ শেয়ারবাজারে বড় উত্থানের কারণে এখন টানা দরপতন দেখা দিয়েছে। শিগগিরই বাজার স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
গতকাল লেনদেনের শুরুতেই সূচকে নেতিবাচক প্রবণতা দেখা যায়; যা লেনদেনের শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। ফলে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৭২ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৫৪৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ৩৩ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৫১৭ পয়েন্টে নেমে গেছে। আর ডিএসইর শরিয়াহ সূচক ৯ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৬০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সব ক’টি মূল্য সূচকের পতনের পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেয়া ৮৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম আগের দিনের চেয়ে বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২২৬টির। আর ৪৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এ দিকে ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কিছুটা কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৬২৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৬২৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে গ্রামীণফোনের শেয়ার। কোম্পানিটির ১৬ কোটি ৬১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিটিক্যালের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। ১৫ কোটি ৭১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভিএফএস থ্রেড ডাইং। এ ছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ কোম্পানির মধ্যে রয়েছেÑ ব্র্যাক ব্যাংক, ন্যাশনাল পলিমার, আরডি ফুডস, লাফার্জহোলসিম, ওরিয়ন ইনফিউশন, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল এবং গোল্ডেন হার্ভেস্ট।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই ২০৭ পয়েন্ট কমে ১৩ হাজার ৯৪১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ২৫০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮১টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪০টির এবং ২৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ব্লক মার্কেট : ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল ব্লক মার্কেটে মোট ১৫ কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মোট ৪৯ লাখ ৫৭ হাজার ৯৬২টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে; যার আর্থিক মূল্য ১৭ কোটি ১৯ লাখ টাকা। কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ ৫ কোটি ৮৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে যমুনা ব্যাংক লিমিটেডের। বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যালস ৩ কোটি ৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। তৃতীয় স্থানে থাকা ওরিয়ন ইনফিউশন ২ কোটি ৯৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এ ছাড়া ব্লকে লেনদেন করা অন্য কোম্পানিগুলো হচ্ছেÑ আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, ব্র্যাক ব্যাংক, দুলামিয়া কটন, গোল্ডেন হার্ভেস্ট অ্যাগ্রো, কাট্টালি টেক্সটাইল, ম্যারিকো, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, সায়হাম কটন, সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্স, স্কয়ার ফার্মা, স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্স ও ইয়াকিন পলিমার লিমিটেড।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা