২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

দিশেহারা পুঁজিবাজার

ডিএসইর সূচক কমেছে ৩.৩৬ শতাংশ, লেনদেন ৩২ শতাংশ
-

পতন থেকে বের হতে পারছে না দেশের পুঁজিবাজার। দিন আর সপ্তাহ যত যাচ্ছে ততই খাদের কিনারে যাচ্ছে দেশের অর্থ সংগ্রহের বড় এই বাজারটি। এই পতনের বৃত্ত থেকে বের হওয়ার কোনো পথই খুঁজে পাচ্ছে না পুঁজিবাজার। বলা যায়, দিশেহারা অবস্থায় এখন দেশের পুঁজিবাজার। এতে বিনিয়োগকারীদের হাহাকার আরো বাড়ছে। আস্থার শেষটুকুও শেষ হয়ে যাচ্ছে। আগের সপ্তাহের ধারাবাহিকতায় গত সপ্তাহে ও ব্যাপক পতন হয়েছে দেশের দুই পুঁজিবাজারে। সদ্যসমাপ্ত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তিন কার্যদিবস সূচক ব্যাপক কমেছে। বিপরীতে দুই কার্যদিবস সূচক বেড়েছে সামান্য। অর্থাৎ হ্রাস-বৃদ্ধির হিসাব শেষে গত সপ্তাহে উভয় পুঁজিবাজারে প্রধান সূচক কমেছে। একই সাথে কমেছে লেনদেনের পরিমাণও। গড় লেনদেন আগের সপ্তাহের তুলনায় আরো কমেছে। গত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫৭ পয়েন্ট এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক এক সপ্তাহে ৪৭০ পয়েন্ট কমেছে। ডিএসইতে গত সপ্তাহে টাকার পরিমাণে লেনদেন ৩২ শতাংশ আর সিএসইতে লেনদেন ১৩ শতাংশ কমেছে। টাকার অঙ্কে ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ৭৩৬ কোটি ৯৯ লাখ ৯১ হাজার ৯২১ টাকা বা ৩১.৮৯ শতাংশ। ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
গত সপ্তাহে পাঁচ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) এক হাজার ৫৭৩ কোটি ৯৮ লাখ ৭৯ হাজার ৭০৪ টাকার লেনদেন হয়েছে, যা আগের সপ্তাহ থেকে ৭৩৬ কোটি ৯৯ লাখ ৯১ হাজার ৯২১ টাকা বা ৩১.৮৯ শতাংশ কম। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল দুই হাজার ৩১০ কোটি ৯৮ লাখ ৭১ হাজার ৬২৫ টাকার। ডিএসইতে গত সপ্তাহে গড় লেনদেন হয়েছে ৩১৪ কোটি ৭৯ লাখ ৭৫ হাজার ৯৪০ টাকার। আগের সপ্তাহে গড় লেনদেন হয়েছিল ৪৬২ কোটি ১৯ লাখ ৭৪ হাজার ৩২৫ টাকার, অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে গড় লেনদেন ১৪৭ কোটি ৩৯ লাখ ৯৮ হাজার ৩৮৫ টাকা কম হয়েছে। গত সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৫৭ পয়েন্ট বা ৩.৩৬ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৫১৪ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ৩৯ পয়েন্ট বা ৩.৭২ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৫৮ পয়েন্ট বা ৩.৫৯ শতাংশ কমে সপ্তাহ শেষে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ১৬ পয়েন্টে এবং এক হাজার ৫৪৮ পয়েন্টে। গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৫৬টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ৬৪টি বা ১৮ শতাংশের, কমেছে ২৭৭টির বা ৭৮ শতাংশের এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৫টির বা ৪ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সপ্তাহজুড়ে ১০৪ কোটি ১২ লাখ ১৫ হাজার ৪১৭ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১২০ কোটি দুই লাখ ৮২ হাজার ৯৯৮ টাকার। এ হিসাবে সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন ১৫ কোটি ৯০ লাখ ৬৭ হাজার ৫৮১ টাকা বা ১৩ শতাংশ কমেছে।
গত সপ্তাহে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৪৭০ পয়েন্ট বা ৩.৩১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৭৩৩ পয়েন্টে। এ ছাড়া সিএসসিএক্স ২৯১ পয়েন্ট বা ৩.৩৭ শতাংশ, সিএসই-৩০ সূচক ৫৩২ পয়েন্ট বা ৪.৩৬ শতাংশ, সিএসই-৫০ সূচক ৩৯ পয়েন্ট বা ৩.৭০ শতাংশ এবং সিএসআই ৩১ পয়েন্ট বা ৩.৪১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৮ হাজার ৩৩২ পয়েন্ট, ১১ হাজার ৬৪৮ পয়েন্ট, ১ হাজার ৫ পয়েন্ট ও ৮৭৪ পয়েন্টে।
গত সপ্তাহে সিএসইতে মোট ২৯৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের হাত বদল হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৬৩টির বা ২১ শতাংশ, দর কমেছে ২১২টির বা ৭২ শতাংশ এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ২১টির বা ৭ শতাংশ।
ব্লক মার্কেট : তবে গত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্লক মার্কেটে ৩৯টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব কোম্পানির ৮৫ কোটি টাকা শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা আগের সপ্তাহ থেকে ১৪৩ শতাংশ বেশি। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিগুলোর এক কোটি ৭৩ লাখ ৯১ হাজার ২০০টি শেয়ার হাত বদল হয়েছে। এর মাধ্যমে কোম্পানিগুলোর ৮৪ কোটি ৯৫ লাখ ৬৫ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর আগের সপ্তাহে ৩০ কোম্পানির ৬৯ লাখ ৭২ হাজার ৩৭৫টি শেয়ার হাত বদলের মাধ্যমে ৩৪ কোটি ৯১ লাখ চার হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ব্লকে ৫০ কোটি চার লাখ ৬১ হাজার টাকার বা ১৪৩ শতাংশ শেয়ার বেশে লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ ১৬ কোটি ৯৯ লাখ ৮৭ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে ব্র্যাক ব্যাংকের। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১১ কোটি ছয় লাখ ৬৪ হাজার টাকার স্কয়ার ফার্মার এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ ১০ কোটি ৩৬ লাখ ৪৩ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে এস কে ট্রিমসের।
এ ছাড়া আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের পাঁচ লাখ ৮৫ হাজার টাকার, বঙ্গজের পাঁচ লাখ ৬৭ হাজার টাকার, কপারটেকের ৩১ লাখ ছয় হাজার টাকার, গোল্ডেন হার্ভেস্ট এগ্রোর ১১ লাখ ৪৩ হাজার টাকার, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইলের ৩৭ লাখ ৫১ হাজার টাকার, আরডি ফুডের ১৩ লাখ ৩০ হাজার টাকার, রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সের ছয় লাখ ৩৯ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement