চার হাজার কোটি টাকা মূলধন হারাল ডিএসই
পিই রেশিও কমেছে ১.২৬ শতাংশ; গড় লেনদেন কমে ৪৬২ কোটি টাকায়- অর্থনৈতিক প্রতিবেদক
- ০৮ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০
পতনের মধ্য দিয়ে পার হলো দেশের পুঁজিবাজারের আরো একটি সপ্তাহ। সদ্যসমাপ্ত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে। ফলে সপ্তাহজুড়ে ১ দশমিক ২৭ শতাংশ সূচক কমেছে। এ সময় পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে দুই দিন মূল্যসূচক সামান্য বাড়লেও বাকি তিন দিন বড় পতন হয়েছে। সেই সাথে সপ্তাহজুড়ে কমেছে টাকার অঙ্কে লেনদেনের পরিমাণ। লেনদেন কমে যাওয়ায় আগের সপ্তাহের চেয়ে পিই রেশিও কমেছে ১ দশমিক ২৬ শতাংশ। পতনের বাজারে পড়ে সার্বিকভাবে প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা বাজার মূলধন হারিয়েছে প্রধান ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ১৪০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৯৪টির। আর ২১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। গত সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৬০ দশমিক ১০ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ২৭ শতাংশ। এ ছাড়া ডিএসই শরিয়াহ সূচক কমেছে ২৬ দশমিক ৩২ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৪৩ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি বাড়ে দশমিক ৩৯ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। আর ডিএসই-৩০ আগের সপ্তাহের তুলনায় কমেছে ৪১ দশমিক ৮৯ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৫৪ শতাংশ। আগের সপ্তাহে এ সূচকটি কমে ২ দশমিক ৯২ পয়েন্ট বা দশমিক ১৮ শতাংশ।
এ দিকে ডিএসইতে লেনদেনের গতিও কিছুটা কমেছে। দৈনিক গড় লেনদেনের পরিমাণ সাড়ে চার শ’ কোটি টাকার কিছুটা ওপরে ছিল। গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড় লেনদেন ছিল ৪৬২ কোটি ১৯ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৪৭৫ কোটি ২১ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ১৩ কোটি ২ লাখ টাকা বা ২ দশমিক ৭৪ শতাংশ। আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে দুই হাজার ৩১০ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় দুই হাজার ৩৭৬ কোটি ৬ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে ৬৫ কোটি ৮ লাখ টাকা বা ২ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমায় সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৫২ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা; যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল তিন লাখ ৫৬ হাজার ৭০৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে চার হাজার ৩২৯ কোটি টাকা।
গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশের শেয়ার। কোম্পানিটির ৭৫ কোটি ১৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে; যা সপ্তাহজুড়ে হওয়া মোট লেনদেনের ৩ দশমিক ২৫ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৫৯ কোটি ৫২ লাখ টাকার, যা সপ্তাহের মোট লেনদেনের ২ দশমিক ৫৮ শতাংশ। ৫০ কোটি ৭২ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স। লেনদেনে এরপর রয়েছে ফরচুন সুজ, এসকে ট্রিমস, ইউনাইটেড ফাইন্যান্স, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ, প্রিমিয়ার ব্যাংক ও লংকাবাংলা ফাইন্যান্স।
পিই রেশিও : দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) আগের সপ্তাহের চেয়ে দশমিক ১৮ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ২৬ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে ডিএসইতে পিই রেশিও অবস্থান করছে ১৪ দশমিক ৪৯ পয়েন্টে। এর আগের সপ্তাহে ডিএসইর পিই রেশিও ছিল ১৪ দশমিক ৬৭ পয়েন্ট। খাতভিত্তিক হিসেবে পিই রেশিও বিশ্লেষণে দেখা যায়, ব্যাংক খাতের পিই রেশিও অবস্থান করছে ৭ দশমিক ৪০ পয়েন্টে, সিমেন্ট খাতে ২৩ দশমিক ২০ পয়েন্ট, সিরামিক খাতে ২৪ দশমিক ৯০ পয়েন্ট, প্রকৌশল খাতে ১৪ পয়েন্ট, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে ২৫ দশমিক ৬০ পয়েন্ট, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে ১৩ দশমিক ২০ পয়েন্ট, সাধারণ বীমা খাতে ১৫ দশমিক ৪০ পয়েন্ট, তথ্য ও প্রযুক্তি খাতে ২১ দশমিক ১০ পয়েন্ট অবস্থান করছে।
ব্লক মার্কেট : বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ব্লক মার্কেটে মোট ৩০টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মোট ৬৯ লাখ ৬৩ হাজার ৫৭৬টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার আর্থিক মূল্য ৩৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। ব্লক মার্কেটে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ড্যাফোডিল কম্পিউটার্স লিমিটেডের শেয়ার। এই কোম্পানির ১৪ কোটি ৮০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। খুলনা পাওয়ার ৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। হাইডেলবার্গ সিমেন্ট ২ কোটি ৮৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করে তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা