২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

সূচকের উন্নতিতে সপ্তাহ শুরু পুঁজিবাজারে

-

দিনভর অস্থির ওঠানামার মধ্য দিয়ে পার করলেও সূচকের উন্নতি দিয়েই সপ্তাহ শুরু করেছে দেশের পুঁজিবাজার। রোববার দেশের দুই পুঁজিবাজারেই একই আচরণ দেখা গেছে। লেনদেনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বাজার আচরণ দেখে বিনিয়োগকারীরা যে চরম আস্থাহীনতায় ভুগছেন তাই প্রকাশ পাচ্ছিল। তবে দিনশেষে সূচকের উন্নতি কিছুটা হলেও স্বস্তি এনে দেয় বাজারে। কারণ গত সপ্তাহের শেষ দুই দিন বড় পতনের শিকার ছিল দেশের দুই পুঁজিবাজার।
প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক গতকাল ৭ দশমিক ০২ পয়েন্ট উন্নতি ধরে রাখে। ৪ হাজার ৭১০ দশমিক ৩৬ পয়েন্ট থেকে দিন শুরু করা সূচকটি রোববার দিনশেষে পৌঁছে যায় ৪ হাজার ৭১৭ দশমিক ৩৮ পয়েন্টে। এ সময় ডিএসই-৩০ ও ডিএসই শরিয়াহ সূচকের উন্নতি ঘটে যথাক্রমে ৪ দশমিক ১২ ও ২ দশমিক ৭৭ পয়েন্ট। এর আগে গত সপ্তাহে প্রধান সূচকটির ৬২ পয়েন্ট হারায় ডিএসই।
দেশের দ্বিতীয় পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক ও সিএসসিএক্স সূচকের উন্নতি ঘটে যথাক্রমে ২১ দশমিক ১৫ ও ১৪ দশমিক ৯৩ পয়েন্ট। এখানে সিএসই-৫০ ও সিএসই শরিয়াহ সূচকে যোগ হয় যথাক্রমে দশমিক ৩৬ ও ৩ দশমিক ৮১ পয়েন্ট।
সূচকের পাশাপাশি ঢাকা শেয়ারবাজারে লেনদেনেরও উন্নতি ঘটে গতকাল। বাজারটি গতকাল ৩৬৩ কোটি টাকার লেনদেন নিষ্পত্তি করে, যা আগের দিন অপেক্ষা ৪৪ কোটি টাকা বেশি। গত বৃহস্পতিবার ডিএসইর লেনদেন ছিল ৩১৯ কোটি টাকা। তবে লেনদেন কমেছে চট্টগ্রাম শেয়ারবাজারে। বাজারটি গতকাল ১২ কোটি টাকার লেনদেন নিষ্পত্তি করে। বৃহস্পতিবার এ বাজারে ১১০ কোটি টাকার লেনদেন নিষ্পত্তি হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, লভ্যাংশ ঘোষণার রেকর্ড তারিখ থাকায় প্রায় প্রতিদিনই ৮-১০টি কোম্পানির লেনদেন বন্ধ থাকছে। সাম্প্রতিক সময়ে পুঁজিবাজারের লেনদেন হ্রাস পাওয়ার এটিও একটি কারণ হিসেবে দেখছেন পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা। তারা এও মনে করেন, মন্দার কারণে ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে অনাগ্রহই এ মুহূর্তে বাজারের লেনদেন হ্রাস পাওয়ার মূল কারণ। মন্দা কাটিয়ে পুঁজিবাজার স্বাভাবিক আচরণে ফিরলে ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক সব বিনিয়োগকারীই বাজারে সক্রিয় হবেন এমনটিই মনে করছেন তারা।
রোববার সূচকের উন্নতি দিয়েই লেনদেন শুরু হয় দুই পুঁজিবাজারে। ঢাকা শেয়ারবাজারে প্রধান সূচকটি ৪ হাজার ৭১০ দশমিক ৩৬ পয়েন্ট থেকে যাত্রা করে বেলা সোয়া ১১টার দিকে পৌঁছে যায় ৪ হাজার ৭২৪ পয়েন্টে। কিন্তু এর পরই বিক্রয়চাপ নি¤œমুখী করে তোলে বাজার সূচককে। মাত্র ১৫ মিনিটে ডিএসই সূচক নেমে আসে ৪ হাজার ৭১১ পয়েন্টে। এভাবে প্রতি মুহূর্তেই চলছিল সূচকের ওঠানামা। বিক্রয়চাপ সামান্য হ্রাস পেলে যখনই সূচক ঊর্ধ্বমুখী রূপ নিচ্ছিল এর কিছুক্ষণের মধ্যেই আবার বাড়ছিল চাপ। একপর্যায়ে দিনের সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৭২৬ পয়েন্টে ওঠে ডিএসই সূচক। এভাবে অস্থির ওঠানামার পর দিনশেষে সূচকের কিছুটা উন্নতি ধরে রাখে বাজারগুলো।
দুই পুঁজিবাজারে বেশির ভাগ কোম্পানির মূল্যবৃদ্ধি ঘটে গতকাল। কোন কোন খাতে শতভাগ কোম্পানির মূল্যবৃদ্ধি ঘটে। এগুলো ছিল সেবা, টেলিকমিউনিকেশন, পাট, কাগজ ও বিনোদন। তবে ব্যতিক্রম ছিল ব্যাংক ও মিউচুয়াল ফান্ড। এ দু’টি খাতে দর হারায় বেশির ভাগ কোম্পানি। ঢাকা শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া ৩৪৮টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১৬৭টির মূল্যবৃদ্ধির বিপরীতে দর হারায় ১২৪টি। অপরিবর্তিত ছিল ৫৭টির দর। অপর দিকে চট্টগ্রাম শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া ২৪৬টি সিকিউরিটিজের মধ্যে ১১৭টির দাম বাড়ে, ১০২টির কমে এবং ২৭টি সিকিউরিটিজের দাম অপরিবর্তিত থাকে।
ডিএসইতে গতকাল লেনদেনের শীর্ষে ছিল ন্যাশনাল টিউবস। ১৫ কোটি ১৭ লাখ টাকায় কোম্পানিটির ৯ লাখ ৩৮ হাজার শেয়ার হাতবদল হয় গতকাল। ১১ কোটি ৪৫ লাখ টাকায় ১০ লাখ ২৭ হাজার শেয়ার বেচাকেনা করে টেলিকমিউনিকেশন খাতের কোম্পানি বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস ছিল দ্বিতীয় স্থানে। ডিএসইর লেনদেনের শীর্ষ দশ কোম্পানির অন্যগুলো ছিল যথাক্রমে সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স, লঙ্কা-বাংলা ফিন্যান্স, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকস, ওয়াটা কেমিক্যালস, ন্যাশনাল পলিমার, রূপালি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স ও সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল