জোড়াতালির কাঠের পাটাতনে অর্ধযুগ পারাপার!
- মো: কামাল হোসেন খান, বেতাগী (বরগুনা)
- ২৭ জুন ২০২৪, ১০:৫৬
বরগুনার বেতাগী উপজেলার সদর ইউনিয়নের লক্ষীপুরা গ্রামের আকনবাড়ির লোহার সেতু এখন বেহাল দশা। জোড়াতালির কাঠের পাটাতন দিয়ে অর্ধযুগ অতিক্রম করলেও আর সংস্কার করা হয়নি। নড়বড়ে সেতু দিয়ে যেকোনো সময় ধসে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ও যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়ার আশঙ্কা করেছে এলাকাবাসী।
জানা গেছে, উপজেলার বেতাগী সদর ইউনিয়নের ভোলানাথপুর বাজারসংলগ্ন লক্ষীপুরা গ্রামের আকনবাড়ি লোহার সেতুটি ২০০৭-২০০৮ অর্থ বছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ ৯১ লাখ ৬৩ হাজার ৫৭৭ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়। ২০১৮ সালে ১৬ মে বেলা ১১টায় এ সেতুর মধ্যভাগের লোহার অ্যাঙ্গেল ও সিমেন্টের স্লাব ভেঙে পড়ে যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে যায়। এই অবস্থায় দুই সপ্তাহ ধরে ওই এলাকার জনসাধারণ খেয়ার নৌকায় পারাপার করতো। এরপর দুই সপ্তাহ পরে উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে সেতুর মধ্যভাগে ভাঙা অংশে কাঠের পাটাতন দিয়ে মেরামত করা হয়। সেই থেকে সেতুটি অর্ধযুগ অতিবাহিত হলেও সংস্কার করা হয়নি। সেতুর মধ্যভাগের লোহার কাঠামোর মেইন পোস্ট হেলে গিয়ে টপ স্লাব দেবে গেছে। লোহার অ্যাঙ্গেলগুলো মরিচা ধরে ক্ষয়ে ক্ষয়ে নাজুক হয়ে পড়েছে। নড়বড়ে এ সেতু দিয়ে পারাপার নিয়ে দুই উপজেলার মানুষ হুমকিতে রয়েছে।
লক্ষীপুরা গ্রামের বাসিন্দা মো: তারিকুল আরম বাবু খলিফা বলেন, ‘সেতুর লোহার অ্যাঙ্গেল ও নাটগুলো মরিচা পড়ে ধসে পড়েছে, যেকোনো সময় সেতু ভেঙে বড় ধরনের দুর্ঘটনার সম্ভাবনা রয়েছে।’
মুক্তিযোদ্ধা মো: রেজাউল করিম ফারুক সিকদার বলেন, ‘বেড়েরধন নদীতে লক্ষীপুরা আকনবাড়ির খেয়াঘাট নাম এলাকার লোহার সেতুটি নাজুক অবস্থায় রয়েছে। জনসাধারণের দুর্ভোগ লাঘবে এটি দ্রুত নির্মাণ করা দরকার।’
সরেজমিনে দেখা গেছে, পণ্যবাহী কোনো যানবাহন চলাচল করলে দোলনার মতো দুলতে থাকে। এ সেতু দিয়ে প্রতিদিন বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ প্রয়োজনীয় কাজে বেতাগী সদর ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও পৌর শহরে আসে। এছাড়া ভোলানাথপুর, বাসন্ডা, বেতাগী পৌরসভা, পাশের উপজেলা মির্জাগঞ্জের শ্রীনগর, চৈতা এবং মহিষকাটা এলাকায় যাতায়াত করে। প্রতিদিন সহস্রাধিক মোটরবাইক, মাহিন্দ্রা, প্রাইভেটকার, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, রিকশা, ট্রাক ও পণ্যবাহী ভারী যানবাহন চলাচল করে। এতে দিন দিন সেতুটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বেতাগী সদর ও লক্ষীপুরা গ্রামসহ দুই পাড়ের ৫০ হাজার মানুষের দুর্ভোগে রয়েছে।
ভোলানাথপুর গ্রামের বাসিন্দা, মুক্তিযোদ্ধা ও অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল হামিদ বলেন, ‘এই এলাকার মানুষের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে বেড়েরধন নদীর আকনবাড়ির লোহার ব্রিজ। এটা অতি শিগগিরই পুর্ন:সংস্কার করা দরকার।’
বেতাগী সদর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মো: হুমায়ুন কবির খলিফা বলেন, ‘প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করে অতি শিগগিরই কাজ শুরু করা হবে। ’উপজেলা প্রকৌশলী শেখ তৌফিক আজিজ বলেন, এ সেতু পুর্ন:নির্মাণের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এর মধ্যে প্রস্তবনা পাঠানো হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ হলেই কাজের প্রাক্কলন অনুযায়ী করা হবে।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা