১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ঘূর্ণিঝড় ‘রোমাল’ এখনো তাণ্ডব চালাচ্ছে

- ছবি : নয়া দিগন্ত

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে তাণ্ডব চালাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। সোমবার সকালেও চলছে ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডব, সাথে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি ও দমকা বাতাস। ভেঙে পড়েছে কয়েক হাজার গাছপালা। এছাড়াও জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেলে আজ সোমবার ক্ষতির পরিমান বেড়ে যাবে।

এ দিকে, পায়রা ও শ্রীমন্ত নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপজেলার নিম্নাঞ্চল তলিয়ে মাছ ও কৃষির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিধ্বস্ত হয়েছে কাঁচাঘর-বাড়ি, মসজিদ এবং উপজেলায় বিভিন্ন পয়েন্টের বেড়িবাঁধ। চারদিকে অন্ধকার আর জলোচ্ছ্বাসের পানিতে ভাসছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ৪১ হাজার মানুষ।

মির্জাগঞ্জ সাব স্টেশন পল্লী বিদ্যুৎয়ের এজিএম মো: মেহেদী হাসান জানান, মির্জাগঞ্জ নয় পটুয়াখালী জেলা থেকে পল্লী বিদ্যুৎ বন্ধ রাখা হয়েছে। ঝড় কমলে লাইন চেক করে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা চালু করা হবে।

এ দিকে, রেমালের তাণ্ডব লীলা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার কারণে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক আরো বেড়েছে। রাতে কয়েক ফুট পানির নিচে সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। পানিতে প্লাবিত হওয়ায় অনেক পরিবারের উনুনে আজ হাঁড়ি উঠবে না বলে জানান অনেকেই।

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে রোববার সকাল থেকেই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন জেলার অধিকাংশ এলাকা। উপজেলা সদরে নেই ১২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ। উপজেলার প্রায় অধিকাংশ এলাকায় সারাদিনই বিদ্যুৎ ছিল না। কিন্তু পল্লী বিদ্যুৎ রোববার সন্ধ্যা থেকে পুরোপুরি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।

উপজেলার পূর্ব সুবিদখালী গ্রামের শ্যামল হাওলাদার বলেন, ‘শ্রীমন্ত নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে রোববার রাত ১২টার দিকে উপজেলা ভূমি অফিসের সামনের সড়কের হাঁটু সমান পানিতে তলিয়ে পূর্ব সুবিদখালী এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, সিডর ও আইলার মতো ঘূর্ণিঝড় দেখেছি কিন্তু জলোচ্ছ্বাস এতো দীর্ঘস্থায়ী হয়নি।

একই গ্রামের নুরজামাল বলেন, বাহিরে শুধু থৈ থৈ করছে পানি। সিডরকেও হার মানিয়েছেন এ ঘূর্ণিঝড়কে। আমার মাছের ট্রলার সিডরেও ডুবে নাই যা ঘূর্ণিঝড় রেমালে ডুবে গেছে। ৭ থেকে ৮ ফুট জলোচ্ছ্বাসের মাছের ঘের আর কৃষি তো প্রায় শেষ।

মির্জাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে দুই সহস্রাধিক লোকজন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। তবে, রাতে পানির তোড় আরো মানুষ আশ্রয় নিয়েছে আশ্রয়কেন্দ্রে।

তিনি আরো বলেন, রোববার রাতে তাদেরকে শুকনো খাবার দেয়া হয়েছে। প্রস্তুত আছে চারটি মেডিক্যাল টিম। খোলা হয়েছে একটি কন্ট্রোল রুম।

তবে, পানি না কমলে দুর্ভোগ আরো বাড়বে বলেও জানান তিনি।


আরো সংবাদ



premium cement