আমতলীতে নির্মাণশ্রমিককে চোর সন্দেহে নির্যাতন : গ্রেফতার ১

আমতলীতে নির্মাণশ্রমিক আব্দুর রাজ্জাক মাতুব্বরকে চোর সন্দেহে আটককরী ও নির্যাতনকারী কবির হাওলাদারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার দুপুরে তাকে পুলিশ আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে আমতলী পৌর শহরের পুরাতন বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

জানা গেছে, উপজেলার মধ্যচন্দ্রা গ্রামের শানু মাতুব্বরের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক মাতুব্বর (২০) মাসিক চুক্তিতে আমতলী উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মো: মতিয়ার রহমানের নির্মাণশ্রমিক হিসেবে কাজ করছে। বুধবার দুপুরে রাজ্জাক পৌর শহরের পুরাতন বাজার এলাকায় ড্রেনে নির্মাণ কাজ করছিলেন। ওই সময় ওই এলাকার পুলিশের সোর্স মুরগী ব্যবসায়ী কবির হাওলাদার (৩৮) ও তার সহযোগীরা চোর সন্দেহে রাজ্জাককে ধরে নিয়ে যায়। পরে প্রয়াত অমল পালে চালের গোডাউনে আটকে রেখে তাকে বেধরক মারধর করেন। হাত-পায়ে ধরেও তাদের নির্যাতন থেকে রক্ষা পাননি রাজ্জাক। প্রায় আড়াই ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন চালায় তারা। পরে চালের গোডাউন থেকে কবির হাওলাদার ও তার সহযোগীরা হাবিব হোটেলে নিয়ে পুনরায় মারধর করে এমন দাবি রাজ্জাকের।

খবর পেয়ে তার ভাই মো: সামসুল আলম মাতুব্বর ঘটনাস্থলে গেলে তাকেও তারা মারধর করে। পরে পুলিশ গিয়ে আব্দুর রাজ্জাককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। ওই দিন রাতে স্বজনরা তাকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। বর্তমানে তিনি ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

ওই ঘটনায় বুধবার রাতে আমতলী থানায় কবির হাওলাদারকে প্রধান আসামি করে আব্দুর রাজ্জাকের বড় ভাই মো: সামসুল আলম মাতুব্বর অজ্ঞাত ছয়জনের নামে থানায় মামলা করেন।

এদিকে চোর সন্দেহে আব্দুর রাজ্জাককে নির্যাতনের একটি ভিডিও বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরে নিন্দার ঝড় ওঠে এবং কবির হাওলাদারসহ ঘটনার সাথে জড়িতদের শাস্তি দাবি করেন সচেতন মহল।

অভিযোগ রয়েছে, কবির হাওলাদার আমতলী থানার কিছু পুলিশ সদস্যদের ছত্রছায়ায় মানুষকে বিভিন্নভাবে হয়রানী করে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাতে নির্যাতনকারী মো: কবির হাওলাদারকে পুলিশ পৌর শহরের পুরাতন বাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। কবিরকে গ্রেফতার করায় এলাকার মানুষের মাঝে স্বস্থি ফিরে এসেছে।

নির্যাতনের শিকার আহত রাজ্জাক মাতুব্বর নির্যাতনকারী কবির হাওলাদারকে গ্রেফতারের খবরে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এ ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

আমতলী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম মিজানুর রহমান বলেন, 'কবিরকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়।’ তিনি আরো বলেন, ভিডিও ফুটেজ দেখে ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।