২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

পাখির জন্য কৃষকের কারেন্ট জালের ফাঁদ!

- ছবি - নয়া দিগন্ত

বরগুনা উপকূলে কৃষকসহ প্রায় সবার চিকন লাইনের অবৈধ কারেন্ট জাল ব্যবহারের প্রবনতা দিন দিন বেড়েই চলছে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী প্রসাশনের চোখ ফাঁকি দিয়ে, আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে জেলার সর্বত্র দেদারছে অবৈধ কারেন্ট জাল বিক্রি করছেন। যার ফলে এলাকার কৃষকরা তাদের ফসল ও ফল রক্ষার জন্য সহজ পদ্ধতি হিসেবে এ অবৈধ কারেন্ট জাল কিনে তাদের জমিতে টাঙ্গিয়ে দিচ্ছেন। আর এসব কারেন্ট জালের ফাঁদে আটকা পরে প্রাণ হারাচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি।

ভোরে কিচিরমিচিরে বোঝা যায়, উপকূলীয় এলাকায় দেশী প্রজাতির পাখির আধিপত্য বেশ। এসব পাখি স্থানীয় মানুষের গাছ-গাছালির ফল, পোকা-মাকড় খেয়েই বেঁচে থাকে। ঘর-বাড়ির আঙিনায় বা লাগোয়া ফলের বাগানে চড়ই, শালিক, ঘুঘু, ক্যাচক্যাচি, বুলবুলিসহ নানা প্রজাতির পাখি সব সময়েই বিচরণ করে থাকেন। কিন্তু এলাকায় অবৈধ কারেন্ট জালের প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় তাতে আটকে পাখিগুলো প্রাণ হারাচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, গ্রামের ক্ষেত-খামারের ফসল, মাছ ও ফল রক্ষা করার জন্য চারদিকে বেড়া ও গাছে অবৈধ জাল ব্যবহার করা হয়েছে। আগে ক্ষেতের বেড়ায় বাঁশ, সরু কাঠ, পাঠকাঠি, ধইঞ্চা প্রভৃতির ব্যবহার হলেও ইদানিং তা হচ্ছে না। চিকন নাইলনের সূতার জাল (কারেন্ট জাল) ব্যবহার করার প্রবনতা বেড়েই চলছে। এতে ফসল ও ফল রক্ষা করা যাচ্ছে ঠিকই, কিন্তু বুঝে বা না বুঝেই চাষিরা হত্যা করছেন নানা প্রজাতির পাখি। এতে প্রাকৃতিক ভারসাম্য হারানোর আশঙ্কা করছেন স্থানীয় সচেতন মহল। তাদের ধারণা, এর ফলে হুমকিতে পড়বে জীববৈচিত্র্য।

আজ শনিবার সকাল ১০টার সময় দৈনিক নয়া দিগন্তের এ প্রতিবেদকের সাথে দেখা মেলে বরগুনা সদর সদর ইউনিয়নের কড়ইতলা গ্রামের আহসান হাবির। তখন দেখে যায়, তার একটি বড় আম বাগান রয়েছে। তিনি প্রায় দেড় একর জমিতে আম, জাম ও নানা ফলের বাগান গড়ে তুলেছেন। আর সেই বাগানে প্রতিনিয়ত ঝাঁকে-ঝাঁকে শালিক, বুলবুলিসহ নানা প্রজাতির পাখি এসে ভিড় করতে দেখা যায়।

এসময় তিনি জানান, এসব পাখির হাত থেকে ফল রক্ষার জন্য গাছে জাল দিয়ে ঢেকে দিয়েছেন। এতে ফল খেতে আসা প্রাণীগুলো জালে আটকা পড়ছে এবং পরবর্তীতে না খেয়ে বা মানুষের হাতে মারা পড়ছে। এসব পাখির মধ্যে শালিক ও বুলবুলির সংখ্যাই বেশি রয়েছে।

স্থানীয় জব্বার নামের এক কৃষক জানান, অবৈধ কারেন্ট জালের প্রবণতা দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। ফলে সহজেই কৃষকরা তাদের জমির ফসল রক্ষার জন্য বাজার থেকে ক্রয় করে জালগুলো জুলিয়ে বা টাঙ্গিয়ে রাখেন। ফল রক্ষার নামে এসব জালে আটকা পড়ে পাখি মারা যাওয়া আমাদের জন্য খুবই বিপদের।

তিনি বলেন, উপকূলের পাখিরা আমাদের ফসলের ক্ষেতের ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ ও পোকামাকড়গুলো খেয়ে থাকে। পাখি হত্যা বন্ধে প্রসাশনের যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি করেন তিনি।

বন বিভাগের উপকূলীয় বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, অবৈধ কারেন্ট জাল দিয়ে ফলবাগান রক্ষার নামে যেভাবে পাখি হত্যা করা হচ্ছে, এটা অন্যায়। এতে প্রকৃতি ভারসাম্য হারাবে। পাখি পরিবেশের জন্য বেশ উপকারী প্রাণী। এরা ক্ষেত খামারের ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ খেয়ে ফসল রক্ষা করে থাকে।

এ বিষয়ে সদর উপজেলা ইউএনও ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ কাওছার হোসেন দৈনিক নয়া দিগন্তকে বলেন, বাজার থেকে অবৈধ কারেন্ট জাল বন্ধে খুব দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর ফলন রক্ষার নামে জাল দিয়ে কোনো প্রাণী হত্যা করা যাবে না। বন্যপ্রাণী আইনে ফাঁদ পেতে কোনো প্রাণী হত্যা করা আইনত অপরাধ।


আরো সংবাদ



premium cement
সকল কাজের জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতার অনুভূতি থাকতে হবে : মাওলানা হালিম বিএনপি জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি করে : ড. মঈন খান সাজেকে পাহাড়ি খাদে পড়ে মাহিন্দ্রচালক নিহত জমি রেজিস্ট্রি করে না দেয়ায় বাবার কবরে শুয়ে ছেলের প্রতিবাদ ইসরাইলি হামলায় গাজায় আরো ৭১ জন নিহত পানছড়ি উপজেলায় চলমান বাজার বয়কট স্থগিত ঘোষণা আওয়ামী লীগ দেশের স্বাধীনতাকে বিপন্ন করেছে : দুদু যুক্তরাষ্ট্র টি-টোয়েন্টি দলে নিউজিল্যান্ডের এন্ডারসন লড়াই ছাড়া পথ নেই : নোমান জার্মানির অর্থ যেভাবে সিরিয়ায় যুদ্ধাপরাধে ব্যবহার হচ্ছে জার্মানিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোশাররফ হোসেনের মেয়াদ বাড়ল

সকল