২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

কলেজছাত্রকে অপহরণের পর জোর করে বিয়ে করলেন তরুণী!

কলেজছাত্রকে অপহরণের পর জোর করে বিয়ে করলেন তরুণী! - ছবি : সংগৃহীত

পটুয়াখালী সরকারি কলেজের এক ছাত্রকে অপহরণের পর অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে জোরপূর্বক বিয়ে করার অভিযোগ উঠেছে তরুণীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই তরুণী ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পটুয়াখালী সরকারি কলেজের ছাত্র নাজমুল আকনকে (২৩) বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রেম ও বিয়ের প্রলোভন দেখান ইশরাত জাহান পাখি (২৫) নামের ওই তরুণী। কিন্তু তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গত ২৭ সেপ্টেম্বর পটুয়াখালী লঞ্চঘাট এলাকা থেকে নাজমুলকে চোখ বেঁধে অপহরণ করা হয় তাকে। পরে ২৮ সেপ্টেম্বর অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে সাত থেকে আটজন ব্যক্তি একটি নীল কাগজে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করে। ধারণা করা হচ্ছে, এ দিয়ে তারা একটি কাবিননামা তৈরির পাঁয়তার করেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নাজমুল পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলায় ইশরাত জাহান পাখি (২৫) নামের ওই তরুণীসহ আরো অজ্ঞাত ৬ থেকে ৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে পটুয়াখালী সদর থানার ওসিকে এজাহার নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

এদিকে নাজমুলকে জোরপূর্বক বিয়ে করার একটি ভিডিও আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। আর মামলা দায়েরের পর ১৫ অক্টোবর দুপুরে ওই তরুণী নিজেকে নাজমুলের স্ত্রী দাবি করে নাজমুলের বাবা’র বাড়ি মির্জাগঞ্জে অবস্থান নেন। এ ঘটনায় পুরো মির্জাগঞ্জ এলাকায় চাঞ্চল্যর সৃষ্টি হয়েছে।

নাজমুল মির্জাগঞ্জ উপজেলার মির্জাগজ্ঞ ইউনিয়নের জালাল আকনের ছেলে এবং অভিযুক্ত নারী ইশরাত জাহান পাখি একই উপজেলার গাজিপুর এলাকার মো: আউয়াল হোসেনের মেয়ে।

নাজমুলের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ্ আল নোমান জানান, তার মক্কেল নাজমুল পটুয়াখালী সরকারি কলেজের অনার্স ৪র্থ বর্ষের নিয়মিত ছাত্র এবং সে সরকারি কলেজের আবাসিক হোস্টেলে থাকেন। আসামি ইশরাত জাহান পাখি দীর্ঘ দিন ধরে নাজমুলকে মোবাইল ফোনে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রেমের প্রস্তাবসহ বিয়ের প্রলোভন দেখায়।

এদিকে নাজমুলকে অপহরণ এবং পরে জোরপূর্বক বিয়ে করার একটি ভিডিও ফুটেজ আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, একটি কক্ষে এক নারীর (ইশরাত জাহান পাখি) বাম পাশে নাজমুল বসে আছেন, পেছন থেকে নাজমুলের মাথার দুইদিক থেকে এক ব্যক্তি ধরে রেখেছে। সেখানে আর কয়েকজনের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। এসময় ওই নারীকে নীল কাগজে স্বাক্ষর করতে দেখা গেছে। স্বাক্ষর গ্রহণের পর নাজমুলকে মিষ্টি খাইয়ে দিলে নাজমুল তা মুখ থেকে ফেলে দেয়।

এ বিষয়ে ইশরাত জাহান পাখি সাংবাদিকদের বলেন, নাজমুলের সাথে তার দীর্ঘ দুই বছর প্রেমের সম্পর্ক ছিল এবং নাজমুল নিজ ইচ্ছায় বিয়ে করেছেন। এখানে অপহরণ কিংবা জোরপূর্বক বিয়ে করার যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এ কারণে বর্তমানে তিনি নাজমুলের বাড়িতে অবস্থান করছেন।

পটুয়াখালী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: মনিরুজ্জামান জানান, আদালতের নির্দেশে মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল