২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ভাণ্ডারিয়ায় কবর দেয়ার আগে কেঁদে উঠল ‘মৃত’ নবজাতক

ভাণ্ডারিয়ায় কবর দেয়ার আগে কেঁদে উঠল ‘মৃত’ নবজাতক - প্রতীকী ছবি

মৃত ঘোষণার পর কবর দিতে গেলে হঠাৎ কেঁদে উঠেছিল নবজাতক। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জন্ম হওয়ার কিছুক্ষণ পর নবজাতকটিকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসকর ও নার্স। এরপর শিশুটিকে কবর দিতে কার্টনে করে নিয়ে আসা হয় বাড়িতে। কার্টনে থাকার দুই ঘণ্টা পরে নবজাতক শিশুকে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কবরস্থানে নেয়ার আগে স্থানীয় এক আলেম মৃত নবজাতককে দেখার জন্য কার্টনটি খোলেন। আর তখনই কেঁদে ওঠে নবজাতক। ‘অলৌকিকভাবে বেঁচে উঠার খবর পেয়ে শিশুটিকে এক নজর দেখার জন্য ভিড় করে শত শত মানুষ। বৃহস্পতিবার ভাণ্ডারিয়া উপজেলার পাশের কানুদাশকাঠী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার এসব তথ্য জানান শিশুটির বাবা মো: ফোরকান মৃধা। কেঁদে ওঠার পর নবজাতকে দ্রুত ভাণ্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকের পরামর্শ মতে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পাঠানো হয়। ওই হাসপাতালেই বর্তমানে সে শিশু বিভাগের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

শিশুটির বাবা মো: ফোরকান মৃধা ভাণ্ডারিয়া পৌর শহরের একটি ভাড়াটিয়া দোকানে ফ্রিজ মেকারের কাজ করেন। তার গ্রামের বাড়ি ভাণ্ডারিয়া উপজেলার পাশের রাজাপুরের গালুয়া ইউনিয়নের কানুদাশকাঠী গ্রামে।

ঘটনার বিবরণে শিশুটির বাবা জানান, বৃহস্পতিবার সকালে তার স্ত্রী বিলকিসের পেটে ব্যথা শুরু হয়। পরে সাড়ে ৯টার দিকে তাকে ভাণ্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানের সিনিয়র নার্স ফাহিমার কাছে নিয়ে গেলে তিনি স্ত্রীর অবস্থা জানতে একটি আল্ট্রাসোনোগ্রাম করে ডাক্তারকে দেখাতে বলে। স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতাল সংলগ্ন লাবন্য ক্লিনিকে আল্ট্রাসোনোগ্রাম করতে গেলে স্ত্রীর প্রসব বেদনা শুরু হয় এবং সেখানেই একটি ছেলে সন্তান প্রসব হয়। তখন ওই ক্লিনিকের চিকিৎসক আমাদের শিশুকে মৃত ঘোষণা করে এবং স্ত্রী বিলকিসকে ওষুধপত্র লিখে দেন। পরে সেখানের নার্সদের সহযোগিতায় নবজাতকটিকে একটি কাগজের কার্টনে ভরে কবর দেয়ার জন্য বাড়িতে নিয়ে যাই। প্রায় দু’ঘণ্টা পর সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কবরস্থানে নেয়ার আগে স্থানীয় এক আলেম মৃত নবজাতককে দেখার জন্য কার্টনটি খোলেন। আর তখনই কেঁদে ওঠে শিশুটি। সাথে সাথে শিশুটিকে প্রথমে ভাণ্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসি।

ঘটনার সময় ক্লিনিকের সামনে ওষুধ কিনতে আসা নাসিমা বেগম বলেন, জন্মের কিছুক্ষণ পরে ওই ক্লিনিকের নার্স ও কর্তব্যরত চিকিৎসকরা কোনো প্রকার পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে একটি কার্টনে ভরে দেন।

শিশুটির বাবা মো: ফোরকান মৃধা বলেন, মা ও শিশু উভয়ই এখন সুস্থ। আমার ছেলেকে মহান আল্লাহ রক্ষা করেছে তাই সকলের কাছে দোয়া চাই।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে লাবন্য ক্লিনিকের ম্যানেজার ফিরোজ বলেন, রোগী আল্ট্রাসোনোগ্রাম করতে এসে হঠাৎ সন্তান প্রসব করেন। নার্সরা শিশুটি জন্মের পরে রক্তের মাখামাখি অবস্থায় তার পালস ও হার্টবিট চেষ্টা করেও পায়নি। নবজাতকের মা আমাদের ভর্তি রোগী নয়।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার ডা: ফয়সাল আহম্মেদ বলেন, শিশুটি ৭ মাসে জন্ম হয়েছে এবং শ্বাস কষ্ট দেখে মনে হয়েছে ওকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা গেলে বেঁচে যেতে পারে। তাই বরিশাল শেরে বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছি।


আরো সংবাদ



premium cement