১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেও প্রতিকার পাননি বেতাগীর নির্যাতিতা মরিয়ম

স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেও প্রতিকার পাননি বেতাগীর নির্যাতিতা মরিয়ম - নয়া দিগন্ত

বরগুনার বেতাগীতে নির্যাতিতা ও অসহায় মরিয়ম আক্তার তার স্বামী ইসমাইল হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেও কোনো প্রতিকার পাননি। আদালত থেকে সমন জারি হলেও বিচার প্রার্থী হতদরিদ্র পরিবারের সদস্য হওয়ায় নির্যাতনকারী স্বামী এখনো ধরা-ছোয়ার বাইরে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তালতলী উপজেলার কড়াইয়া বাড়িয়া গ্রামের মো: রুহুল আমিনের ছেলে ইসমাইল হোসেনের সাথে বেতাগী পৌরসভার আট নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো: ছোহরাব গোমস্তার মেয়ে মরিয়ম আক্তারের (২২) সাথে ২০১৫ সালে দুই লাখ টাকা দেন মোহরে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক বিয়ে হয়। তার বাবা হতদরিদ্র হয়েও ধার-দেনা করে উপহার হিসেবে প্রায় লক্ষাধিক টাকার মালামালসহ মেয়েকে শ্বশুর বাড়িতে পাঠান।

স্থানীয়রা আরো জানান, শ্বশুর বাড়িতে পাঠানোর কিছু দিন পরে তার স্বামী ইসমাইল হোসেন যৌতুক হিসেবে আরো টাকা পয়সা দাবি করেন। এ সময় মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে তার বাবা এনজিও ব্রাক থেকে লোন তুলে ৩৫ হাজার টাকা দেন। পরে আবার মাড়াই মেশিন কেনার নামে আরো এক লাখ টাকা দাবি করেন। বাবা ছোহরাব গোমস্তা বেতাগী পৌরসভা কার্যালয়ে তিন হাজার টাকা বেতনে ঝাড়ুদার পদে চাকরি করেন এবং মা রাশেদা বেগম মানুষের বাসায় পানি টানার কাজ করেন। তারা পুনরায় টাকা দিতে অপারগতা জানালে মরিয়ম আক্তারকে শারিরীকভাবে নির্যাতন করতে থাকেন।

মরিয়ম আক্তার অভিযোগ করে বলেন, ২০১৬ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর স্বামী রুহুল আমিন হঠাৎ মারধর শুরু করে তার ব্যবহৃত স্বর্ণের জিনিস খুলে নেন। ওই সময় মরিয়ম তিন মাসের অন্তসত্ত্বা ছিলেন। ওই দিন মরিয়মের স্বামী তাকে এলোপাথাড়ি চড়-থাপ্পর, কিল-ঘুষি ও লাথি মারেন। পরে লাথি মরিয়মের তল পেটে লাগায় প্রচণ্ড বেদনা ও রক্তক্ষরণে তার গর্ভের সন্তান নষ্ট হয়। ভরণ-পোষণ তো দূরের কথা মরিয়ম আক্তারের কোনো ধরনের খোঁজ না রেখে স্বামী ইসমাইল হোসেন মরিয়ম কে তালাক দেন। পরে তিনি আরেকটি বিয়ে করে ওই স্ত্রীকে নিয়ে সংসার করেন।

এ ব্যাপারে একাধিকবার আপস মীমাংসার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হওয়ায় স্বামী ইসমাইল হোসেনসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল বরগুনার বেতাগী পারিবারিক আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে ২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর আদালত আদেশ দেন মরিয়মের ভরণ-পোষণ ও মোহরানার দুই লাখ ১০ হাজার এক টাকা তাকে দেয়ার জন্য। এ আদেশে উল্লেখ করা হয় রায়ের ৬০ দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ অর্থ প্রদানের। তবে আদালত আদেশ দিলেও আজও তার সুফল পাননি মরিয়ম।

মরিয়মের বাবা ছোহরাব গোমস্তা অভিযোগ করেন, এ মামলায় তারা জামিনে বেরিয়ে ধরা-ছোয়ার বাইরে থাকায় বিচার প্রার্থী মরিয়ম প্রতিকারের আশায় বছরের পর বছর ঘুরছে। যা দেখার কেউ নেই।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল