২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

গলাচিপায় মাঁচা পদ্ধতিতে তরমুজ চাষে সফল চাষী

গলাচিপায় মাঁচা পদ্ধতিতে তরমুজ চাষে সফল চাষী - নয়া দিগন্ত

অসমেয় তরমুজ চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন গলাচিপার জাহাঙ্গীর ফরাজি(৪৫)। কঠিন পরিশ্রম আর বুদ্ধি খাটিয়ে কাজটা সহজ করে নিয়ে আজ সে স্বাবলম্বী। তার চাষকৃত তরমুজ দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন ভীড় জমাচ্ছেন পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার রতনদী তালতলী ইউনিয়নের তার বাগানে। সে বর্ষার মৌসুমে তরমুজ চাষ করে এলাকায় নজীর বিহীন নজর কেড়েছে। এ তরমুজ স্বাদে গুনে ও মানে খুবই ভালো। সে গলাচিপা উপজেলার গ্রামর্দ্দন গ্রামের সাধারন কৃষক মো. আব্দুল মজিদ ফরাজির ছেলে।

এলাকাবাসী ও জাহাঙ্গীর ফরাজীর সাথে কথা বলে জানা যায়, তরমুজ শুধু শীতকালে মাটিতে চাষ করা হয় এবং প্রচুর পরিমানে পানি দিতে হয়। তাহলে বর্ষাকালে হবেনা কেন এ রকম একটি প্রশ্ন তার মনে বার বার দাগ কাটতে লাগল। তারপর খুলনায় মাছের ঘেরের পাশে তরমুজ খেত দেখে অনুপ্রেরনা জাগল এবং নিজে এক পর্যায় সে মন স্থির করল আমিও বর্ষার মৌসুমে তরমুজ চাষ করবো। কিন্তু তার কাছে তরমুজ চাঁষ করার মত এত টাকা নেই। তার বাড়ির পাশে এনজিও বেসরকারী সংস্থা কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (কোডেক) থেকে চলতি বছরের জুলাই মাসের শেষের দিকে সংস্থাটির সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে এক লক্ষ টাকা লোন নেয়। লোন নিয়ে সব্জি চাষ ও তরমুজের ফলন ফলানোর জন্য ২০শতক জমিতে বেড তৈরী করে পাকিজা কোম্পানীর বীজ বপন করে। তারপরে যখন তরমুজের চারা বড় হয় তখন সে মাটির বেডের উপর জাল দিয়ে মাচা তৈরি করে দেন। প্রতিটি তরমুজের গড় ওজন আছে ৭-৯কেজি তার জমিতে প্রায় স্থানীয় মূল্যের আড়াই লক্ষ থেকে তিন লক্ষ টাকার তরমুজ রয়েছে। বর্তমানে তার তরমুজের বয়স হয়েছে দুই মাসের উর্ধ্বে।

এতে ২০ শতক জমিতে বেড করতে খরচ হয়েছে ছয় হাজার টাকা, বীজ ক্রয় করতে চার হাজার টাকা, জাল বাবদ খরচ আট হাজার টাকা ও দৈনিক দিন মজুর হিসেবে খরচ হয়েছে বার হাজার টাকা সর্ব সাকুল্যে তার খরচ হয়েছে ২৮হাজার থেকে ত্রিশ হাজার টাকা।

তার মতে, শীত মৌসুমের চেয়ে বর্ষার মেীসুমে তরমুজ চাষ করতে খরচ কম কেননা বর্ষার মৌসুমে পানি সেচ দিতে হয়না শুধু একটু জমি উঁচু হলেই হয়। তার এই তরমুজের ফলন ফলাতে আরেক বৈশিষ্ট্য হল কোন কিটনাশক ব্যবহার করা হয়নি। তার এই সব্জি ও তরমুজ চাষের সফলতার খবর এলাকা থেকে অন্য এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। এখন প্রতিদিন বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন পেশার মানূষ তার তরমুজ দেখার জন্য ভীর করেন। সে কি ভাবে বর্ষার মৌসুমে তরমুজ চাষ করেছেন তার কাছ থেকে তা শিক্ষা নিচ্ছেন। অত্র এলাকায় জাহাঙ্গীর ভাইয়ের কারণে আরো অনেক সফল উদ্যোক্তা তৈরি হবেন। এখন এলাকায় তরমুজ জাহাঙ্গীর নামে পরিচিত তরমুজ জাহাঙ্গীর বললেই সবাই তাকে চিনে। জাহাঙ্গীর ফরাজী বলেন, স্থানীয় লোকসহ সাংবাদিক ও দূর দূরান্ত থেকে তরমুজ ক্ষেত দেখতে অনেক লোক আসে এবং বর্তমানে তিনি ৯০শতাংশ জমির উপর নতুন করে বীজ বপন শুরু করেছে।

এ ব্যাপারে পানপট্টি শাখার কোডেক সংস্থার ম্যানেজার মো. আরিফ বিল্লাহ জানান, এ ধরনের উদ্যোক্তা পেলেই তাদের আমরা কৃষি লোন দিয়ে থাকি।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল