বরিশালে নির্যাতনে গৃহকর্মী হত্যা, মৃত্যুর ৪ মাস পর লাশ উত্তোলন
- মুলাদী (বরিশাল) সংবাদদাতা
- ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৮:৪৯
বরিশালের মুলাদীতে শিশু কন্যা নুরজাহান (১২) হত্যার চার মাস পর লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। রোববার উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ বজায়শুলী গ্রাম থেকে শিশুটির লাশ উত্তোলন করা হয়। নুরজাহান বজায়শুলী গ্রামের নজরুল ইসলামের মেয়ে।
নজরুল ইসলামের করা মামলা সূত্রে জানা যায়, আসামিরা অত্যন্ত দুর্দান্ত ও অসৎ চরিত্রের লোক। নজরুল ইসলাম অসহায় ও গরিব হওয়ার কারণে তার মেয়ে মোসা: নুরজাহান বেগম (১২) আসামিদের বাড়িতে কাজের মেয়ে হিসেবে কাজ করত। কিন্তু তারা প্রতিনিয়ত তার মেয়েটিকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতো। আসামিদের নির্যাতনের নুরজাহান বেগম অতিষ্ঠ হয়ে প্রায়ই কাজ ছেড়ে তাদের বাড়ি থেকে চলে আসতে চাইত। এ জন্য তারা প্রায়ই তাকে খুব মারধর করত। নির্যাতনে অতিষ্ট হয়ে এক পর্যায়ে নুরজাহান তার আত্মীয় স্বজনদের কাছে নির্যাতনের কথা জানানোর চেষ্টা করলে তার উপর তারা ব্যাপক নির্যাতন চালায়।
গত ২ মে ২০২০ইং তারিখ শনিবার সকাল ৮টার সময় আসামিরা তার ওপর শারীরিকভাবে নির্যাতন চালায়। এক পর্যায়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে। এরপর গলায় রশি বেঁধে চালতা গাছে ঝুলিয়ে দেয় এবং আত্মহত্যা করেছে বলে প্রপাগাণ্ডা চালায়। ঘটনা ঘামাচাপা দিতে কাউকে কোনো কিছু না জানিয়ে তড়িঘড়ি করে নুরজাহানকে বাড়িতে দাফন করে।
নুরজাহানের বাবা নজরুল ইসলাম ঢাকায় ভ্যান গাড়ী চালানোর সুবাদে দীর্ঘদিন পর বাড়িতে এসে তার মেয়ে হত্যার বিষয়টি জানতে পেরে মুলাদী থানায় মামলার চেষ্টা করে ব্যার্থ হন। এরপর মামলা অভিযোগ করতে না পেরে কোর্টে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার প্রেক্ষিতে আদালতে নির্দেশে মুলাদী থানা ২৯/০৭/২০২০ একটি মামলা রুজু করা হয়। যার নং-১২/১০৫।
বাদী উক্ত নিহতের লাশ উত্তোলন ও হত্যার আসল কারণ উৎঘাটনের জন্য আদালতের নিকট দাবি জানালে আদালত লাশটি উত্তোলনের নির্দেশ প্রদান করেন। কোর্টের আদেশ পেয়ে ৬ সেপ্টেম্বর রোববার মুলাদী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহ: শাহনুর জামান, মুলাদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা: মাসুম বিল্লাহ, মুলাদী সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুল আহসান, মুলাদী থানার অফিসার তদন্ত (মুজিবুর রহমান) খাসের হাট বাজার কমিটির সভাপতি লুৎফর পালোয়ান, ইউপি সদস্য নান্নু মল্লিক, আওয়ামী লীগ নেতা নান্নু রাড়ী, এসআই শহিদুল, সংঙ্গীয় পুলিশ ফোর্সের উপস্থিতিতে লাশটি উত্তোলন করা হয়।
মুলাদী উপজেলার সাংবাদিকবৃন্দ লাশ উত্তোলনের ও লাশটির কি কি পাওয়া গেছে সে তথ্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) ম্যাজিস্ট্রেট শাহনুর জামান কাছে ছবি তোলার অনুমতি চাইলে অনুমতি নাই বলে জানিয়ে দেন। এ বিষয় কোনো কথা বলতে রাজি হননি মুলাদী থানার তদন্ত ওসি মুজিবুর রহমান।
সাংবাদিকদের কাছে এলাকাবাসী এ ন্যাক্কার জনক হত্যার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন। নিহত নুরজাহানের চাচা আলতাফ শরীফ বলেন, অভিযুক্ত বেল্লাল সরদার ও তার পরিবার এর আগেও একটি হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলার আসামি। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আমার মেয়ের হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি জানাচ্ছি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা