২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আগুনমুখার গর্ভে চালিতাবুনিয়া!

আগুনমুখার গর্ভে চালিতাবুনিয়া - ছবি : নয়া দিগন্ত

সাগরকন্যা খ্যাত পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ইউনিয়ন চালিতাবুনিয়া। এখানে প্রায় ২০ হাজার মানুষের বসবাস। আগুনমুখা নদীর তীব্র স্রোতে প্রতিনিয়ত ভাঙ্গনের তীব্রতা বাড়ছে। এতে মাথা গোজার ঠাঁই নিয়ে দুশ্চিন্তায় ওই ইউনিয়নের বাসিন্দারা। সেই সাথে কমছে ভূখণ্ডের আয়তন। ভিটেবাড়ি ও ফসলি জমি হারিয়ে কেউ হয়েছেন ভূমিহীন, কেউ আবার নিঃস্ব। এ প্রতিকূলতা কাটিয়ে যখন তারা ঘুরে দাড়াঁনোর চেষ্টা করেন, তখন ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে সব হারিয়ে হচ্ছেন সর্বশান্ত। এরপরও যারা টিকে আছেন, বেড়িবাঁধ বিলীন হয়ে যাওয়ায় জোয়ারে পানি তোরে ডুবছেন আর ভাটায় ভাসছেন।
প্রতিনিয়ত তাদের আর্তনাদে আকাশ বাতাস ভারি হচ্ছে। অথচ তাদের রক্ষায় কেউ এগিয়ে আসছে না।

সরেজমিনে চালিতাবুনিয়া, উত্তর চালিতাবুনিয়া, মধ্য চালিতাবুনিয়া, বিবির হাওলা, গোলবুনিয়া গ্রামে এমন চিত্র দেখা গেছে। নদী ভাঙ্গনের কবলে পরে ধনী হয়েছে দিনমজুর! মধ্যবিত্তরা নিঃস্ব। এদের মধ্যে কেউ কেউ আশ্রয় নিয়েছেনে রাস্তার উপরে, কেউ আবার রাস্তার পাশে ডোবার উপরে মাচা পেতে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় একটি মাত্র আশ্রয় কেন্দ্র থাকলেও, তা আগুনমুখা নদীর গর্ভে বিলীন হয়েছে। দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় মাথা গোজার ঠাঁই নেই তাদের। যাদের ফসলি জমি আছে বেড়িবাঁধ না থাকায় ফসল চাষ নিয়ে বিপাকে তারা। প্রতিনিয়ত মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করেই বেচেঁ আছেন। তাই বেড়িবাঁধ নির্মাণও টেকসই ব্লক বসিয়ে চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নকে রক্ষা করার জোর দাবি জানায় এলাকাবাসী।

স্থানীয়রা জানান, আমাদের আশ্রয় স্থানটুকুও আগুনমুখার গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এখন আমাদের মাথা গোজার মত কোন জায়গা নেই। বেড়িবাঁধ না থাকায় জমিতে ফসল হচ্ছে না। তাই আমাদের মরণ ছাড়া কোনো উপায় নেই।

এ ব্যাপারে চালিতাবুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ জাহিদ হাওলাদার বলেন, এ ইউনিয়নে প্রায় ২০ হাজার মানুষের বসবাস। ইতোমধ্য ইউনিয়নের অনেক অংশ আগুনমুখা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। তাই আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সহ সবার কাছে অনুরোধ করছি যাতে নদী ভাঙ্গন থেকে চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নকে বাঁচানো হয়।

এ ব্যাপারে কলাপাড়া পানি উন্নায়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোঃ ওয়ালিউজ্জামান বলেন, চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের প্রায় চার কিলোমিটার জায়গা দীর্ঘদিন ধরে খোলা অবস্থায় আছে। এখানে বেড়িবাঁধসহ দুটি স্লুইজ গেট নির্মাণ প্রয়োজন। এটা করতে প্রায় ২৫ কোটি টাকা দরকার। ইনটারেক্ট থেকে এত টাকা দেয়া সম্ভাব হয় নাই। তাই আমাকে ডিপিপি করতে বলা হয়েছে। ডিপিপি পাস হলে স্থায়ীভাবে টেকসই কাজ করতে পারবো।


আরো সংবাদ



premium cement