১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

মুখিকচুতে কৃষকের হাসি

দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহের জন্য বস্তায় ভরা হচ্ছে মুখিকচু : নয়া দিগন্ত -

যশোরের চৌগাছায় মুখিকচু দামে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। উপজেলার সবচেয়ে বড় ও পাইকারি মুখিকচুরহাট চৌগাছা বাজার। শুক্রবার সাপ্তাহিক হাটের দিন। এ হাটে কাকডাকা ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত লাখ লাখ টাকার মুখিকচু বিক্রি করেন কৃষকেরা।
কৃষকদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য তারা সরাসরি এ হাটে তোলেন। পাইকারি দামে বিক্রি করেন কচু। রাজধানী ঢাকা, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া ঝিনাইদহ, মাগুরাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা পাইকারি ব্যবসায়ীরা ট্রাকবোঝাই করে কিনে নিয়ে যায় কচু।
জানা যায়, উপজেলার নারায়নপুর, স্বরূপদাহ, সুখপুকুরিয়া, হাকিমপুর, জগদিশপুর ও পাতিবিলা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম থেকে কৃষকেরা শত শত ভ্যান, আলম সাধু, ইজিবাইকযোগে বস্তায় ভরে চৌগাছা পাইকারি বাজারে নিয়ে আসেন মুখিকচু। কৃষকরা তাদের চাষের কচু নিয়ে আড়তে বসে থাকেন। বড় বড় পাইকারি ক্রেতাকে সেই কচু দেখে পছন্দ ও দামে পটে গেলে তা কিনে নেন। পরে নিজেদের বস্তায় ভরে ট্রাকেবোঝাই করে নিয়ে চলে যান রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে। শুক্রবার চৌগাছা পাইকারি বাজারে গিয়ে দেখা যায় পুরো বাজারটি কচুতে জমজমাট বা পরিপূর্ণ।
কচু বিক্রি করতে আসা উপজেলার পেটভরা গ্রামের শামছুল আলম জানান, এ বছর একবিঘা জমিতে মুখিকচুর আবাদ করেছি। খরচ বাদে প্রায় এক লাখ লাখ ৮০ হাজার টাকা লাভ হবে। পৌর এলাকার আরেক চাষি বেলেমাঠ গ্রামের শহিদুল ইসলাম বলেন, এ হাটে বাইরের বড় বড় পাইকারি ব্যবসায়ীরা থাকেন এবং প্রচুর চাহিদা থাকে। ফলে কচু বিক্রির সাথে সাথে আমাদের টাকাও পেয়ে যাই।
কয়েকজন চাষি জানান, আজ ভালো মানের কচু পাইকারি দাম দিচ্ছে ৫৩-৬০ টাকা কেজি দরে। তবে কখনো কমবেশি হয়।
স্থানীয় আড়ৎদার আজিজুর রহমান জানান, কৃষকেরা সরাসরি জমির কচু তোলার পরই হাটে নিয়ে আসেন। একদিকে যেমন বিক্রি করতে নির্দিষ্ট জায়গা পেয়েছেন; তেমনই ব্যবসায়ীরাও বিভিন্ন গ্রেডের কচু বাছাই করে সংগ্রহ করতে পারছেন। এতে উভয়ই লাভবান হচ্ছেন।
উপজেলার স্বরুপদাহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল কদর বলেন, কৃষকের ভাগ্য বদলে কাজ করছে উপজেলার পাইকারি কাঁচামাল ও মুখিকচুর হাঁটটি। বাজারজাতের সুবিধা থাকায় আগামীতে ব্যাপক হারে কচুচাষ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোসাব্বির হুসাইন বলেন, মুখিকচু একটি লাভজনক চাষ। উপজেলাজুড়ে মোট ৩২৫ হেক্টর জমিতে মুখিকচুর চাষ হচ্ছে। মুখিকচু দামে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। তা ছাড়া আগামীতে এ উপজেলায় ব্যাপকভাবে মুখিকচুর চাষ বৃদ্ধি পাবে।


আরো সংবাদ



premium cement