১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

লাইসেন্সবিহীন ওষুধের দোকানে সয়লাব দোয়ারাবাজার

ওষুধের আড়ালে অনেক ফার্মেসিতে নেশাজাতীয় ট্যাবলেট, সিরাপ বিক্রির অভিযোগ
-


সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলা সদরসহ ৯টি ইউনিয়নের বাজার ও জনপদে গড়ে উঠেছে শত শত ওষুধের দোকান। রাস্তার পাশে কিংবা অলিগলির মোড়ে গড়ে ওঠা এসব দোকানের অধিকাংশেরই নেই ড্রাগ লাইসেন্স কিংবা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন। এমনকি ওষুধের ব্যবসার আড়ালে অনেক ফার্মেসিতে নেশা জাতীয় নিষিদ্ধ ট্যাবলেট, সিরাপ বিক্রিরও অভিযোগ রয়েছে। অনেক ফার্মেসি পর্দার আড়ালে ছোট একটি কক্ষে বসে নিজেরাই রোগীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে নিরীহ ও দরিদ্র মানুষের বিশ্বাস ও আস্থাকে পুঁজি করে তাদের প্রতারণা করছেন এসব অর্থলোভী ফার্মেসি ব্যবসায়ীরা।

দোয়ারাবাজার উপজেলায় দু’টি এলসি স্টেশন, ভারত-বাংলাদেশের যৌথভাবে পরিচালিত বর্ডার হাটবাজার ও নদীগুলোতে বালু পাথরের কর্মযজ্ঞ হওয়ায় এখানে লাখ লাখ ভাসমান লোকের বসবাস। সীমান্তবর্তী এই অঞ্চলে এসব কাজ করার ফলে তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকিও বেশি। প্রায়ই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন তারা। আর অসুস্থ হলেই আর্থিক সঙ্গতির অভাবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে প্রথমেই তারা ছুটে যান স্থানীয় এসব ওষুধের দোকান ও হাতুড়ে ডাক্তারদের কাছে। ওই সব ওষুধের দোকানিরা রোগীদের সমস্যা শুনে আন্দাজের ওপর ভিত্তি করে ওষুধ দিয়ে দেন। এতে অধিকাংশ রোগীরা সুস্থ হওয়ার পরিবর্তে আরো অসুস্থ হয়ে পড়েন।

৯টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত দোয়ারাবাজার উপজেলার দোয়ারাবাজার উপজেলা সদর, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংলগ্ন এলাকা, টেবলাই বাজার, বাংলাবাজার, কলাউড়া মার্কেট, চৌধুরীপাড়া বাজার, হকনগর বাজার, বাঘমারা বাজার, নরসিংপুর বাজার, বালিউড়া বাজার, নাছিমপুর বাজার, চাইরগাঁও বাজার, বোগলাবাজার, কান্দাগাঁও বাজার, পশ্চিম বাংলাবাজার, চকবাজার, মহব্বতপুর বাজার, টেংরাবাজার, কাটাখালী বাজার, আমবাড়ী বাজার, শ্যামল বাজার, শ্রীপুর পান্ডারগাঁও বাজার, মজুর বাজার, বিয়ানীবাজার, দোহালিয়া বাজার, বঙ্গবন্ধু বাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন ছোট-বড় হাট-বাজারে দোকান মালিকরা নিজেরাই ডাক্তার সেজে রোগীদের ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন এবং ওষুধ বিক্রি করছেন। ওষুধের মূল্য সম্পর্কে সাধারণ মানুষের সঠিক ধারণা না থাকায় তারা নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ওষুদের বেশি দাম নিয়ে থাকেন। কোনো কোনো অসাধু ব্যবসায়ী মেয়াদোত্তীর্ণ ও সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ওষুধও দেদারছে বিক্রি করছেন। অপর দিকে, ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই তারা ঘুমের ওষুধ কিংবা নেশার নিষিদ্ধ ট্যাবলেট ও সিরাপ বিক্রি হচ্ছেন।

এ প্রসঙ্গে দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: আবু সালেহীন খান বলেন, উপজেলায় বৈধ লাইসেন্সধারী ফার্মেসির সংখ্যা কত সেটা আমার জানা নেই। এটা ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর জানবে। শুনেছি অনিবন্ধিত ফার্মেসি দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে কেউ কেউ। এদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।
এ ব্যাপারে দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নেহের নিগার তনু বলেন, উপজেলা প্রশাসন এ ব্যাপারে সচেতন রয়েছে। শিগগিরই অনিবন্ধিত ফার্মেসিগুলোর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement