১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ময়মনসিংহে ৪০ বছর পর ২০ কোটি টাকা মূল্যের ‘শেরপুকুর’ দখলমুক্ত

শেরপুরে পুকুর দখলমুক্ত করতে প্রশাসনের অভিযান : নয়া দিগন্ত -

চল্লিশ বছর পর ময়মনসিংহ নগরীর ঐতিহ্যবাহী ‘শেরপুকুর’ অবৈধ দখলমুক্ত করেছে জেলা প্রশাসন। নগরীর প্রাণকেন্দ্র আমলাপাড়ায় ২০ কোটি টাকা মূল্যের ২৫ শতক জমির ঐতিহ্যবাহী পুকুরটি প্রভাবশালীর জবরদখলে ছিল। গত বুধবার বিকেলে সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসাদুজ্জামান রনির নেতৃত্বে বুলডোজার দিয়ে জবরদখল করা অবৈধ স্থাপনাগুলো গুঁড়িয়ে দেয়া হয়।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সরকারের অর্পিত সম্পত্তিভুক্ত ২৫ শতাংশ জমিতে ‘শেরপুকুর’টি ময়মনসিংহ টাউন মৌজায় খতিয়ানভুক্ত। ১৯৮৪ সালে পুকুরটি মাছ চাষের জন্য জনৈক আলফাজ উদ্দিন বাচ্চু ব্যক্তি খাতে লিজ নিলেও তিনি মাছ চাষ করেননি। ২০১২ সালে মাছ চাষের জন্য লিজ গ্রহীতা শর্ত ভঙ্গ করায় জেলা প্রশাসন ওই লিজ বাতিল করে দেয়। এর পর একই বছরের ১৫ এপ্রিল ওই জমি ব্যবসায়ী মো: রেজাউল করিমকে বার্ষিক মাত্র ৯৩০ টাকায় লিজ দেয়া হয়। লিজ নেয়া জমি আগের মতোই দীর্ঘদিন অব্যবহৃত অবস্থায় ছিল।
সরেজমিনে দেখা যায়, জমির তিন দিকেই বহুতল ভবন। একদিকে সিটি করপোরেশনের পাকা সড়ক। ভরাট করা পুকুরের জমিতে ইট, পাথর, মাটি, ময়লার স্তূপ, কিছু গাছসহ কয়েকটি ঝুপড়ি ঘর ছিল। শেরপুর শাহের আমলে পুকুরটি খনন করা হয়েছিল বলে নগরবাসীর কাছে পুকুরটি ‘শেরপুর’ নামে সমধিক পরিচিত ছিল।
স্থানীয়রা জানান, পুকুরটির প্রকৃত আয়তন বর্তমানের চেয়ে দ্বিগুণ ছিল। পুকুরের উত্তর-পূর্বাংশে মাটি ভরাট করে বহুতল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। ভূমি কর্মকর্তাদের যোগসাজশেই এসব বহুতল ভবন নির্মিত হয়। পুকুরটি দখলমুক্ত করতে বিভিন্ন মিডিয়ায় সচিত্র খবর প্রকাশিত হলেও প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। উচ্ছেদ অভিযানে সন্তুষ্ট হয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা এখানে পুনরায় পুকুর খননের দাবিও জানান।
জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, নজরদারির অভাবে মূল্যবান সরকারি এই জমি বেহাতের আশঙ্কা ছিল। এ জন্য অবৈধ উচ্ছেদের মাধ্যমে জমি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। জমির সদ্ব্যবহারে পরিকল্পনা নেয়া হবে এবং অন্যান্য খাসজমি পুনরুদ্ধারে জেলা প্রশাসনের তৎপরতা অব্যাহত থাকবে।


আরো সংবাদ



premium cement